ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইতোমধ্যেই জাহাজ চলাচল শুরু- দৈনিক যাতায়াত দুই লক্ষাধিক লোকের

অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনে তিন হাজার ২শ’ কোটি টাকার প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৩০ নভেম্বর ২০১৬

অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনে তিন হাজার ২শ’ কোটি টাকার প্রকল্প

তপন বিশ্বাস ॥ তিন হাজার দুই শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন (চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ ও সংযুক্ত নৌপথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ)’ প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ প্রথার এই রুটে প্রায় ৮০ শতাংশ নৌযান এবং দিনে দুই লক্ষাধিক লোক চলাচল করে। এ ব্যাপারে নৌপরিবহন সচিব অশোক মাধব রায় জনকণ্ঠকে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আমলে এই নৌপথের চুক্তি হয়। দীর্ঘদিন পর বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা সরকারের আমলে এই নৌপথ চালু হলো। তিনি বলেন, এই রুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় নদীর খনন কাজ চলবে। খনন কাজ সম্পন্ন হলে আরও বেশি জাহাজ এই রুটে চলাচল করতে পারবে। নৌপরিবহন সচিব বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় আগামী আট বছর খনন কাজ চলবে এবং তা রক্ষণাবেক্ষণও করা হবে। সারাবছর এই নদীর নাব্য ঠিক রাখা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ নৌপথের নাব্য রক্ষার্থে পারফর্মেন্স বেইজড ক্যাপিটাল ড্রেজিং ও রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং করা; তিনটি ফেরি ক্রসিং (চাঁদপুর-শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর-ভোলা এবং ভেদুরিয়া-লাহারহাট) এলাকা ড্রেজিং করা; ড্রেজিং কাজে সুপারভিশন ও পারফর্মেন্স তদারকি এবং টার্মিনালসহ অন্যান্য স্থাপনার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা; ডিটেইল্ড ডিজাইন ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পাদনের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শক সেবা প্রদান; নৌযানের জন্য ছয়টি ঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। সেগুলো হলো- সাতনল (চাঁদপুর), আমিরাবাদ (চাঁদপুর), চাঁদপুর, মেহেন্দিগঞ্জ (বরিশাল), সন্দ্বীপ, নলছিড়া (নোয়াখালী)। এছাড়া ঢাকার শ্মশানঘাট এলাকায় একটি যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণ, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর ও বরিশালে তিনটি যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণ এবং আশুগঞ্জে একটি কার্গো টার্মিনাল নির্মণ করা হবে। ভৈরববাজার, আলুবাজার (শীরয়তপুর), হরিণা (চাঁদপুর), হিজলা (বরিশাল), ইলিশা (ভোলা, মজু চৌধুরী (লক্ষ্মীপুর), লাহারহাট (বরিশাল), বেদুরিয়া (বরিশাল), দৌলত খাঁ (ভোলা, তজুমুদ্দিন (ভোলা), মনপুরা, চেয়ারম্যান ঘাট (ভোলা), সন্দ্বীপ আরসিসি জেটি, বদ্দারহাট ও তমুরুদ্দিন (নোয়াখালী) ১৪টি ল্যান্ডিং স্টেশন-লঞ্চঘাট উন্নয়ন করা হবে। পাশাপাশি রয়েছে দুটি পরিদর্শন জাহাজ, তিনটি মালটি-বিম ইকো-সাউন্ডার এবং সার্ভে যন্ত্রপাতি ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম সংগ্রহ; দুটি জিপ, দুটি ডবল কেবিন পিকআপ, দুটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোটরসাইকেল সংগ্রহ কার্যক্রম। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌপথ পারফর্মেন্স বেইজড ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যেমে খনন এ প্রকল্পের প্রধান কাজ। প্রকল্প ২০১৬ সালের জুলাই থেকে শুরু হয়েছে। চলবে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। বিশ্বব্যাংক প্রকল্পটির জন্য হাইড্রোগ্রাফিক ও ড্রেজিং সংক্রান্ত সমীক্ষা পরিচালনা করে। এই নৌপথটি খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণের লক্ষ্যে ৩ হাজার ২শ’ কোটি (জিওবি ৩২০+ বিশ্বব্যাংকের ঋণ ২৮৮০) টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এবং ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়ন লক্ষ্যে অর্থায়নে সম্মত হয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রধান অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল রুট চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ ও সংযুক্ত নৌপথ খননের মাধ্যমে সারাবছর নাব্য রক্ষা এবং যাত্রী, কার্গো টার্মিনাল ও ল্যান্ডিং স্টেশন-লঞ্চঘাট নির্মাণের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরাপদ যাত্রীবাহী-পণ্যবাহী অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সার্ভিস বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। বিশ্বব্যাংকের এই ঋণে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করতে হবে। ছয় বছর ‘গ্রেস পিরিয়ড’সহ ৩৮ বছরে পরিশোধযোগ্য।
×