ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ;###;নুরউদ্দিন আহসান

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ ভাল স্কুল আদর্শ শিক্ষক

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ১ ডিসেম্বর ২০১৬

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ ভাল স্কুল আদর্শ শিক্ষক

কোন কাজ করার পেছনে চাই উপযুক্ত পরিবেশ। সেটা শিক্ষার ক্ষেত্রে হোক আর গানের ক্ষেত্রে হোক কিংবা নাচের ক্ষেত্রে হোক। উপযুক্ত পরিবেশের ওপর নির্ভর করে বিষয়টা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে। যেখানে যত সুন্দর পরিবেশ সেখানে সেই বিষয়ের সফলতা তত বেশি। শিক্ষার ক্ষেত্রে এই বিষয়টা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভাল শিক্ষার পেছনে অবশ্যই ভাল পরিবেশ চাই। আর এই শিক্ষার জন্য উত্তম পরিবেশ হলো স্কুল। যেখানে শুধু একাডেমিক শিক্ষা ব্যবস্থাই থাকবে না। থাকবে বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করে বাঁচার জন্য সব উপকরণ। যার মাধ্যমে বিশ্বকে জানবে, চিনবে এবং সব বাধাকে উপেক্ষা করে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হবে। কিন্তু বতর্মান সময়ে স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থা একাডেমিক শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্লাস। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টিভিতে কার্টুন দেখা। আর সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত বর্তমান সময়ের আলোচিত বিষয় কোচিংয়ে যাওয়া। যাকে অনেকেই শিক্ষার মূলমন্ত্র হিসেবে মনে করে। শুধু তাই নয়, অনেকে আবার স্কুলের চেয়ে কোচিংকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে কিন্তু স্কুলে ভাল ক্লাস হলে এই কোচিং ব্যবস্থা খুবই অপ্রয়োজনীয়। আর এসব ক্লাস, কোচিংয়ের মধ্যেই আটকে আছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। বর্তমান সময়ে এসবের কারণে আনন্দ করার সময়টা ওদের থেকে চির বিদায় নিয়েছে। শিশুর শিক্ষার মাঝে যদি আনন্দ না থাকে তাহলে সেটা প্রকৃত শিক্ষা নয়। রবীন্দ্রনাথ বলে গেছেন ‘যে শিক্ষায় আনন্দ নেই সেই শিক্ষা প্রকৃত শিক্ষা হতে পারে না’। কিন্তু আজ শিশুদের আনন্দ দানের মাধ্যমে শিক্ষা দেয়ার কথা ভুলেই গেছি। সারা দিন ক্লাস সন্ধ্যার পর কোচিং রাতে টিউটোরিয়াল লেখা আবার ক্লাসের পড়া মুখস্থ করা ইত্যাদি করেই শেষ হয় একজন শিক্ষার্থীর নিত্য দিনের কাজ। অথচ খেলাধুলা করা বিনোদন করা লেখাপড়ারই যে অংশ সেটা আমরা ভুলতে বসেছি। বতর্মান সময়ে গ্রামের শিক্ষার্থীরা কিছুটা খেলার সুযোগ পেলেও শহরের শিক্ষার্থীরা তা থেকে একেবারেই বঞ্চিত। কারণ অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ নেই। নেই কোন বিনোদনের ব্যবস্থা। পড়ায় সারা দিন ডুবে থাকতে হয় ওদের। যা মানসিক শক্তি বিকাশে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। আমাদের ভবিষ্যত কা-ারীদের। আর এই শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত শিক্ষা দানের মহান দায়িত্ব পালন করেন যাকে সমাজে আমরা মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে চিনি তারা হলেন শিক্ষক। যারা জাতির পথ প্রদর্শক। অন্ধকার থেকে আলোর পথের দিশারী। তার কাছে শিক্ষার্থী শিখে কোন্টা ন্যায় কোন্টা অন্যায়। মহান শিক্ষকবৃন্দ অর্থের লোভে ক্লাসে যে বিষয়টা খুব সহজেই বোঝানো যায় সেটাকে তিনি খুব কঠিনভাবে উপস্থাপনা করেন যা শিক্ষার্থীদের বুঝতে খুব কষ্ট হয় যার ফলে অপারগ হয়ে পরে তার কাছে গিয়ে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য হয়। অথবা শিক্ষকের পছন্দের কোচিংয়ে ভর্তি হয়। যা শুধু একজন শিক্ষক হিসেবে নয় বরং মানুষ হিসেবেও বিবেক বর্জিত কাজ। আর এই গর্হিত কাজ থেকে যদি তারা বের হয়ে না আসতে পারে তাহলে জাতির ভবিষ্যত অন্ধকার। তাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এখনই তাদের এ রকম স্বার্থলোভী মনমানসিকতা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। ফুলপুর, ময়মনসিংহ থেকে
×