ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নাসিক নির্বাচন

আইভীর সমর্থনে জাসদ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ৫ ডিসেম্বর ২০১৬

 আইভীর সমর্থনে জাসদ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার

মোঃ খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিনে রবিবার আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীকে সমর্থন দিয়ে মেয়র পদে জাসদ (ইনু) মোসলেম উদ্দিন আহেম্মদ তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এছাড়াও কাউন্সিলর পদে ১৫ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। প্রত্যাহার শেষে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকল আওয়ামী লীগ-বিএনপি দলীয়সহ মেয়র পদে ৭ জন। কাউন্সিলর পদে ১৫৬ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আজ সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। মূলত এর পর থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে শুরু হচ্ছে ভোটযুদ্ধ। সারাদিন মাঠে থাকবেন প্রার্থীরা। এদিকে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে মেয়র পদে বিএনপি দলীয় প্রার্থী এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে সমর্থন দিলেও এলডিপি ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্র্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। ১৫ কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার॥ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে রবিবার ১৫ কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। তারা হলেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নাজমুল হক ও সোহেল রানা এবং সালামত মোঃ সাইফুল, ৫নং ওয়ার্ডের গোলাম মোহাম্মদ কায়সার, ৬নং ওয়ার্ডের এসএম আসলাম, মজিবুর রহমান ম-ল, ৯নং ওয়ার্ডের বদিউজ্জামান, ১১নং ওয়ার্ডের মঞ্জুর হোসেন, ১২নং ওয়ার্ডের সেলিম খান, ১৭ নং ওয়ার্ডের ফারহানা করিম, ১৮নং ওয়ার্ডের রাজিবুল ইসলাম, ২৩নং ওয়ার্ডের আবদুল হালিম, ২৫নং ওয়ার্ডের সালাউদ্দিন ও হেলাল উদ্দিন ও ২৭ নং ওয়ার্ডের আসাদুজ্জামান বাদল। সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে আইভীর মতবিনিময় ॥ রবিবার সকালে মেয়র প্রার্থী ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ও ৫নং ওয়ার্ডের এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি কোন প্রকার নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি। তিনি বলেন, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, আমি ৫ বছর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন কাজ করেছি। বিভিন্ন এলাকায় গেলে লোকজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে আসেন। এটা আচরণবিধি লঙ্ঘন হতে পারে না। তিনি বলেন, আমাদের দলের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। দলের তৃণমূল থেকে শুরু করে সবাই এক সঙ্গে নৌকার পক্ষে কাজ করছে। মেয়র প্রাথী আইভী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ও ৫নং ওয়ার্ডের রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শিমরাইল, আটি, ওয়াপদা কলোনি, আজিবপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার, সাইলো গেটসহ বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন মাস্টার ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাদেকুর রহমান। নগরীতে ভোটারদের সঙ্গে বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াতের মতবিনিময় ॥ বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, মানুষ এখন তাদের রায় দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। মানুষকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেয়া হয়; তবে বিশাল ব্যবধানে ধানের শীষের জয় হবে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটি মেডিক্যাল কলেজ নেই, একটি বিশ্ববিদ্যালয় নেই, বর্তমানে যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে, একটি ভাল রাস্তা নেই, আগের রাস্তাতেই পিচ ঢালাই করা হয়েছে, ড্রেনেজ অবস্থা খারাপ। একটু বৃষ্টি হলেই নগরবাসী ডুবে যায়। আমি চাই নগরবাসীকে এই অবস্থা থেকে মুক্ত করতে। আমাকে সুযোগ দিলে আমি নগরবাসীর জন্য কাজ করব। তিনি বলেন, আমাদের দলে কোন বিভেদ নেই, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ৫ তারিখের পর যে যার যার অবস্থান থেকে মাঠে নামব। নির্বাচন কোন ব্যক্তির হচ্ছে না, গণতন্ত্রের লড়াইয়ে আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করব। বিএনপি প্রার্থী এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শহরের চাষাঢ়া, উত্তর চাষাঢ়া, কালীবাজার ও শীতলক্ষ্যাসহ বিভিন্নস্থানে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং ভোট চান। আইভীকে সমর্থন জানিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে- জাসদ (ইনু) প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীকে সমর্থন জানিয়ে জাসদ (ইনু) প্রার্থী জাসদ (ইনু) মোসলেম উদ্দিন আহম্মেদ বিকেলে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়ার পর মোসলেম উদ্দিন আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, দলীয় প্রতীক ও দলীয় ভিত্তিতে সিটি নির্বাচন হচ্ছে। তার অংশ হিসেবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ, ইনু) এখানে প্রার্থী দিয়েছিল। যেহেতু জাসদ ১৪ দলীয় জোট তথা জাসদ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ও ঐক্যের প্রশ্নে সেখানে জঙ্গীবাদ, স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার হচ্ছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জাতীয় স্বার্থে ১৪ দলের সমন্বয়ের কারণে আমার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশ দিয়েছে। যেহেতু আমি রাজনৈতিক দল করি, আদর্শকে লালিত করি। দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেই আমার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী আছেন। তাকে জাসদ (ইনু) থেকে আমরা সমর্থন করেছি। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আইভী ডাক্তার, সাখাওয়াত এলএলবি পাস ॥ সিটি মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ৭ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামায় তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী একজন ডাক্তার (ডক্টর অব মেডিসিন)। বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন এলএলবি পাস। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মাহবুবুর রহমান ইসমাইল এলএলবি পাস। এছাড়াও এলডিপির প্রার্থী কালাম প্রধান স্বশিক্ষিত, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মাছুম বিল্লাহ দাওরা পাস, ইসলামী ঐক্যজোটের আজহারুল ইসলাম মুফতি (কওমি) পাস, কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস মাধ্যমিক পাস।
×