ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

রবীন্দ্র সরোবরে গানে গানে নবান্ন উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১ ডিসেম্বর ২০১৬

রবীন্দ্র সরোবরে গানে গানে নবান্ন উৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হেমন্তের পড়ন্ত বিকেল। ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরের উন্মুক্ত মঞ্চের সামনে উপস্থিত দর্শক শ্রোতার ভিড়। পাঁচিল ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন রকম পিঠা, পায়েসসহ ঐতিহ্যবাহী লোকজ খাবারের দোকান। একদিকে রয়েছে লোকজ আনন্দের সঙ্গে মিশে থাকা নাগরদোলা। কেউ বাহারি পিঠা-পায়েস খাওয়ায় মত্ত, আবার অনেকে নাগরদোলার ঘূর্ণিপাক খাওয়ায় ব্যস্ত। মঞ্চ থেকে ভেসে আসছে লোকগানের মনকাড়া সুর। সব মিলিয়ে পুরো পরিবেশটায় বিরাজ করছে উৎসবের পূর্ণ আমেজ। নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। নাগরিক জীবনে এ উৎসবের শুভছায়া ছড়িয়ে দিতে ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরের উন্মুক্ত মঞ্চে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ‘প্রাণ চিনিগুঁড়া চাল নবান্ন উৎসব ২০১৬’। এর আগে সকালে তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন বঙ্গ মিলারস লিমিটেডের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহান শাহ আজাদ, ক্যাটাগরি ম্যানেজার মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান ও শোবিজ এন্টারটেইনমেন্টের নির্বাহী পরিচালক মেহেদি হাসান প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন খুদে গানরাজের শিল্পী লামিয়া ও অনন্যা, ক্লোজআপ ওয়ানের শিল্পী প্লাবন, নোবেলসহ আরও অনেকে। বিকেলে রশীদ নিউটনের সঞ্চালনায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ পর্বের শুরুতে ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িত গেলাম দেখা পাইলাম না’ গানটি পরিবেশন করেন শিল্পী মাধবী রানী। শিল্পীর পরের পরিবেশনায় ছিল লোকগান ‘ভায়াল কইরা বাজানগো দোতরা সুন্দরী কমলা নাচে’। এর পরের শিল্পী ছিলেন এস এম মেজবাহ্। তিনি পর পর দুটি দেশের গান পরিবেশন করেন। মঞ্চে ওঠেন সাংস্কৃতিক সংগঠন পঞ্চভাস্করের শিল্পীরা। ‘নাও বাইওনা’, ‘যে আমায় ছাড়ে ছাড়ুক’সহ বেশ কয়েকটি সঙ্গীত পরিবেশন করেন তারা। পরে শিল্পী সফিউল আলম রাজার কণ্ঠে ‘মনটায় মোর পিঠা খাবার চায়’ ভাওয়াইয়ায় উৎসবের ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। তার পরের পরিবেশনায় ছিল আর একটি ভাওয়াইয়া গান ‘জামাই আইসাছে শ্বশুরবাড়ি’। শিল্পী আবু বকর সিদ্দিকের পরিবেশনার পর মঞ্চে ওঠেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কুদ্দুস বয়াতী। তিনি একে একে পরিবেশন করেন ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘কি সুন্দর এক গানের পাখি’, ‘ও আমার পাগলা ঘোড়া রে’সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় লোক গান। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের আয়োজন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলবে প্রভাতী পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকেল ৩টায় শুরু হবে উৎসবের বৈকালিক পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আগামীকালও প্রভাতী ও বৈকালিক সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে শেষ হবে ৩ দিনব্যাপী এই উৎসব। আজ ও আগামীকাল, দুদিনই থাকছে বিশিষ্ট শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এছাড়া সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খোলা থাকছে পিঠাপুলির স্টলগুলো। তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনে আরও রয়েছে পুতুল নাচ, পুুঁথি পাঠ, বায়োস্কোপ, গাজীর কিসসা, পালকি, লাঠি খেলা, সাপ খেলা, বানর নাচসহ আরও লোকজ পরিবেশনা। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭ এর প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত ॥ সংস্কৃতি চর্চায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বকে বইমেলার মাধ্যমে এ বার্তা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৭ এর তৃতীয় প্রস্তুতি সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, বইমেলা প্রাণের মেলা। সাহিত্যপ্রেমী মানুষের মিলনকেন্দ্র। বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সংস্কৃতির দিক থেকেও এগিয়ে যাচ্ছে বইমেলার মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে এ বার্তা দিতে হবে। বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা, মানবিকতার চর্চা সমানতালে বিকশিত হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, এটি পৃথিবীর দীর্ঘতম বইমেলা। অনেক বড় আয়োজন। এতে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে। সেটি মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হবে। সভায় একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান খান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আকতার-ই-মমতাজ, বাংলা একাডেমির সচিব আনোয়ার হোসেন, মেলা কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। শামসুজ্জামান খান বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবারের বইমেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বছরের আয়োজন বড় পরিসরে হবে। আট বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতিনিধি নিয়ে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের বইমেলায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নতুন একটি বই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি। আনোয়ার হোসেন বলেন, বইমেলার প্রস্তুতি শেষের দিকে। এক সপ্তাহের মধ্যে মাঠের বরাদ্দ দেয়া হবে। সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস সংক্রান্ত সব কাজ শেষ পর্যায়ে। মেলার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন মেলা কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ। তিনি বলেন, বইমেলায় অধিকাংশ স্টল সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব পাশ থেকে কমিয়ে রাস্তা সংলগ্ন পশ্চিম পাশে দেয়া হবে। এতে দর্শনার্থী ও প্রকাশকদের জন্য সুবিধা হবে। এবারের বইমেলায় স্টল থাকবে পাঁচশ’ ৬৩টি। চত্বর থাকবে ১২টি। প্রবেশ পথ থাকবে তিনটি (টিএসসি, মূল গেট, তিন নেতার মাজার)। বাহির পথ থাকবে তিনটি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় এবার স্টলগুলোতে টিনের ছাউনি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অনুষ্ঠানে গ্রন্থমেলার কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা, বিভিন্ন সরকারী দফতরের কার্যক্রম, প্রাঙ্গণ বিন্যাস ও সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়। শিল্পী অণিমা রায়ের ‘মাতৃভূমি’ এ্যালবামের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত ॥ রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী অণিমা রায়ের ‘মাতৃভূমি’ এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন হয় বুধবার সকালে চ্যানেল আইয়ের ‘গানে গানে সকাল শুরু’ অনুষ্ঠানে। এতে উপস্থিত ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী, কবি মহলনাবশি, শিল্পী সাদী মহম্মদ ও লিলি ইসলাম। এ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
×