ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট

সবজি চাষীর মাথায় হাত

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২ ডিসেম্বর ২০১৬

সবজি চাষীর মাথায় হাত

স্টাফ রিপোর্টার,বগুড়া অফিস ॥ পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপ ধর্মঘটের কারণে বগুড়ার সবজি চাষীদের মাথায় হাত পড়েছে। আকস্মিক এই ধর্মঘটের কারণে দেশের অন্যতম বৃহৎ সবজি বাজার বগুড়ার মহাস্থানহাটে বৃহস্পতিবার সবজির মূল্যে ধস নামে। চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবধানে সবজির মূল্য অর্ধেকে নেমে আসে। এতে সবজি চাষীদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে। ভাল লাভের আশায় যে সব কৃষক শীতের আগাম সবজি আবাদ করেছেন তারা পড়েছেন বিপর্যয়ে। ধর্মঘট আহবানকারীরা বলছে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। সড়ক-মহাসড়কে কাগজপত্র পরীক্ষার নামে পুলিশের হয়রানি এবং ওয়েস্কেলের নামে চাঁদাবাজি- হয়রানি বন্ধসহ ৭ দফা দাবিতে উত্তরবঙ্গ ট্রাক, ট্যাঙ্কলরি, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয়। ধর্মঘটের প্রথম দিনে সরাসরি লোকসানে পড়েন সবজি চাষীরা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে সবজি সরবরাহের অন্যতম বাজার হলো বগুড়ার মহাস্থানহাট। কৃষকদের নিকট থেকে প্রতিদিন ৫০/৬০ ট্রাক সবজি দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যায় সবজি ব্যবসায়ীরা । পণ্যবাহী ট্রাকের ধর্মঘটের বিষয়টি সবজি চাষীরা জানতেন না। হঠাৎ করে এই ধর্মঘট মাথায় বাজ পড়ার মতো বলে জানালেন সবজির পাইকারি বাজারে ফুলকপি বিক্রি করতে আসা মোকামতলার উজ্জল হোসেন। একদিন আগে যেখানে প্রতিমণ ফুলকপি পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৭ থেকে ৮ শ’ টাকা দরে সেখানে এর দাম নেমে আসে মানভেদে ৩/৪শ’ টাকায়। বাঁধাকপির মূল্য যেখানে প্রতি এক শ’ পিসের দাম ছিল ২২শ’ টাকা সেখানে বৃহস্পতিবারের বাজারে এর দাম ১ হাজার থেকে ১২শ’টাকা। অর্থাৎ প্রতি পিসের দাম ১০/১২ টাকা কমে যায়। মুলার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা ৫শ’ টাকা মণের মুলা বিক্রি হয়েছে দেড় শ’ থেকে দু’শ’ টাকা দরে। শীতের অন্যান্য সবজির পাইকারি দামও অর্ধেকে নেমে আসে। ধর্মঘটের কারণে মালামাল ওঠা বন্ধের খবর আসার পর থেকেই মহাস্থানের পাইকারি বাজারে সবজির দাম পড়তে থাকে। সকালে হাটে সবজির স্তুপ থাকলেও ক্রেতা ছিল না। বাইরে থেকে আসা বেশিরভাগ সবজি ব্যসায়ীরা হাত গুটিয়ে বসে থাকেন। কৃষকরা অনেকের কাছে অনুনয়বিনয় করে সবজি বিক্রি করেন। চট্টগ্রাম থেকে আসা সবজি ব্যবসায়ী জানান, তিনি প্রতিদিন ২ ট্রাক সবজি কিনে পাঠান। বৃহস্পতিবার কিছুটা জুয়া খেলার মতো সবজি অর্ধেক দামে কিনেছেন, যদি তা রাতে বা পরের দিন ভোরে পাঠান না যায় তাহলে এর কোন দাম থাকবে না। পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে কৃষদের মতো তারাও ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে তিনি জানান। এদিকে উত্তরবঙ্গ ট্রাক ট্যাঙ্কলরি পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক আব্দুল মান্নান আকন্দ জানিয়েছেন, হয়রানি চাঁদাবাজি বন্ধসহ অন্যান্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। ধর্মঘটের প্রথম দিন সকালে বগুড়ার সড়ক-মহাসড়কে কিছু ট্রাক চলাচল করলেও ধর্মঘটী মালিক শ্রমিকরা তা বন্ধ করে দেন। এতে বিপুল সংখ্যক পণ্যবাহী ট্রাক রাস্তায় আটকে পড়ে। তবে কিছু সময়ের জন্য প্রতিবন্ধকতা তুলে নেয়ায় আটকেপড়া ট্রাকগুলো আবার চলে যায়। ধর্মঘট আহবানকারীরা জানিয়েছেন, প্রথমদিনে ছাড় দেয়া হলেও দ্বিতীয় দিনে আর ছাড় দেয়া হবে না।
×