ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেনারেল রাহিলের অবসরের প্রতিবাদে এক ভক্ত শ্রমিক নেতার আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২ ডিসেম্বর ২০১৬

জেনারেল রাহিলের অবসরের প্রতিবাদে এক ভক্ত শ্রমিক নেতার আত্মহত্যা

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরীফের অবসরের প্রতিবাদে গত একমাস ধরে করাচী প্রেস ক্লাবের (কেপিসি) সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী এক সাবেক শ্রমিক নেতা বুধবার বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কয়েকদিন আগে তিনি বিষপান করেছিলেন। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের। করাচী পোর্ট ট্রাস্টের (কেপিটি) প্রোগ্রেসিভ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লুতফ আমিম শিবলী (৬৪) গত ১ নবেম্বর থেকে জেনারেল রাহিলের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন। পাশাপাশি তিনি হুমকি দিয়ে আসছিলেন, যদি জেনারেল রাহিলের মেয়াদ বাড়ানো না হয় তবে তিনি (শিবলী) আত্মহত্যা করবেন। শিবিরের আশপাশে পোস্টার ও ব্যানারে লেখা ছিল, রাহিল শরীফ দেশের ত্রাতা। আমি তার ভক্ত। একমাত্র তিনিই পারেন আমাদের দেশকে সন্ত্রাসবাদ ও সামাজিক অবক্ষয় থেকে রক্ষা করতে। ডাক্তারগণ জানান, তিনি বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন। শিবলীর ভাইয়ের স্ত্রী নওরীন বলেন, গত ২৭ নবেম্বর আইএসপিআর (ইন্টার-সার্ভিস পাবলিক রিলেশান্স) জেনারেল রাহিলের অবসর পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আমরা তাকে জিন্নাহ্ হাসপাতালে ভর্তি করাই। পরে তাকে আগা খান ইউনিভার্সিটি হসপিটালে পাঠানো হয়। তাকে প্রাথমিকভাবে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। পরে তিনি মারা যান। বিষপানের আগে তিনি তার স্ত্রীকে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি তার জানাজা কেপিসির সামনে করার কথা জানান। পুলিশ সার্জন ডাঃ ইজাজ আহমেদ জানান, শিবলীর ময়নাতদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তবে দেখা যাচ্ছে, তিনি বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। শিবলীর পরিবার ভারতের ডালন্ধপ থেকে স্বাধীনতার পর পাকিস্তানে চলে আসে ও পরে শিবলী কেপিটিতে যোগদেন। তিনি তিনটি বিয়ে করেন। তার প্রথম স্ত্রী গুলজারি বেগমও পাকিস্তান স্টিল মিলস প্রোগ্রেসিভ ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন নেত্রী ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি নিহত হন। তার প্রথম স্ত্রী পাঁচটি সন্তান রেখে গেছেন। অপর স্ত্রী গিজরিতে থাকেন। তার ঘরে শিবলির দুটি সন্তান রয়েছে। নওরীন আরও বলেন, তার চার মাস বয়সী ছেলে আমার কোলে। এই পরিবারটিকে দেখাশোনা করার মতো কেউ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলেন, শিবলি মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না। তিনি পাকিস্তানের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে খুব ভাবতেন। তিনি খুব হতাশ ছিলেন এবং প্রায়ই আত্মহত্যার কথা বলতেন। সর্বশেষে তিনি তাইই করেছেন। ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের উপ-সাধারণ সম্পাদক নাসির মনসুর বলেন, শিবলী একজন বামপন্থী নেতা। সেনাবাহিনীকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় তার অনেক সহকর্মী বিভ্রান্ত হয়েছে। আমরা কোন জেনারেলকে সমর্থন জানাই না। আমি জানি না শিবলী কিভাবে রাহিল শরিফের ভক্ত হলেন। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় বৃহত্তর ভূমিকা পালন করা বামপন্থী ব্যক্তির এ ধরনের কাজ খুবই অপ্রত্যাশিত।
×