ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

নেত্রকোনার ছয় রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৮ ডিসেম্বর

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১ ডিসেম্বর ২০১৬

নেত্রকোনার ছয় রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৮ ডিসেম্বর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আব্দুর রহমানসহ ছয় রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির জন্য ৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছে ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছেন, প্রসিকিউটর মুখলেছুর রহমান বাদল ও প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী। আসামিরা হলেন- শেখ মোঃ আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মওলানা (৬৬), মোঃ আব্দুল খালেক তালুকদার (৬৭), মোঃ কবির খান (৭০), আব্দুর রহমান (৭০), আব্দুস সালাম বেগ (৬৮) ও নুরউদ্দিন ওরফে রদ্দিন (৭০)। ছয় আসামির মধ্যে ২০১৫ সালের ১২ আগস্ট গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন আব্দুর রহমান। বাকিরা পলাতক। একই সঙ্গে পলাতক পাঁচ আসামির মামলা পরিচালনার জন্য এ্যাডভোকেট গাজী তানিমকে রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিয়োগ করেছে ট্রাইব্যুনাল। এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেছিল ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আটজন নিরীহ মানুষকে অপহরণের পর হত্যা, তিনটি বাড়ির মালামাল লুট, আটটি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগ। ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত মোট এক বছর এক মাস ৫ দিনে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবির। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুর একটায় রাজাকার বাহিনী নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংশ নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগে মামলা হয় ২০১৩ সালে। শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আঃ কাদির বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বাদী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির মামলায় অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত তার বড় ভাই আব্দুল হেকিম ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছিলেন। রাজাকাররা এ খবর জানতে পেরে তাদের বাড়িতে গিয়ে তার বড় ভাই আব্দুল খালেককে পিঠমোড়া করে বেঁধে মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের খোঁজ খবর জানতে চায়। ভাইদের কোন খোঁজ না দেয়ায় তখন রাজাকার বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ঘরে লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভাই খালেককে ধরে নিয়ে গিয়ে জারিয়া রাজাকার ক্যাম্পে দুই দিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরদিন ২১ আগস্ট তাকে জারিয়া কংশ নদীর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেয় রাজাকাররা।
×