ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জিয়ার নাম মুছে ফেলাই সরকারের উদ্দেশ্য ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৩ ডিসেম্বর ২০১৬

জিয়ার নাম মুছে ফেলাই সরকারের উদ্দেশ্য ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় সংসদ ভবনের মূল নক্সা যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে আনার পেছরে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলাই সরকারের উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, জিয়ার কবর সরানোর কোন চেষ্টা দেশের মানুষ মেনে নেবে না। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার উপযুক্ত নয় মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, এই কমিশনের অধীনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে মনে করি না। তারপরও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা ও জনগণকে সংগঠিত করতে, তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমরা নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছি। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কী না জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, আমরা কখনই মনে করেনি না এ নির্বাচন কমিশন দিয়ে কোন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার যোগ্যতাই এ নির্বাচন কমিশনের নেই। তিনি বলেন, হঠাৎ করে লুই আই কানের নক্সা আনা একটি নীলনক্সা। এর মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা। ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা সম্ভব নয় কারণ, দেশের মানুষের হৃদয়ে তাঁর নাম প্রোথিত হয়ে আছে। তিনি বলেন, মাজার সরিয়ে ফেলা বলুন, পদক প্রত্যাহার বলুন আর অন্য কিছু বলুন এদেশের মানুষ কোনদিনই এ ধরনের কোন হঠকারী সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে সেনা বিপদগামী সদস্যদের হাতে নিহত হন জিয়াউর রহমান। তাঁকে জাতীয় সংসদ ভবনের পাশে সমাহিত করা হয়। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান ও আতাউর রহমান খান, সাবেক মন্ত্রী মশিউর রহমান যাদু মিয়া, মুসলিম লীগ নেতা খান এ সবুর, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ এবং পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পীকার তমিজউদ্দীন খানের কবরও রয়েছে সংসদ ভবন এলাকায়। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য দীর্ঘদিন ধরে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা বলে যাচ্ছে। আর খালেদা জিয়াসহ দলের নেতাদের নামে দেয়া হচ্ছে মামলা। ওয়ান-ইলেভেনের সময় যেমন বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্র ছিল, এখনও এমনটাই চলছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা চলছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, দলের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহবুব আলম প্রমুখ। বর্তমান নির্বাচন কমিশন মেরুদ-হীন- নজরুল ॥ বর্তমান নির্বাচন কমিশন মেরুদ-হীন বলে অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, এ নির্বাচন কমিশন দিয়ে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি নির্বাচনে তারা সরকারী দলের বিজয়ের বাহন হিসেবে কাজ করেছে। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ভয়েস অব ডেমোক্রেসি’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে খালেদা জিয়া যে প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটি চলমান রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। কারণ, খালেদা জিয়ার প্রস্তাব দেশের রাজনীতিতে চমৎকার সুযোগ এনে দিয়েছে। তার প্রস্তাবনাটি আমরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে আলোচনা-সমালোচনা করার মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিকল্পনা করতে পারি। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান রিন্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমিন প্রমুখ।
×