ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬

আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু

স্টাফ রিপোর্টার॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আগামীকাল সোমবার থেকে ভোটযুদ্ধে নামছেন প্রার্থীরা। এদিন থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচারে নামবেন নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা। তফসিল অনুযায়ী যারা নির্বাচন থেকে বিরত থাকতে চান তাদের আজকের মধ্যেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। এরপর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কোন সুযোগ নেই। আগামীকাল সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। তবে রাজনৈতিক দলের প্রার্থিরা তাদের দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবেন। স্বতন্ত্র ও অন্য প্রার্থীরা ইসির নির্ধারিত প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে নারায়ণঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী ও বিএনপির প্রার্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে জনগণের দৃষ্টি রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী ও বিএনপির প্রার্থী এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের দিকে। মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই দুই প্রার্থীর মধ্যে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেই অলিখিত প্রচারে রয়েছেন সেলিনা হায়াত আইভী ও সাখাওয়াত হোসেন খান। তারা জনগণের দ্বারে দ্বারে ভোট ও দোয়া প্রার্থনাও করছেন। এছাড়াও এ সিটিতে বাকি ৬ মেয়র প্রার্থীরাও জনগণের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। আগামীকাল সোমবার থেকে তারা আনুষ্ঠানিক প্রচার যুদ্ধে নেমে পড়বেন। এ সিটিতে ৮ জন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৬৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। সংরক্ষিত ৯ মহিলা আসনে মোট ৩৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচনে মেয়র একজন সহ মোট ৩৬ জন প্রার্থী জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবেন। কমিশন সূত্রে জানা গেছে নারায়ণগঞ্জ ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে মোট ১৮৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন ৮ জন প্রার্থী, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ জন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৮ জন, ৫ নম্বরে ৮ জন, ৬ নম্বরে ৫ জন, ৭ নম্বরে ৯ জন, ৮ নম্বরে ৯ জন, ৯ নম্বরে ১২ জন, ১০ নম্বরে ১০ জন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন, ১৫ নম্বর ওয়র্ডে ৬ জন, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ জন, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ জন, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ৮ জন, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ জন, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ জন, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জনগণের ভোটে প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে প্রার্থী নির্বাচিত হবেন। এছাড়া ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট সংখ্যা রয়েছে ৩৬ জন। এর মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর সংখ্যা ৫ জন, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে এসব প্রার্থীদের মধ্যে যারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে চান তাদের আজ রবিবার অফিস সময়ের মধ্যে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হবে। কমিশন জানিয়েছে আজকের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন তারা সবাই এ নির্বাচনে কমিশনের বৈধ প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন। এদের সবার মধ্যেই প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতীক নিয়েই তারা আনুষ্ঠানিক নির্বাচনে নেমে পড়তে পারবেন। কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি কাজ করছে কমিশন। কারও বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেলে কাউকে ছাড়া দেয়া হবে না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রার্থী কোন দলে তা বিবেচনায় নেয়া হবে না। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইতোমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েন চেয়ে ইসিতে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে। যদিও ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পরিস্থিতি বুঝে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যদিও আগের কোন স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়নি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তারা এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথ ভাবছেন না। অন্যান্য নিয়মিত বাহিনীর সাহায্যেই নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনা মোঃ শাহনেওয়াজ শনিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পরিস্থিতি বোঝার পর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনীর মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন, যেকোন নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত হয় কমিশন। আগামী ১৪ ডিসেম্বর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তখন আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জে গত নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যারা দায়িত্বে ছিলেন তা যথেষ্ট ছিল। নির্বাচনের জন্য পরিবেশ পরিস্থিতি ঠিক করে দেয়াইর হলো কমিশনের কাজ উল্লেখ করেন।
×