ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীকে আবারও হারাল বরিশাল

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২ ডিসেম্বর ২০১৬

রাজশাহীকে আবারও হারাল বরিশাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম লেগে যেমনটি হয়েছে। ফিরতি লেগেও তেমনটিই হয়েছে। রাজশাহী কিংসকে দুই লেগেই হারিয়েছে বরিশাল বুলস। বৃহস্পতিবার একমাত্র ম্যাচে রাজশাহীকে ১৭ রানে হারিয়ে সেরা চারে খেলার আশাও জিইয়ে রাখল বরিশাল। পয়েন্ট তালিকার সর্বনিম্ন স্থান থেকে ৮ পয়েন্ট পেয়ে ষষ্ঠ স্থানে উঠে আসল বরিশাল। এ ম্যাচ হারে ১০ পয়েন্ট থাকা রাজশাহীর সেরা চারে খেলার আশা ফিকে হলেও শেষ হয়ে যায়নি। ম্যাচে টস জিতে রাজশাহী। তবে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। আগে ব্যাটিং করার সুযোগটি ভালভাবেই কাজে লাগায় বরিশাল। ইংল্যান্ডের ডেভিড মালানের ৫৬, ফজলে মাহমুদ রাব্বির ৪৩, শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরার অপরাজিত ২৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৬১ রান করে বরিশাল। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৪৪ রান করতে পারে রাজশাহী। সামিত প্যাটেল সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন। রায়াদ এমরিট দুর্দান্ত বোলিং করে ৩ উইকেট নেন। তাতে ম্যাচ সেরাও হন। বরিশালতো দ্বিতীয় উইকেটেই চাপ উতরে গেছে। বিপদ দূর করেছে। কিন্তু রাজশাহী সেটি করতে পারেনি। শুরুতে ২৭ রান পর্যন্ত প্রথম উইকেট টিকিয়ে রাখা গেছে। কিন্তু এরপর ৬৮ রানেই ৪ উইকেটের পতন ঘটে যায়। এত বিশাল রান অতিক্রম করতে গেলে মুমিনুল হক, নুরুল হাসান সোহানের পর বিশেষভাবে সাব্বির রহমান রুম্মনকে কিছু করে দেখাতে হতো। যখন তিনজনই ব্যর্থ হলেন, এরপর আর রাজশাহীর জয়ের সম্ভাবনা থাকে না। তবুও জেতার তীব্র আকাক্সক্ষা থেকে সামিত প্যাটেল ও জেমস ফ্রাঙ্কলিন চেষ্টা করে যান। কিন্তু দুইজন মিলে ১১২ রানের বেশি এগিয়ে যেতে পারেননি। পঞ্চম উইকেটে ৪৪ রানের জুটি গড়েন। ফ্রাঙ্কলিন (১৮) আউট হয়ে যান। ফ্রাঙ্কলিনের আউটের পরই অর্ধশতক করে ফেলেন প্যাটেল। ১৮ বলে জিততে ৪৫ রানের দরকার থাকে। যেই দলের রান ১২৯ রানে যায়, প্যাটেলও (৬২) আউট হয়ে যান। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হারের পথেই এগিয়ে যায় রাজশাহী। শেষে অবশ্য শেষ ওভারে ড্যারেন সামি ছক্কা-চার হাকিয়ে খেলা জমিয়ে তুলেন। কিন্তু জেতাতে পারেন না ১১ রানে অপরাজিত থাকা সামি। ১৭ রানে হারে রাজশাহী। শুরুতেই চাপে পড়ে বরিশাল। ৭ রানেই ওপেনার জীবন মেন্ডিসের উইকেটটি হারায়। কিন্তু এরপর চমক দেখার মিলে। রাজশাহী ফিল্ডারদের ফিল্ডিং মিস ও ক্যাচ মিসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি ১০০ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। এই জুটিতেই বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় বরিশাল। ১০৭ রানে গিয়ে ভুল করে রান আউট হয়ে যান মালান। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৩ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ রান করেন। বোঝা যায়, বরিশাল বড় সংগ্রহই গড়বে। মালান যখন আউট হন তখন ১৩.৩ ওভার থাকে। বাকি ৬.৩ ওভারেই ১৬১ রানে পৌঁছে যায় বরিশাল। তবে হারায় আরও ২টি উইকেট। মালান আউট হওয়ার পর কোন রান যোগ না হতেই রাব্বিও (৪৩) সাজঘরে ফেরেন। এরপর ১৪৩ রানে মুশফিকও আউট হন। শেষপর্যন্ত থিসারা পেরেরা (২৯*) ও শাহরিয়ার নাফীস (১৬*) ৩৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন। বরিশালও জয়ের ভীত গড়ে ফেলে। শেষপর্যন্ত জিতেও। প্রথম লেগে রাজশাহীর বিপক্ষে ১৯২ রান করেছিল বরিশাল। ম্যাচটিতে ৪ রানে জিতেছিল বরিশাল। বিপিএলের এবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরও এটি। এত রান করার পরও হারের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল বরিশাল। কেন? এবার টুর্নামেন্টের একমাত্র শতকটি যে করেছিলেন রাজশাহীর সাব্বির রহমান রুম্মন (১২২ রান)। যেটি আবার বিপিএলেরই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। কিন্তু বৃহস্পতিবার ফিরতি লেগে সেইরকম ব্যাটিং নৈপুণ্য রাজশাহীর কেউই দেখাতে পারেননি। তাতে আবারও বরিশালের কাছে হারই হয়েছে। স্কোর ॥ রাজশাহী কিংস-বরিশাল বুলস ম্যাচ টস ॥ রাজশাহী (ফিল্ডিং)। বরিশাল ইনিংস ১৬১/৪; ২০ ওভার (মেন্ডিস ৬, মালান ৫৬, রাব্বি ৪৩, মুশফিক ৮, পেরেরা ২৯*, শাহরিয়ার ১৬*; সামি ১/১৬)। রাজশাহী ইনিংস ১৪৪/৭; ২০ ওভার (মুমিনুল ১৬, সোহান ১২, সাব্বির ৮, প্যাটেল ৬২, রকিবুল ৯, ফ্রাঙ্কলিন ১৮, সামি ১১*, মিরাজ ০*; এমরিট ৩/২৭)। ফল ॥ বরিশাল বুলস ১৭ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ রায়াদ এমরিট (বরিশাল বুলস)।
×