ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আদালত অবমাননা

নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে সিইসিসহ রেহাই পেলেন ছয়জন

প্রকাশিত: ০৮:২৬, ৫ ডিসেম্বর ২০১৬

নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে সিইসিসহ রেহাই পেলেন ছয়জন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদসহ চার নির্বাচন কমিশনার এবং এক সিনিয়র সহকারী সচিব মিলে মোট ছয়জন। সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ ছাড়া অন্যরা হলেন কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, জাবেদ আলী, মোঃ শাহনেওয়াজ ও সিনিয়র সহকারী সচিব মিজানুর রহমান। নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পর হাইকোর্টের বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মোঃ বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে রবিবার আদেশ দেয়। আদালতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন ড. মোঃ ইয়াসিন। গত ৭ এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে এক আবেদনে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড ভোটকেন্দ্রের ভোট ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও কারচুপির কারণে ভোট বাতিল বা পুনঃনির্বাচনের আবেদন করেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ জাহিদুল ইসলাম। আবেদনটি নিষ্পত্তি না হওয়ায় চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ৬ নম্বর চরভৈরবী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ জাহিদুল ইসলাম সিইসিসহ ছয়জনকে প্রতিপক্ষ করে হাইকোর্ট বিভাগে পিটিশন দায়ের করে। হাইকোর্টের রিট পিটিশন নম্বর ৭৯৮৫/২০১৬। এ পরিপ্রেক্ষিতে আদেশের কপি পাওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে এ অভিযোগের নিষ্পত্তি করার জন্য ১৬ জুন রুল জারিসহ আদেশ দেয় আদালত। হাইকোর্টের আদেশের কপি ইসি সচিবালয় ৩০ জুন ও আইন শাখা ১০ জুলাই তারিখে হাতে পায়। অভিযোগের নিষ্পত্তি হিসেবে ১৮ জুলাই প্রার্থীকে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার পরামর্শ দেয় ইসি। ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে অভিযোগের নিষ্পত্তির বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহিদুলকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, স্থানীয় সরকার ইউপি আইন ও বিধি অনুযায়ী নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম সরকারী গেজেটে প্রকাশের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দরখাস্ত পেশের মাধ্যমে প্রতিকার পেতে পারেন বলে ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ ইউপির ফল গেজেটে প্রকাশ না হওয়ার আগেই ইসির আদালতে যাওয়ার পরামর্শের বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করেন অভিযোগকারী। জাহিদুল ইসলাম ইসির এ চিঠিকে চ্যালেঞ্জ করে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনাসহ সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনার ও সিনিয়র সহকারী সচিবকে আদালত অবমাননার দায়ে বিবাদী করে হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করেন। এ প্রেক্ষিতে ৭ আগস্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার ও সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ মিজানুর রহমানকে আদালত অবমাননার রুলসহ আদেশ দেয় আদালত। ফলাফল গেজেটে প্রকাশের আগে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার ইসির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চায় আদালত। সেই সঙ্গে সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনার ও সিনিয়র সহকারী সচিবকে কেন আদালত অবমাননার জন্য দায়ী করা হবে না, তার কারণ দর্শাতেও বলা হয়। সেজন্য গত ২৬ নবেম্বর সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার স্বশরীরে সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত হয়ে হলফনামা করে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন। এরপর গত ২৬ নবেম্বর সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রার শাখায় স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া’ সংক্রান্ত এফিডেভিটে স্বাক্ষরসহ আবেদন জমা দেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত রবিবার তাদের অব্যাহতি দেয়। কার্যক্রম স্থগিত ॥ কটূক্তির কারণে মানহানির অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে দায়ের করা পৃথক তিন মামলার কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে একই অভিযোগে পৃথক ৩ মামলা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী এবং বিচারপতি কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। মুলতবি ॥ একরাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মিনার চৌধুরীকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেছে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। ফলে আগামী তিন মাস তার জামিন স্থগিতই থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। রবিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপীল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে মিনার চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। রুল জারি ॥ মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর জামিন কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রবিবার জামিন আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও মোঃ আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। আপীল শুনানি মঙ্গলবার ॥ উপঢৌকনে পাওয়া অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেয়ার দুর্নীতি মামলায় সাজার বিরুদ্ধে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের আপীলে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছে হাইকোর্ট। রবিবার বিচারপতি মোঃ রুহুল কুদ্দুসের একক বেঞ্চ এ দিন ধার্য করে আদেশ দেয়। আদালতে এরশাদের পক্ষে পেপারবুক থেকে পড়ে শোনান তার আইনজীবী এ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান।
×