ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খাদিজার সুস্থ হয়ে ওঠা এবং বদরুলের শাস্তি

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২ ডিসেম্বর ২০১৬

খাদিজার সুস্থ হয়ে ওঠা এবং বদরুলের শাস্তি

মৃত্যুর সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে লড়াই করতে করতে শেষ অবধি খাদিজা আজ অনেকটা আরোগ্যের পথে। চিকিৎসা এখনও শেষ হয়নি। থেরাপির মতো আরও কিছু নিয়মবিধি তার অসুস্থ শরীরে এখনও দরকার। মোটামুটি সুস্থ খাদিজা হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় স্কয়ার হাসপাতালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তার জীবনে ঘটে যাওয়া এক অবর্ণনীয় নৃশংসতার স্মৃতি তাকে উদ্বিগ্ন করলেও সবার আন্তরিক সাহায্য এবং সহযোগিতার জন্য দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে চিকিৎসক এবং গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি খাদিজার হৃদয়নিঃসৃত শ্রদ্ধা সবাইকে মুগ্ধ করে। সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজাকে উপর্যুপরি চাপাতির আঘাতে মারাত্মকভাবে জখম করে শাহ্জালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের এক ছাত্র। বদরুল আলম আবার ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। যদিও কেন্দ্র থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। খাদিজার ওপর এই বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সিলেটসহ সারা বাংলাদেশ বিক্ষোভ, প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে। ঘাতক বদরুলকে আটক করা হয়। এখন সে পুলিশী হেফাজতে কারাবন্দী। এমন নৃশংস অপরাধ ঘটানোর জন্য বদরুলের শেষ পরিণতি কিং হবে তা আসলে কারোরই ধারণা নেই। কারণ আইনের ফাঁক ফোকরে এমন সব নিয়মবিধি জড়ানো আছে যা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে নানাভাবে উস্কে দেয়। যার থেকে অবাধে, নির্বিঘেœ আসামি বের হয়ে আসতে পারে। খাদিজার সুস্থতা সমগ্র দেশবাসী আন্তরিকভাবে কামনা করেছে এবং সে ক্রমান্বয়ে শারীরিক উন্নতির দিকে, ধাপে ধাপে এগিয়েও যাচ্ছে। এক সময় পুরোপুরি সুস্থ হয়ে সে বাড়িতেও ফিরে যাবে। আর সেটাই যেন হয়। কিন্তু তাতে কি বদরুলের অফরাধের মাত্রা কমে যাবে? নাকি খাদিজার বেঁচে যাওয়া তাকে তার শাস্তির দ- কমিয়ে দেয়া হবে। এটা কখনও কারোরই কাম্য হতে পারে না। এমন জঘন্য অপরাধের জন্য বদরুলকে তার নির্ধারিত এবং প্রাপ্য শাস্তি ভোগ করতেই হবে। আইন এবং বিচারিক ব্যবস্থায় এর যেন কোন অন্যথা ঘটতে না পারে। খাজিদার সুস্থ হওয়া এবং অপরাধীর শাস্তি লাঘব করা কখনই এক সুতায় গাঁথা হতে পারে না। আমরা আসলেই কেউ জানি না বদরুলের বিচারের প্রক্রিয়া আজ কোন্ পর্যায়ে। দীর্ঘসূত্রতার জালে আটকে পড়া কিনা প্রয়োজনে আইনী প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল এবং মজবুত করতে হবে। বদরুল যেন আইনী কোন ব্যবস্থাকে তার অপরাধের মাত্রা কমাতে কাজে লাগাতে না পারে। হত্যা এবং হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করা দুটো এক জিনিস না হলেও সে জন্য অপরাধের মাত্রা বিন্দুমাত্র কমে যেতে পারে না। যারা খুন হয় তারা কেউ জানতেও পারে না। অপরাধী শাস্তি পেল কি পেল না। চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং সর্বশক্তি মানের অশেষ আশীর্বাদে খাদিজা আজ সুস্থ অবস্থায় নিজেকে দাঁড় করিয়েছে। এই সুস্থতা তার জন্য আরও আনন্দদায়ক হবে যদি সে প্রত্যক্ষ করে দোষী বদরুলের উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে। এই দাবি সমগ্র দেশবাসীর। আইনী ব্যবস্থার কাছে আমাদের জোরালো আবেদন বিচার প্রক্রিয়ায় আর যেন কোন গরিমসি করা না হয়। যে অভিযোগের দায় বদরুল স্বীকার করেছে তার থেকে মুক্তি যেন তার না মেলে। অপরাজিতা ডেস্ক
×