ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দক্ষিণের ৩১ খেলার মাঠ ও পার্ক উন্নয়ন বিষয়ে জানালেন মেয়র

’১৭ সালের মধ্যেই ঢাকা হবে জলসবুজের প্রযুক্তিবান্ধব শহর

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

’১৭ সালের মধ্যেই ঢাকা হবে জলসবুজের প্রযুক্তিবান্ধব শহর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ২০১৭ সালের মধ্যেই পরিবেশবান্ধব ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩১ পার্ক ও খেলার মাঠকে ডিজিটালাইজড পদ্ধতির ও আন্তর্জাতিক মানের করে তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র সাঈদ খোকন। ঢাকাকে জল সবুজের একটি প্রযুক্তিবান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তোলার অংশ হিসেবে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। সোমবার দুপুরে রাজধানীর নগর ভবনে ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩১ খেলার মাঠ ও পার্ক উন্নয়নের খসড়া পরিকল্পনা চূড়ান্ত’ সংক্রান্ত এক প্রদর্শনী ও মতবিনিময় সভায় মেয়র এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বর্তমানে জরাজীর্ণ পার্ক ও প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী খেলার মাঠ আগামী দিনে উন্নয়নের মাধ্যমে কেমন হবে এ বিষয়ে স্থপতি রফিক আযমের নেতৃত্বে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান সাতত্য এন্ড জেপিজেড ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহ ‘জল সবুজে ঢাকা’ নামক একটি স্বপ্নীল প্রেজেন্টেশন তুলে ধরে। অনুষ্ঠানে দেশের প্রখ্যাত স্থপতি, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এম কে বখতিয়ার, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ৩১ পার্ক ও মাঠের উন্নয়নের জন্য ডিজাইন ও নকশা প্রণয়নের সঙ্গে ৭০ স্থপতি যুক্ত রয়েছেন। সাঈদ খোকন বলেন, ডিএসসিসির ৩১ পার্ক ও খেলার মাঠকে আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করতে পরিবেশবান্ধব ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সমন্বয় করা হবে। যা আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। শুধু তাই নয়, এই পার্ক ও খেলার মাঠগুলোতে সিসিটিভি, ফ্রি ওয়াইফাই ও সর্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে। ফলে যেকোন মুহূর্তে পার্ক ও খেলার মাঠগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে। মেয়র বলেন, ঢাকা বদলে যাচ্ছে এবং বদলে যাবে। রাজধানী ঢাকাকে অবশ্যই আমরা বদলে দেব। শুধু একা সরকারের পক্ষে সব সম্ভব নয়। তাই আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঢাকার পরিবর্তনে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ঢাকা হবে জল সবুজে ঢাকা একটি প্রযুক্তিবান্ধব শহর। অন্যদিকে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বসবাসের অযোগ্য একটি শহর। এজন্য আমরা ঢাকাকে জল সবুজের শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ঢাকাকে বাঁচিয়ে তোলার নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে, এজন্য আমাদের মেধা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সম্পদ কাজে লাগাতে হবে। আজকের শিশুরা যদি খেলার মাঠ না পায় তাহলে সে ভবিষ্যতে কিভাবে দেশ চালাবে। আমরা যদি সম্পদকে সম্ভাবনায় রূপান্তর করতে না পারি তাহলে আমাদের সফল্য কোথায়? তাই আমাদের সম্পদকে সম্ভাবনায় রূপান্তর করতে হবে। স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, কিছু রাক্ষসরূপী অবৈধ দখলদার খেলার মাঠ, পার্ক গিলে খাওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। নানা ফন্দিফিকির করে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। এদের কবল থেকে পার্ক ও খেলার মাঠ মুক্ত রাখার জন্য এগুলি নতুন রূপে সাজাতে হবে। তিনি বলেন, প্রাকৃতিকভাবে আশীর্বাদপুষ্ট পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র শহর ঢাকা যার চারদিক থেকে নদীবেষ্টিত। মিষ্টি পানির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়, যা সত্যিই প্রকৃতির অবদান। এসব নদী রক্ষা করে নাব্য বজায় রাখতে হবে। পানি পরিষ্কার রাখতে হবে। স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, আমরা যদি মাঠগুলোকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে ঢাকা পুনরায় তার প্রাণ ফিরে পাবে। জল সবুজে গড়ে উঠবে ঢাকা শহর। মনে রাখতে হবে, আমাদের সম্পদ আছে কিন্তু আমরা সেগুলো কাজে না লাগিয়ে ফেলে রাখি। এজন্য আমাদের সম্পদগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। রাজধানীতে বসবাসরতদের সুবিধার্থে খেলার মাঠ ও পার্কগুলোকে ২৪ ঘণ্টা উন্মুক্ত রাখতে হবে। স্থপতি রফিক আজম বলেন, তরুণদের জন্য রাজধানীর খেলার মাঠ ও পার্কগুলোকে জাগরিত করতে হবে। আর এটা করতে সক্ষম হলে আমরা এগিয়ে যাব। পার্ক ও খেলার মাঠে পরিবেশ না থাকায় আমরা হাঁটতে ও ঘুরতে যাওয়ার কথা ভাবি না। শুধু তাই নয়, পার্ক ও খেলার মাঠগুলোতে গাছের সমন্বয় ঘটাতে হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, পার্ক ও মাঠের স্থায়ী উন্নয়নের জন্য জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। পার্কসমূহ তালাবদ্ধ করে না রেখে উন্মুক্ত করে দিতে হবে। চারদিক থেকে যাতে ভেতর পর্যন্ত দেখা যায় এমনভাবে তৈরি করতে হবে। এতে ভেতরে মাদক, হেরোইনসেবীসহ অপরাধপ্রবণতা কমে যাবে। এছাড়া নগরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নগর সরকার প্রয়োজন। বক্তারা এসব পার্কে স্থায়ী দোকান তৈরি ও বরাদ্দ না দেয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
×