দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্কটল্যান্ডে এক জার্মান যুদ্ধবন্দীর সঙ্গে ওই এলাকার মেয়েদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। স্কটিশ মেয়েরা জানতে পারল, বন্দী সৈনিক কোনদিন সিনেমা দেখেননি। আর তাই তারা একদিন তাকে ক্যাম্পের বন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত করে এবং তাকে নিয়ে সোজা চলে যায় সিনেমা দেখতে, যাতে তিনি প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্র দেখার অভিজ্ঞতা লাভ করেন।
এই সহৃদয়তার কথা ভুলতে পারেননি জার্মান সৈনিক হেনরিখ স্টেইনমেয়ার। তিনি স্কটল্যান্ডের পার্থশায়ারে কমরি গ্রামের মানুষদের জন্য চার লাখ পাউন্ড উইল করে যান। হেনরিখকে ১৯৪৪ সালে ফ্রান্সে বন্দী করা হয়। তখন তার বয়স ছিল ১৯ বছর এবং তাকে কমরির কাছে কাল্টিব্রাগানে বন্দীশিবিরে রাখা হয়। কট্টরপন্থী নাৎসি হিসেবে তাকে ১৯৪৫ সালের জুন পর্যন্ত সেখানে আটক রাখা হয়। এরপর তাকে কেইথনেসে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ফাইফের একটি ক্যাম্পে নেয়া হয়। অবশেষে ১৯৪৮ সালে তিনি মুক্তি পান। মুক্ত হয়ে তিনি সোজা ফিরে যান কমরিতে এবং ওই এলাকার মানুষদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। ২০১৪ সালে এই জার্মান ৯০ বছর বয়সে মারা যান এবং তার দেহভস্ম কমরির পাহাড়গুলোতে ছড়িয়ে দেয়া হয়। তার মৃত্যুর দুই বছর পর গ্রামটির জন্য তার তিন লাখ ৮৪ হাজার পাউন্ডের অনুদান নেয়ার স্বীকৃতি মেলে এবং গ্রামটির বৃদ্ধদের জন্য ব্যয় করতে তার অর্থ স্থানীয় কমিউনিটি ট্রাস্টকে দিয়ে দেয়া হয়।
হেনরিখের বন্ধু জর্জ কার্সনের ছেলে জর্জ বলেন, ‘অবিশ্বাস্য গল্পের মতো মনে হলেও আসলে এটি পুরোপুরি সত্য। আমার মা ও তার স্কুলপড়ুয়া বান্ধবীরা সবাই কাল্টিব্রাগান ক্যাম্পের তারের বাধা পেরিয়ে হেনরিখের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিলেন। তারা গল্প করার সময়ই জানতে পারেন, হেনরিখ কখনও সিনেমা দেখেননি। আর তাই তারা একদিন হেনরিখকে উঠিয়ে নিয়ে যান। এ কাজ করতে গিয়ে মেয়েদের মধ্যে একজন তার ভাইয়ের স্কুলের পোশাক ধার করেছিলেন।’ হেনরিখ ২০০৮ সালে কমরি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টকে তার মৃত্যুর পর তার সম্পদ দেখভাল করার অনুরোধ করে যান। -গার্ডিয়ান
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: