ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইয়াসির আরাফাত সুজন

আভিজাত্যের গাউন

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২ ডিসেম্বর ২০১৬

আভিজাত্যের গাউন

নারী সে হোক বাঙালী বা অন্য কোন জাতি তবে তার পোশাকের ধরনই বলে দেয় তার রুচি। নারীর একেবারে আস্তিত্বের সঙ্গে তার পোশাকের সম্পর্ক। রুচিশীল পোশাকই নারীর সৌন্দর্যের মুগ্ধতা। আর এ মুগ্ধতা ধরে রাখার জন্য নারী বেছে নিচ্ছে বৈচিত্র্যময় নতুন ডিজাইনের ফ্যাশনেবল ড্রেস। চলমান ফ্যাশনের বাজারে এখন চলছে কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত ছড়ানো একটি পোশাক। যার নাম গাউন। সাধারণত এ পোশাক পাশ্চাত্যে মেয়েদের বিয়ের পোশাক। তবে বর্তমানে তা আর সেখানে স্থির নেই। এখন যে কোন অনুষ্ঠানে কিংবা বিশেষ কোন আয়োজনে হরহামেশাই চলছে গাউনের চল। মানুষ মাত্রই ভিন্নতা। তাই বিভিন্ন উপলক্ষে নারীদের চাহিদা থাকে রকমারি ডিজাইনের পোশাকের প্রতি। যেমন কিছুদিন আগেই নারীরা পরতে পছন্দ করেছে আনারকলি ড্রেস। সেই জায়গা এখন দখলে নিয়েছে গাউন। গাউনের জনপ্রিয়তা আর আকর্ষণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনুষ্ঠানগুলোতে। যেমন বিয়েতে, পার্টি কিংবা বড় কোন গালা অনুষ্ঠানে। কেমন যেন একটা আভিজাত্যের ভাব। পাশ্চাত্য আর দেশী বৈচিত্র্য এ দুটির সংমিশ্রণে তৈরি হয়ে থাকে গাউন। নগরীর চাঁদনী চক এবং গাউছিয়া ঘুরে দেখা যায় বৈচিত্র্য আর ভিন্নতা নিয়ে নতুন নতুন কিছু পোশাক এসেছে। নতুন ডিজাইনের এসব বিভিন্ন পোশাকের মধ্যে রয়েছে গাউন। গাউনের আবার বেশ কিছু ভাগ রয়েছে যেমন ফ্রগ স্টাইল, ওয়েস্টান এবং সেলোয়ার কামিজের স্টাইল। এক দোকানি জানায়, এখন মেয়েরা রঙের ওপর নির্ভর করে গাউন কিনে থাকে। লং গাউনের চল বেশ কিছুদিন ধরে বেশি চলছে। আগে শুধুই পার্টিতে গাউন পরা হতো। এখন তরুণীরা আরও অনেক ক্ষেত্রেই লং গাউন বেছে নিচ্ছেন। কারণ, স্বাচ্ছন্দ্য আর স্টাইল দুটোই খুঁজে পাবেন লং গাউনে। পার্টিওয়্যার বলি আর ক্যাজুয়াল সব লুকেই এই পোশাক বেশ মানানসই। যেহেতু শীত শুরু হয়ে গেছে সেহেতু গরম কাপড়কেই আমরা বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। আর পোশাকটি যদি শীত উপযোগী হয় তাহলে তো কথাই নেই। আজকাল গেঞ্জি কাপড়ের গাউনও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো পরতে বেশ আরাম আবার শীতও নিবারণ হয়। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন রঙিন এসব গাউন। আজকাল সেলোয়ার কামিজেও লেগেছে গাউনের ছোঁয়া। ঘের দেওয়া ড্রেসের ফ্লরটাচ ডিজাইনের সঙ্গে মিলে মানিয়ে নিচ্ছে নারীরা পাশ্চত্য ঘরনার এসব পোশাক। এখন প্রাশ্চ্যত্যের সঙ্গে দেশীয় সংস্কৃতির মিশেলে আনা হচ্ছে ফিউশন। যেমন দেখা যায় নগরীর গাউছিয়া মার্কেটে সেলোয়ার কামিজের আদি ধরন পাল্টে নতুন ডিজাইন এর গাউন পাওয়া যায় যা ফ্রোর টাচ নামে পরিচিত। সঙ্গে মেচিং পাজামা ও ওরনা। গাউন সালোয়ারের সঙ্গে মানানসই গয়না সাজ কখনও সম্পূর্ণ হতে পারে না সঙ্গে মানানসই গয়না ছাড়া। গাউন-সালোয়ারের সঙ্গে কস্টিউম জুয়েলারি বা মাল্টিকালারের পাথরের গয়না ভাল মানাবে। তবে গাউন সালোয়ারে যেহেতু অনেক ভারি ডিজাইন করা থাকে তাই খুব ভাল হবে যদি শুধু কানে ভারি পাথরের গয়না পরা যায়। তাহলেই সাজটা পাবে পূর্ণতা। যদি গাউন-সালোয়ার ফুল হাতা হয় তাহলে কোনকিছু না পরাই ভাল। গড়ন উপযোগী গাউন বাংলাদেশের মেয়েদের গড়ন একটু ভারি হওয়ায় গাউনের কাটিংয়ে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। যেমন আগে গাউন এর ঘেরটা শুরু হতো কোমর থেকে। একটু মোটা বলে অনেকেই আগে এই জাতীয় পোশাক এড়িয়ে চলেছেন। তাদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ নকশায় নতুন বৈচিত্র্যের গাউন তৈরি হচ্ছে যার ঘের বুকের নিচ থেকে হয়। অন্য দিকে গাউনের দুই দিক একটু ফিটেড দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে গাঢ় রঙের কাপড়। এছাড়া যে কোন গড়নের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য বাজারে এসেছে মারমেইড কিংবা ফিশ শেপের গাউন। এ ধরনের নকশায় হাঁটু থেকে পা পর্যন্ত থাকছে নেটের কুল। গতানুগতিক ধারা থেকে সরে এসে নতুনত্ব আনতে সামনের দিকে ওড়নার স্টাইলের কুচি দিয়ে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে কাপড়। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের গাউন পাওয়া যচ্ছে। কিন্তু অনেকে পছন্দমতো বানিয়ে নিচ্ছেন নিজস্ব ডিজাইনের গাউন। অন্যদিকে যারা একটু রং প্রিয় আর শৌখিন তারা ঝুঁকছেন গাঢ় লাল, গোলাপী কিংবা নীল কালারের ওপর। এসব গাউনের ওড়নায় আবার রয়েছে ভিন্নতা। বাহারী সাজের এসব গাউনের দামের মধ্যেও রয়েছে অনেক ভিন্নতা। নিউমার্কেটের চাঁদনীচকে খুব সহজে ফ্লরটাচ ডিজাইন সিঙ্গেল গাউন পাওয়া যাবে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে। একটু বেশি দামের যদি কিনতে চান তাহলে নামী-দামী কিছু শোরুমে যেতে পারেন যেখানে ৩৫০০ থেকে ৩০,০০০ টাকার পর্যন্ত পাওয়া যায় এসব গাউন। আবার নিজে কাপড় কিনেও বানিয়ে নিতে পারেন মনের মতো ডিজাইন করে।
×