ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ আইনে ক্ষতিপূরণ থাকছে তিনগুণ

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ আইনে ক্ষতিপূরণ থাকছে তিনগুণ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণ দেড়গুণ থেকে বাড়িয়ে তিনগুণ করে ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন, ২০১৬’-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনটি যেহেতু ভূমি সংক্রান্ত ও জটিল এজন্য এটাকে আরও বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনার জন্য আইনমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভূমি সচিব, প্রতিরক্ষা সচিব হবেন এ কমিটির সদস্য, কমিটি মনে করলে আরও সদস্য কো-অপ্ট (অন্তর্ভুক্ত) করতে পারবে। কমিটি ভেটিংসহ (আইন মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা) আইনটি চূড়ান্ত করবে। খসড়া আইনে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ‘পাবলিক পারপাস’ ও ‘পাবলিক ইন্টারেস্ট’ বলে দুটি শব্দ আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘দুটি শব্দ সত্যিকার অর্থে কি বোঝায় এটা ব্যাপক বিশ্লেষণ করে যেন আইনে সন্নিবেশ করা হয় এজন্য কমিটিকে বলা হয়েছে। আইনে যা আছে তা দিয়ে শব্দ দুটির অর্থ বিস্তারিতভাবে বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, হাইকোর্টের কিছু অবজারভেশনও আছে, সেগুলোর আলোকে এটিকে (অধিগ্রহণ আইন) রিফ্লেক্ট (প্রতিফলন) করা হবে। এই আইনটি হলে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আসবে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, জমির ক্ষতিপূরণ দেড়গুণের মধ্যে আছে, সেটা হয়ে যাবে তিনগুণ। অধিগ্রহণ করা জমির মূল দাম যদি এক কোটি টাকা হয়, (নতুন আইন অনুযায়ী) এর সাথে আরও ২০০ ভাগ যুক্ত হয়ে ৩ কোটি টাকা (ক্ষতিপূরণ পাবে মালিক) হবে। অর্থাৎ মূল মূল্যের তিনগুণ। মূল দাম কীভাবে নির্ধারিত হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন হলো বিগত বছরের ১২ মাসের জমি (একই মৌজায় একই শ্রেণীর জমি) কেনাবেচার দলিলের (বিক্রীত জমির দামের) এ্যাভারেজ (গড়)। জমি অধিগ্রহণের বর্তমান অধ্যাদেশটি ১৯৮২ সালের জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, সেটাকেই মোটামুটি বাংলায় নিয়ে আসা হয়েছে। এখন আইনের একটা বড় সমস্যা হলো ক্ষতিপূরণ কম। এছাড়া এটা ‘মার্শাল ল’ আমলের আইন। কোর্টের আদেশ আছে ‘মার্শাল ল’ আমলের আইনকে বাংলায় অনুবাদ করে নতুনভাবে করতে হবে। এজন্য নতুন আইনটি আনা হয়েছে। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক অধ্যাদেশ হবে আইন ॥ মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৬’ আইন আকারে জারির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর আগে গত ৭ নবেম্বর ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৬’ অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। সংসদ না থাকায় ২১ নবেম্বর এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, ‘এই আইনে (পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইন) একটি সমস্যা আছে যে ২০১৬ সালের ৩০ জুনের পর একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পটি বিলুপ্ত হয়ে ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ (একীভূত) হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় সময়ের বাধা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সংশোধিত আইনে, ৩৯ ধারার উপধারা-১ এর (ক) এ পরিবর্তন আনা হয়েছে, আগে যেখানে ‘৩০ জুন’ ছিল সেটা উঠে গিয়ে ‘সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে উক্ত প্রকল্পগুলো’ (ব্যাংকে চলে আসবে) বসেছে। কলেজ অব ফিজিশিয়ান এ্যান্ড সার্জন আইন অনুমোদন ॥ ‘বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান এ্যান্ড সার্জন আইন, ২০১৬’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান এ্যান্ড সার্জন অর্ডারকে বাংলায় অনুবাদ করে গুছিয়ে নতুন আইন করা হয়েছে। আগে যা ছিল (নতুন আইনে) মূলত তাই আছে। আইনে ২০ সদস্যবিশিষ্ট একটি কাউন্সিল প্রস্তাব করা হয়েছে। যা আগে থেকেই রয়েছে।
×