ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভূরিভোজে বিপত্তি!

চক্ষু মেলিয়া ॥ নিয়ামত হোসেন

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ৯ ডিসেম্বর ২০১৬

চক্ষু মেলিয়া ॥ নিয়ামত হোসেন

এক তরুণ এবং এক তরুণী। বিয়ে ঠিক হয়েছে। দিনও ঠিক হয়েছে। চলছে আয়োজন। কত লোক আসবে। নিমন্ত্রণ জানাবে আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধক, পাড়া-প্রতিবেশীকে। পরিকল্পনা করা ছিল সবকিছু। কিন্তু হঠাৎ বিপত্তি বেধে গেল এই আয়োজনের ব্যাপারে। ব্যাপার কি? ঘটনাটি ভারতের গুজরাটের। প্রকাশিত খবরে জানা গেল বিপত্তির কারণ। দুই তরুণ-তরুণীর বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমন্ত্রণ করা হবে কাকে কাকে তা-ও মোটামুটি ঠিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ সে দেশের নোট বাতিলের খবর। ব্যস, হয়ত অনেকেরই সুবিধা হয়েছে, কিন্তু কোথাও কোথাও যে দারুণ সমস্যা হয়েছে সেটাও জানা যাচ্ছে খবরে। সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এই দুই তরুণ-তরুণীর বিয়েতে। জানা গেল সেটাও। অবশ্য বিয়েতে নয়, বিয়ের জন্য আমন্ত্রিতদের আপ্যায়নের ক্ষেত্রে। সৃষ্টি হয়েছে সমস্যা। বিয়ের ভোজে অনেক টাকা লাগবে- কিন্তু সে টাকা যে নেই, তাও নয়। কিন্তু টাকা যে বাতিল। তাহলে উপায় কি? যাঁরা বিয়ে দেবেন তাঁরা পড়ে গেলেন বিপাকে। এত লোক আসবে। ভূরিভোজ খাওয়াতে হবে। না হলে মান সম্মানের ব্যাপার আছে না! কিন্তু অমন আয়োজন করবেন কি করে! দু-দশ হাজার টাকা তো খরচ করা যেতই। খাওয়ানো যেত বহু কিছু! তাহলে? উপায় কি! উপায় বের হলো। স্থির হলো সব হবে, ঠিকমতো হবে। বিয়ে হবে। লোকজনকে নেমন্ত্রণও করা হবে। তাঁরা আসবেন। এলে সবার হাতে ধরিয়ে দেয়া হবে এক কাপ করে চা! ব্যাস বিয়ে শেষ। বরবধূকে আশীর্বাদ কর, চলে যাও চা খেয়ে। অবশেষে হলোও তাই। ধূমধামের সঙ্গেই সবকিছু কার্য সুসম্পন্ন হলো। অতিথিরা এলেন, এক কাপ চা খেয়ে বরকনেকে আশীর্বাদ করে চলেও গেলেন। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, বিয়েতে খরচ হয়েছে শ’ পাঁচেক টাকা! এই বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ল মিডিয়ার কল্যাণে দেশে-বিদেশে। বিয়েতে ধনীরা কোটি টাকাও খরচ করেন। এরই মধ্যে ঐ ভারতেই কয়েক কোটি টাকা খরচ করে বিয়ে হওয়ার আয়োজনের কথাও শোনা গেছে। মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত তাদের পরিবারে খরচ হয় অনেক টাকা কিন্তু নোট বাতিলের প্রভাব সে দেশের নানা পর্যায়ে এমনভাবে পড়েছে যাতে ভোগান্তি হয়েছে অনেকের। কিন্তু সমস্যা যে হয়েছে অনেকক্ষেত্রে সেটাও বোঝা গেল। তবে এ যুগে শ’ পাঁচেক টাকায় যে শুভবিবাহকার্য সুসম্পন্ন করার ঘটনাটিকে বিপাকে পড়া বলা যাবে, নাকি ভালই হয়েছে বলা যাবে সেটা তাদেরই বিবেচ্য বিষয়। ফিলাডেলফিয়ায় ষাঁড়! সেদিন এক মজার ঘটনা ঘটে গেছে মার্কিন মুল্লুকের ফিলাডেলফিয়াতে। ঘটনাটি এমন মজার যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খবর হয়েছে এবং যিনিই সে খবর জেনেছেন বা পড়েছেন তিনিই মজা পেয়েছেন খবরটিতে। ব্যাপারটা হচ্ছে একটা উদমো ষাঁড় পালাচ্ছে। চোর ধরার মতো করে তাকে ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ। কিন্তু ষাঁড়টি এমনই বেপরোয়া যে কিছুতেই ধরা যাচ্ছে না তাকে। সে একবার একটুখানি থেমে ঘাড় ফেরায়, তারপর পুলিশ দেখে ছুটতে থাকে উ™£ান্তের মতো। ঘাম ছুটে যাচ্ছে পুলিশ দলের। এভাবে চলছে পুলিশের ষাঁড় ধরা। হয়েছে কি, ওখানকার একটি প্রতিষ্ঠান কয়েকটি ষাঁড় এনেছিল সেদিন। ষাঁড়গুলোকে গাড়ি থেকে নামানো হচ্ছিল। গাড়ি অর্থাৎ ওদের বহনকারী যান থেকে। ষাঁড়গুলোকে নামানো হচ্ছে একটা একটা করে। এরই মধ্যে হয়েছে কি- তাদের বহনকারী যান থেকে নেমে মাটিতে পা দিয়েই একটি ষাঁড়ের দে ছুট ছুট ছুট ছুট! ছুটতে ছুটতে এ-রাস্তা থেকে ও-রাস্তা। এক এলাকা থেকে আরেক এলাকা! পাগলের মতো ছুটছে সে। এভাবে ছুটতে ষাঁড়টি। এখান থেকে ওখানে। পুলিশের গাড়ি দেখলেই ভোঁ দৌড়। পড়ি কি মরি করে ছুটে বেড়াচ্ছে সে এলাকা ছুড়ে। ছুটতে ছুটতে এক বিপণি বিতান বা ঐ রকমের কোন জায়গায় দাঁড়াল সে। তাকিয়ে দেখে আবার ছুট! সে কি ছুট! উন্মাদের মতো যেন। মনে হয় কাঁচের ভেতর সে দেখেছে নিজের চেহারা! হয়ত ভেবেছে ওখানে কোন একটি ষাঁড়-তারই মতো। ওকে ধরে রাখা হবে হয়ত ওখানে। এসব ভেবে না কি অন্য কারণে- তা সেই জানে- ছোটার স্পিড বেড়ে গেল তার! ওদিকে ওখানকার পুলিশও মরিয়া! ধরতেই হবে ওটাকে। ষাঁড়টি পালাবার পরক্ষণেই পুলিশকে খবর দেয়া হয়েছে। পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এসেছে ষাঁড় ধরতে। এখন ষাঁড় ধরার ব্যাপারে পুলিশরাও যেমন আশাবাদী, তেমনি আশাবাদী ষাঁড়ের মালিকও। পুলিশ মানুষকে যথাসম্ভব সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত। সে জন্য ষাঁড়টি যত দূরেই পালাক, ধরা সে পড়বেই! অবশেষে পড়ল সে ধরা। মাইল পাঁচেক গিয়ে পুলিশ পাকড়াও করল ওটাকে। হাঁফ ছেড়ে বাঁচল পুলিশরা। বলি বর্দ পুঙ্গবটিকে বন্ধনপূর্বক আনা হলো মালিকের কাছে। তারপর হস্তান্তর। বলা হয় লাল কাপড় দেখলে ষাঁড়েরা রেগে যায়। এ জন্য স্পেনের ম্যাটাডরেরা ষাঁড়ের খেলা দেখানোর সময় লাল কাপড় নিয়ে ষাঁড়কে রাগান। ঐ দেখে তেড়ে আসে ষাঁড়টি। ফিলাডেনফিয়ার ঐ ষাঁড়টি কোথাও লাল কাপড় দেখেছিল কি-না তা জানা যায়নি। তবে সে পালাল কেন? হয়ত তার জংলী স্বভাবের তাগিদে! কে জানে!
×