ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হেরেও সেরা চারে চিটাগাং

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬

হেরেও সেরা চারে চিটাগাং

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম দল হিসেবে ঢাকা ডায়নামাইটস এবারের বিপিএলে সেরা চারে খেলা নিশ্চিত করেছে। শনিবার রাতের ম্যাচে হেরেও চিটাগাং ভাইকিংস দ্বিতীয় দল হিসেবে সেরা চারে খেলার টিকেট পেয়েছে। চিটাগাং ভাইকিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সেই আশা জিইয়ে রেখেছে রাজশাহী কিংসও। রাজশাহীর আশা জিইয়ে রাখলেন আসলে আফিফ হোসেন ধ্রুব। অফ স্পিনার ধ্রুব’র (৫/২১) ঘূর্ণি জাদুতে রাজশাহীর আশা টিকে আছে। জহুরুল ইসলাম অমিকে এলবিডাবলিউ করলেন। টি২০র সবচেয়ে বড় তারকা ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইলকে বোকা বানিয়ে বোল্ড করে দিলেন। জাকির হাসানকে সাজঘরে ফেরালেন। এরপর সাকলায়েন সজীব ও ইমরান খান জুনিয়রকেও ঘূর্ণির ফাঁদে ফেললেন। চিটাগাংয়ের ইনিংসের মাজা ভেঙ্গে দিলেন শুরুতেই। ৭০ রানে চিটাগাংয়ের ৮ উইকেটের পতন ঘটল। এরমধ্যে পাঁচটি উইকেটই দখল করে নিলেন ধ্রুব। ৪ ওভার বল করে ১ মেডেনসহ ২১ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করলেন। ধ্রুবর ৪ ওভার শেষ হয়ে যাওয়ার পর চিটাগাংয়ের ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিক ৫৪ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৬৭ রান না করলেতো ৯ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১১১ রান করতেই পারত না চিটাগাং। এ রানের পর কী আর রাজশাহীর জেতা অসম্ভব কিছু? খুবই সম্ভব। আর সেই সম্ভব কাজটাই জেমস ফ্রাঙ্কলিনের অপরাজিত ৬৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৩.৫ ওভারে করে ফেলল রাজশাহী। ১১২ রান করে জিতে গেল। রাজশাহীর আফসোস থাকতেই পারে। যদি আর ৩ বল আগে ১৩.২ ওভারে জিততে পারত রাজশাহী, তাহলে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে তারাই সেরা চারে খেলা নিশ্চিত করে ফেলত। কিন্তু দুই বল বেশি খেলায় রানরেটে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় স্থান দখল করল। সেই সঙ্গে সেরা চারে খেলার আশা টিকে রইল। অনুর্ধ-১৯ দলেরসহ অধিনায়ক ধ্রুব দুর্দান্ত বোলিং করে দেখালেন। বিকেএসপির হয়ে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলেন ১৭ বছর বয়সী ধ্রুব। এছাড়া দেশের আর কোন প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটেই নেই তার বিচরণ। শনিবার টি২০তে অভিষেক হওয়া ধ্রুবই কাঁপিয়ে দিলেন চিটাগাংকে। সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেকে ৫ উইকেট নিলেন। বিপিএলে প্রথম স্পিনার হিসেবে এক ম্যাচে ৫ উইকেটও তুলে নিলেন। এরআগে ৬ বোলার ৫ উইকেট করে নিয়েছেন। সবাই পেসার ছিলেন। স্পিনার হিসেবে ধ্রুবই প্রথম বিপিএলে ৫ উইকেট শিকার করলেন। ম্যাচটিতে হারার পরও ১২ পয়েন্ট পাওয়া চিটাগাং রানরেটে (+০.২৩৩) এগিয়ে থেকে সেরা চারে খেলা নিশ্চিত করেছে। রাজশাহীর পয়েন্ট এখন ১২। রানরেট +০.২০৮। তৃতীয় স্থানে আছে রাজশাহী। টিচাগাং ও রাজশাহীর আর কোন ম্যাচ বাকি নেই। রাজশাহীর পরে সমান পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে পিছিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে থাকা রংপুর রাইডার্স (রানরেট, -০.০৮৮) ও পঞ্চম স্থানে থাকা খুলনা টাইটান্স (রানরেট, -০.২৯৩)। রংপুর ও খুলনার আজ ম্যাচ রয়েছে। রংপুর ও খুলনা যদি আজ জিতে দুই দলেরই চিটাগাং ও রাজশাহীর চেয়ে ২ পয়েন্ট বেশি হবে। সেক্ষেত্রে সেরা চারে খেলা নিশ্চিত করবে খুলনা ও রংপুর। রাজশাহীর চেয়ে রানরেটে এগিয়ে থাকায় তখন চতুর্থ দল হিসেবে সেরা চারে উঠবে চিটাগাং। বিদায় নেবে রাজশাহী। আর যদি খুলনা ও রংপুর হারে কিংবা যে কোন একটি দল হারে, তাহলে চিটাগাংতো সেরা চারে খেলবেই; রানরেটে এগিয়ে থেকে রাজশাহীও সেরা চারে উঠবে। হারা দল রানরেটে পিছিয়ে থেকে এরইমধ্যে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়া দুটি দল বরিশাল বুলস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পথযাত্রী হবে। চট্টগ্রাম পর্বের পর যে দলটি বিদায়ের তালিকায় পড়ে গিয়েছিল, সেই দলই কিনা আজ লীগ পর্বের শেষদিন পর্যন্ত সেরা চারে খেলার সম্ভাবনা জিইয়ে রাখল। ধ্রুবর অসাধারণ বোলিংয়েই শনিবার জেতা সম্ভব হল। গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচে ঘূর্ণির জাদু দেখিয়ে রাজশাহীর আশা টিকিয়ে রাখলেন ধ্রুব। তবে হেরেও সেরা চারে খেলা নিশ্চিত করে নিল চিটাগাং। স্কোর ॥ রাজশাহী কিংস-চিটাগাং ভাইকিংস ম্যাচ- টস ॥ রাজশাহী (ফিল্ডিং)। চিটাগাং ইনিংস ১১১/৯; ২০ ওভার (তামিম ০, গেইল ৫, বিজয় ৮, অমি ১৩, মালিক ৬৭*, জাকির ৩, নবী ১২, সাকলাযেন ১, ইমরান ০, তাসকিন ২, শুভাশিষ ০*; ধ্রুব ৫/২১)। রাজশাহী ইনিংস ১১২/৪; ১৩.৫ ওভার (সোহান ১২, মুমিনুল ২১, সাব্বির ৮, ফ্রাঙ্কলিন ৬৩*, সামি ৩, প্যাটেল ৩*; সাকলায়েন ২/৯, ইমরান ২/৩০)। ফল ॥ রাজশাহী কিংস ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ আফিফ হোসেন ধ্রুব (রাজশাহী কিংস)।
×