ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পটুয়াখালীর ১০৭ প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬

পটুয়াখালীর ১০৭ প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী, ৩ ডিসেম্বর ॥ ১০৭টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ইতোমধ্যে কয়েকটি বিদ্যালয়ের ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় টিনের ঘর তৈরি করে, আবার অনেকে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নিচ্ছে। স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা যেমন উৎকণ্ঠায় দিন কাটায়, তেমনি ১৬ হাজার ৮২৮ শিশু শিক্ষার্থী আতঙ্কের মধ্য দিয়ে পাঠদান নিচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সূত্রে জানা যায়, আট উপজেলায় সদ্য জাতীয়করণ ৫৮৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সরকারী বিদ্যালয় রয়েছে এক হাজার ১৬৮টি। তবে ১০৭টি স্কুলই রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ, জরাজীর্ণ, ব্যবহার অনুপযোগী। এই স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৬ হাজার ৮২৮ জন। ১০৭টি ঝুঁকিপূর্ণ, জরাজীর্ণ, ব্যবহার অনুপযোগী স্কুলের মধ্যে কলাপাড়া উপজেলায় নয়টি স্কুলের মধ্যে তিনটি স্কুলের ভবন নেই, ছয়টি ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ। এই নয়টি স্কুলে এক হাজার ২৬৮ শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে। গলাচিপায় ২২টি স্কুলের মধ্যে তিনটি পরিত্যক্ত, দুইটি স্কুলে ভবন নেই। বাকি ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ, জরাজীর্ণ, ব্যবহার অনুপযোগী। এই স্কুলগুলোতে চার হাজার ৫৬৫ শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে। দশমিনায় ১৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে একটি বিদ্যালয়ে পাঠদান চলে খোলা আকাশের নিচে এবং অপর ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ। এই স্কুলগুলোতে দুই হাজার ২৩৩ শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে। সদর উপজেলায় ১৪টি স্কুলের মধ্যে একটি বিদ্যালয়ে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান হয়। চারটি স্কুল ভবন এমনই জরাজীর্ণ যে কোন সময়ে ভেঙ্গে পড়তে পারে। একটি স্কুলে টিনের জরাজীর্ণ ঘরে পাঠদান চলছে। অপর আটটি জরাজীর্ণ। এই স্কুলগুলোতে এক হাজার ৪৬৩ শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে। বাউফলে ২৫টি স্কুলের মধ্যে ১০টি বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ। বাকি ১৫টি বিদ্যালয় জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই স্কুলগুলোতে চার হাজার ৬শ’ শিক্ষার্থী রয়েছে। মির্জাগঞ্জে ১৫টি স্কুলই জরাজীর্ণ। ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান নিচ্ছে এক হাজার ৩৫৭ শিশু শিক্ষার্থী। রাঙ্গাবালী উপজেলার সাতটি স্কুলের ভবনই জরাজীর্ণ। টিনের ঘরে এক হাজার ৩৪২ শিশু শিক্ষার্থীর পাঠদান চলছে। দশমিনা উপজেলায় দক্ষিণ পূর্ব দশমিনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান জানান, ১৯৯৪-১৯৯৫ বছরে একতলা স্কুল ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় এখন জরাজীর্ণ হয়ে ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে স্কুল মাঠে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। একই উপজেলার পশ্চিম বাঁশবাড়ীয়া শাহ কেরামতিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বিকল্প হিসেবে স্থানীয়দের উদ্যোগে পাশে টিনের ঘর তুলে শিক্ষাদের পাঠদান দেয়া হচ্ছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক আলম জানায়, ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে স্কুল ভবন নির্মাণ করা হয়। দুই বছর আগেই স্কুল ভবন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। স্কুলের ২৩১ শিশু শিক্ষার্থীর জন্য পাশে টিনের ঘর তুলে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমী বলেন, জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ভবনের তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×