ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ একনেক সভায় উঠছে এই প্রকল্প

জ্বালানি পরিবহনে আনোয়ারা-ফৌজদারহাট পাইপলাইন হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

জ্বালানি পরিবহনে আনোয়ারা-ফৌজদারহাট পাইপলাইন হচ্ছে

আনোয়ার রোজেন ॥ শুধু চট্টগ্রাম অঞ্চল নয়, দেশের ভবিষ্যত জ্বালানি সঙ্কট দূর করতে মহেশখালী এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে আমদানিকৃত গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহের পাইপলাইনের সঙ্গে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত নতুন একটি পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পাইপলাইন নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৭৭৬ কোটি টাকা। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিল) প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপনের কথা রয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এর আগে এলএনজি দিয়ে শুধু চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানের চিন্তা করা হয়েছিল। এখন আনোয়ারা-ফৌজদারহাট পাইপলাইন হলে চট্টগ্রামের চাহিদা মেটানোর পর এলএনজির উদ্বৃত্ত অংশ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে। মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০১৭ সাল থেকেই দেশে এলএনজি আসতে শুরু করবে। এছাড়া সরকার আরও একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে গ্যাস আমদানি এবং সাগরে গ্যাস পাওয়া গেলেও এই পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস পরিবহন সম্ভব। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর গত ১৮ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। জ্বালানি সংকট নিরসনে এবং দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাস চাহিদা মেটানোর জন্য প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া প্রকল্পটি শিল্পোৎপাদন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে জিডিপিতে অবদান রাখবে, যা সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গৃহীত গ্যাস খাতের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ফলে প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় কর্ণফুলী নদীতে ১ দশমিক ৩ কিলোমিটার রিভারক্রসিংসহ ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের ৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। এছাড়াও একটি রেগুলেটিং এ্যান্ড মিটারিং স্টেশন স্থাপন, সিপি সিস্টেম, রিভার ক্রসিংসহ পাইপলাইনের মালামাল ক্রয়, পথস্বত্ব ও পরিবেশগত জরিপ এবং ৬০ দশমিক শূন্যে এক একর ভূমি অধিগ্রহণ, ১২৩ দশমিক ৫৫ একর ভূমি অধিযাচন ও ১৫ হাজার ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন ও অন্যান্য পূর্তকাজ করা হবে। জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চারটি গ্যাস কোম্পানি প্রকল্প বাস্তবায়নে টাকার যোগান দেবে। এর মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা জিটিসিএলের নিজস্ব তহবিল প্রায় ২০১ কোটি টাকা। এছাড়া তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড হতে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি হতে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা এবং বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানি হতে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে।
×