ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২৯ রানে জিতে সেরা চারের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করল রংপুর

বরিশালের হারে কুমিল্লারও বিদায়

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬

বরিশালের হারে কুমিল্লারও বিদায়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একদিনেই জাতীয় দলের দুই অধিনায়কের বিদায় হয়ে গেল। টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের বরিশাল বুলসের বিদায়ে নির্ধারিত ওভারের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সেরও বিদায় ঘণ্টা বাজল। রংপুর রাইডার্সের কাছে শনিবার প্রথম ম্যাচে বরিশাল বুলস ২৯ রানে হারল। তাতে করে মুশফিকুর রহীমের দল বরিশালের বিদায় হলো। বরিশালের হারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সেরও বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল। এরই মধ্যে ৪ দলের ১২ পয়েন্ট হয়ে গেছে। যা বরিশাল কিংবা কুমিল্লা কোন দলেরই হওয়ার সম্ভাবনা আর নেই। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) চতুর্থ আসর থেকে সবার আগে বিদায় নিয়েছে বরিশাল বুলস। সেই সঙ্গে কুমিল্লাও। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে জিতে সেরা চারে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে রংপুরের। ১২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে গেছে রংপুর। শনিবার রাতের ম্যাচে রাজশাহী হারলে কিংবা আজ কুমিল্লার বিপক্ষে রংপুর জিতলে রংপুরের সেরা চারে খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে। ম্যাচে টস জিতে রংপুর। আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্তও নেয়। তাতে বাজিমাতও করে। ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদের ৪৮, মোহাম্মদ মিঠুনের ৩৮ ও জিয়াউর রহমানের অপরাজিত ২৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৫৪ রান করে রংপুর। এ রান অতিক্রম করতে গিয়ে ১৮.২ ওভারে ১২৫ রান করতেই গুটিয়ে যায় বরিশাল। ২ উইকেট করে নেয়া লিয়াম ডওসন, সোহাগ গাজী, রুবেল হোসেন ও শহীদ আফ্রিদির বোলিং তোপে টার্গেট অতিক্রমই করতে পারল না বরিশাল। দলের পক্ষে ডেভিড মালান সর্বোচ্চ ৩০ রান করতে সক্ষম হন। রংপুরের ছুড়ে দেয়া ১৫৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৬৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে বরিশাল। তাতেই হারের খপ্পরে পড়ে যায়। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে গিয়ে থিসারা পেরেরা ও শাহরিয়ার নাফীস মিলে একটু আশা জাগান। ৩৬ রানের জুটিও গড়েন। কিন্তু ১০৪ রানে গিয়ে পেরেরা (২৪) আউট হতেই আবার ল-ভ- হয়ে যায় বরিশালের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত রুবেল হোসেন ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে বরিশালের হার নিশ্চিত করেন। ১২৫ রানের বেশি করতেই পারে না বরিশাল। তাতে হারের সঙ্গে বিদায়ও নিশ্চিত হয়ে যায়। রংপুর রাইডার্সও শুরুতে বিপাকে পড়ে। সৌম্য সরকার ব্যর্থ হয়েই চলেছেন। এদিনও ২৯ রানের সময় ১৭ রান করে আউট হয়ে যান। দ্বিতীয় উইকেটেই ঘুরে দাঁড়ায় রংপুর। ওপেনার শাহজাদ ও মিঠুন মিলে দলকে ১০৫ রানে নিয়ে যান। দুইজন মিলে ৭৬ রানের বড় জুটি গড়েন। এ জুটিতেই রংপুর অনেকদূর এগিয়ে যায়। এ সময় গিয়ে শাহজাদ আউট হতেই রংপুরের ইনিংসে ধস নামে। ১১৮ রানের মধ্যেই ৪ উইকেটের পতন ঘটে যায়। ব্যাট হাতে পাকিস্তান অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি কিছুই করে দেখাতে পারছেন না। এদিনও ব্যর্থ হন। ৭ রানের বেশি করতে পারেননি আফ্রিদি। ১১৬ রানে আফ্রিদির আউটের পর ২ রান যোগ হতেই মিঠুনও সাজঘরে ফেরেন। তখন ১৭ ওভারের খেলা চলে। মনে হয় শুরুতে যে ঝলক দেখা গেছে, তা বোধহয় ঝিমিয়ে পড়ল শেষে এসে। কিন্তু না। আনোয়ার আলীকে সঙ্গে নিয়ে জিয়াউর রহমান ২০ রানের জুটি গড়েন আর ষষ্ঠ উইকেটে লিয়াম ডওসনকে (৭*) সঙ্গে নিয়ে ১৬ রানের জুটি গড়েন জিয়া। অপরাজিত ২৩ রানও করলেন জিয়া। তাতে করে বড় স্কোরও জমা হয়। যে স্কোর অতিক্রম করা বরিশালের জন্য কষ্টসাধ্যই হয়। অতিক্রম করতেও পারে না। তাতে করে হেরে বিদায়ও নেয় বরিশাল। শেষ ম্যাচে খেলতে নেমেই বিদায় ঘণ্টা বাজে মুশফিকের দলের। একটি দল এবার বিপিএলে ১২টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। বরিশাল সবকটি ম্যাচ খেলে ৪ ম্যাচ জয়ে ৮ পয়েন্ট যোগ করতে পারে। কুমিল্লাও শনিবার পর্যন্ত ১১ ম্যাচ খেলে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট যোগ করে। বরিশালের আর কোন ম্যাচ বাকি নেই। তার মানে ৮ পয়েন্টের বেশি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কুমিল্লার সেই সুযোগ আছে। আজ রংপুরের বিপক্ষে জিতলে ১০ পয়েন্ট হবে। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হবে না। কারণ সেরা চারে চারটি দল খেলবে। পয়েন্ট তালিকার সেরা চারটি দল প্লে-অফে লড়াই করবে। রংপুর জেতায় ১২ পয়েন্ট পেয়েছে। তাতে করে শনিবার রাতের ম্যাচের আগে চারটি দলের ১২ পয়েন্ট করে হয়ে গেছে। বরিশাল ও কুমিল্লার যা হওয়ার আর কোন সম্ভাবনাই নেই। তাই সেরা চারে ওঠার সুযোগও নেই। আর তাই বিদায়ও নিশ্চিত হয়ে গেছে। বরিশালের হারে রংপুর ১২ পয়েন্ট পেতেই কুমিল্লারও বিদায় নিশ্চিত হয়।
×