ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল

ঢাকা আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ আজ

প্রকাশিত: ০৬:২১, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

ঢাকা আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘আবাহনী আবাহনী মোহামেডান, কেউ কাউকে নাহি ছাড়ে, সমান সমান ...’ বাংলাদেশের ফুটবলের জনপ্রিয়তা আগের মতো নেই। ঢাকার মাঠে দর্শকও আসে না সেভাবে। এখন আর দল দুুটির নাম দুটি শুনলেই ফুটবলপ্রেমীদের রক্ত টগবগ করে ফুটে ওঠে না। এখন আর তর্কের তুফান ওঠে না। দেশীয় ফুটবলের রমরমা অবস্থা আগের মতো আর নেই। তারপরও নির্দিষ্ট দুটি দল যখন মুখোমুখি হয়, তখন স্বল্পসংখ্যক হলেও দর্শক আসেন তাদের প্রিয় দলের খেলা উপভোগ করতে। আজ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে মর্যাদার লড়াইয়ে বিকেল ৩টায় গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মণি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দেশের দুই ঐতিহ্যবাহী এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনী লিমিটেড বনাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। যদিও লীগের পয়েন্ট টেবিলে দু’দলের দুই রকম অবস্থান। আবাহনী এখন শিরোপা জয়ের রেসে আছে, আর মোহামেডান আছে রেলিগেশন থেকে নিজেদের বাঁচানোর সংগ্রামে। ফলে দুই দলের কাছেই ম্যাচটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের সপ্তদশ ম্যাচে ১১ জয় ও ৬ ড্রতে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে ঢাকা আবাহনী। এই লীগে এখনও একমাত্র দল হিসেবে অপরাজিত আছে তারা। ১৮ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে চট্টগ্রাম আবাহনী। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে ৩ জয়, ৮ ড্র ও ৬ হারে মাত্র ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে আছে মোহামেডান (১২ দলের মধ্যে)। বলতে গেলে অবনমন হওয়ার শঙ্কা এখনও ভালমতোই আছে তাদের। শিরোপা রেসে টিকে থাকতে হলে ঢাকা আবাহনীর যেমন মোহামেডানের বিপক্ষে ১ পয়েন্ট ছিনিয়ে নেয়া প্রয়োজন, তেমনি অবনমনের হাত থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে মোহামেডানেরও তিন পয়েন্ট বড্ড দরকার। প্রথম লেগে মোহামেডানকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল আবাহনী। তাই মোহামেডানের জন্য ম্যাচটা প্রতিশোধেরও। লীগের খেলায় দর্শক সমাগম বেশি না হলেও যেহেতু এটা আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ এবং খেলাটি হচ্ছে ঢাকার বাইরে, সেহেতু আজকের ম্যাচটি উপভোগ করতে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক হাজির হবেন বলেই আশা করা হচ্ছে। গত লীগে অবশ্য পারস্পরিক মোকাবেলায় ভাল ফল করে মোহামেডানই। প্রথম সাক্ষাতে তারা আবাহনীকে হারায় ১-০ গোলে। ফিরতি মোকাবেলায় করে গোলশূন্য ড্র। আর সার্বিকভাবে লীগের হেড টু হেডে আবার এগিয়ে আছে আবাহনীই। পেশাদার লীগ চালু হবার পর এ পর্যন্ত উভয়দল মুখোমুখি হয়েছে ১৮ বার। আবাহনী জিতেছে ৬ বার, মোহামেডান ৪ বার। বাকি ৮ ম্যাচ ড্র হয়। গোলের বেলাতেও কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আবাহনীর ১৬ গোলের বিপরীতে মোহামেডান করেছে ১২ গোল। সাংগঠনিক অদক্ষতা, দুর্নীতি, অযোগ্য লোকদের ফুটবল কমিটিতে থাকা ... সবমিলিয়ে মোহামেডান ক্লাবের অবস্থা শোচনীয়। গত কয়েক বছর ধরেই এমন অবস্থা। এখন আর তারা চ্যাম্পিয়ন হবার জন্য দল গড়ে না। ফলে ভাল মানের ফুটবলারের বড়ই অভাব। দু’একজন আছেন, কিন্তু তা নিতান্তই অপ্রতুল। সাদা-কালো শিবির লীগে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কবে, তা বোধকরি দলটির সমর্থকরাও ভুলে বসে আছেন। দলটির শেষ লীগ শিরোপা, সেই ১৪ বছর আগে (২০০২)। ২০০৯ সালে ফেডারেশন কাপ এবং ২০১৩ সালে সুপার কাপের ট্রফি জেতাই হচ্ছে মোহামেডানের সর্বশেষ দুটি শিরোপা-সাফল্য। অথচ এই মোহামেডানই কিনা সবচেয়ে বেশি ১২ বার লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ১১ বারের লীগ শিরোপাধারী আবাহনী তাদের শেষ লীগ শিরোপা জিতেছে ২০১১-১২ মৌসুমে। এছাড়া তাদের সর্বশেষ সাফল্য ২০১৬ ফেডারেশন কাপের শিরোপা জয়। এছাড়া ২০১৬ স্বাধীনতা কাপে রানার্সআপও হয় তারা। এখন দেখার বিষয়, ‘বাংলা ক্লাসিকো’ খ্যাত আজকের আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথের ফল কি হয়।
×