ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে বিচার প্রায় শেষের দিকে

ফের আদালতে বসনিয়ার কসাই রাতকো ম্লাদিচ

প্রকাশিত: ০৪:০২, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

ফের আদালতে বসনিয়ার কসাই রাতকো ম্লাদিচ

বসনিয়ার কসাই হিসেবে পরিচিত সাবেক সার্ব সেনা কমান্ডার রাতকো ম্লাদিচকে সোমবার ফের আদালতে হাজির করা হয়। ১৯৯০’র দশকের বসনীয় সংঘর্ষে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ম্লাদিচের বিচার প্রায় শেষের দিকে। খবর এএফপি ও বিবিসির। দ্য হেগ শহরে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য ফরমার যুগোস্লাভিয়ায় (আইসিটিওয়াই) ম্লাদিচের বিচার শুরুর চার বছরেরও বেশি সময় পর প্রসিকিউটরার তিন দিনের সমাপনী বক্তব্য দেবেন এবং তারা ম্লাদিচের দীর্ঘ কারাদণ্ড দেয়ার আহ্বান জানাতে পারেন। ৭৪ বছর বয়সী ম্লাদিচের বিরুদ্ধে দুটি গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের পাশাপাশি ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত চলা বসনীয় সংঘর্ষে তার ভূমিকাসহ ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। ম্লাদিচ তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগকে ‘নারকীয়’ ও ‘জঘন্য’ বলে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তিনি যা করেছেন তা নিজ দেশ এবং জনগণকে রক্ষার জন্যই করেছেন। ওই সংষর্ষে এক লাখেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ২২ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। এছাড়া ১৯৯৫ সালে পূর্ব বসনিয়ার স্রেব্রেনিৎসা হত্যাকাণ্ডে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের কিশোরসহ প্রায় আট হাজার পুরুষ প্রাণ হারায়। আরও অভিযোগ, সেখানে ম্লাদিচের লোকজন জাতিসংঘ শান্তিবাহিনীকেও ছাড় দেয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে স্র্রেব্রেনিৎসার ওই গণহত্যাই সবচেয়ে জঘন্য হত্যাকাণ্ড। ইউরোপের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে গণ্য করা হয় ওই ঘটনাকে। ওই ঘটনার প্রায় দুই দশক পর ২০১১ সালের ২৬ মে ম্লাদিচকে গ্রেফতার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও সার্বিয়ার সরকার ম্লাদিচকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ১০ লাখ ডলারের বেশি পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছিল। তখন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বরিস তাদিচ বলেছিলেন, ম্লাদিচের গ্রেফতার তাদের ‘ইতিহাসের এক কঠিন সময়ের’ ইতি টেনেছে। ২০১১ সালে সার্বিয়ায় গ্রেফতার হওয়ার পর ম্লাদিচকে এই যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত আদালতের হেফাজতে নেয়া হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে বসনিয়ার রাজধানী সারায়েভো ৪৪ মাস ধরে অবরোধ করে রাখার অভিযোগ, যার ফলে মারা গিয়েছিল প্রায় ১০ হাজার মানুষ। ম্লাদিচকে ২০১১ সালের ৩ জুন প্রথমবারের মতো হেগের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে হাজির করা হয়। তার আইনজীবীরা এই মামলা প্রত্যাহার ও বিচারকদের সরিয়ে দেয়ার আহ্বান বারবার জানিয়ে আসছেন। তারাও মামলায় তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য তিন দিনের সময় পাবেন এবং তা শুক্রবার থেকে শুরু হবে। আসামিপক্ষ বলে আসছে, বসনীয় মুসলিম বাহিনীর হামলা থেকে আত্মরক্ষার জন্য ম্লাদিচ ও তার বাহিনী ওই অভিযান চালায় এবং তিনি রাজনৈতিক বিচারের শিকার। জাতিগতভাবে বিশুদ্ধ বৃহত্তর সার্বিয়া প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বসনিয়া থেকে ক্রোটস ও মুসলিমদের নির্মূল অথবা দেশছাড়া করার লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করেন সার্ব বাহিনীর সবচেয়ে নিষ্ঠুর সেনা কমান্ডার ম্লাদিচ।
×