ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শতভাগ বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আরও নয় উপজেলা

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩ ডিসেম্বর ২০১৬

শতভাগ বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আরও নয় উপজেলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের আরও নয় উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুত সুবিধার আওতায় এসেছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে ফরিদপুর, নীলফামারী, ময়মনসিংহ, যশোর, চাঁদপুর ও নাটোরের সদর উপজেলা, গোপালগঞ্জের কোটালী পাড়া, বরিশালের বাউফল ও সিলেটের ছাতক। সূত্র জানায়, এই নয় উপজেলার শতভাগ মানুষ বিদ্যুত ব্যবহার করছেন। এখানে সব বাড়িতে বিদ্যুত রয়েছে। সরকারের ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার পালনের অংশ হিসেবে এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যদিও আগস্টে বিদ্যুত বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল দেশের ২৮ জেলা শতভাগ বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আসবে। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী আরও ৬টি উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করেন। উপজেলাগুলো হচ্ছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, নারায়ণগঞ্জের বন্দর, নরসিংদীর পলাশ, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, কুমিল্লার আদর্শ সদর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা। এই উপজেলার যেসব বাড়িতে গ্রিডের বিদ্যুত দেয়া সম্ভব হয়নি সেখানে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের নেয়া কর্মপরিকল্পনায় দেখা যায় ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার এবং ২০৩০ সালে ৪০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন এবং এক লাখ কিলোমিটার বিতরণ লাইন, প্রয়োজনীয় উপকেন্দ্র নির্মাণ ও ক্ষমতাবর্ধন করা হবে। এজন্য সরকারের ২০২১ সাল পর্যন্ত ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংস্থান করতে হবে। অতীতে বিদ্যুতের প্রকল্প বাস্তবায়নে দাতা সংস্থার দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। দাতা সংস্থা বছরের পর বছর ঘুরিয়ে প্রকল্প বাতিল করত। এখন সেই পরিস্থিতি থেকে সরে এসে সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। অনেক ব্যাংকই বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে সরকারের কাছে আসছে। সরকার বলছে এখন প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়ন কোন বড় সমস্যা নয়। সরকারের পরিকল্পনায় দেখা যায়, ২০১৭ সালের জুনে আরও ৭৫টি উপজেলা এবং ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ৬৯টি উপজেলার শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় চলে আসবে। এভাবে মোট ৪৬৫টি উপজেলার শতভাগ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বম্বর নাগাদ। যদিও সরকার বলছে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে ২০২১ সালে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩০ লাখ নতুন গ্রহককে বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া হবে। এ জন্য ৩৫ হাজার কিলোমিটার লাইন স্থাপন করতে হবে। দুটি সরকারের শুরুতে দেশের বিদ্যুত উৎপাদন পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখা যায় ২০০৯ সালে দেশে মাত্র ২৭ বিদ্যুত কেন্দ্র ছিল। সব বিদ্যুত কেন্দ্র মিলিয়ে উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ওই সময়ে চার হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। তবে গড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুত উৎপাদন হতো। বিদ্যুতখাতে এক নাজুক পরিস্থিতি নিয়ে ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার গঠন করে। ওই সময়ে সারাদেশে গড়ে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হতো। খোদ রাজধানীতে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রাখতে হতো। সরকার গঠনের পরই বিদ্যুতখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় ওই সরকার। শুরু থেকেই অনেকটা উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন শুরু করা হয়। সমালোচনা হলেও বিদ্যুতখাতের সার্থকতা সমালোচকদের মুখেই হাসি ফুটিয়েছে।
×