ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্যাতনে রূপ গেল সঙ্গে সংসারও

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৩০ নভেম্বর ২০১৬

নির্যাতনে রূপ গেল সঙ্গে সংসারও

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ অভাবী পরিবারের সুন্দরী আঁখিনূর বেগমের বিয়ে হয়েছিল বালিকা বয়সে। শ্বশুর-ভাশুরের নির্যাতনে সৌন্দর্য হারানোর সঙ্গে সঙ্গে সংসারও হারিয়েছে সে। এখন দুই বছরের ছেলে সন্তান নিয়ে আশ্রয় আর আইনী সহায়তার জন্য ঘুরছে পথে পথে। আঁখিনূর বেগমের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কল্যাণকলস গ্রামে। বাবা নূর মোহাম্মদ হাওলাদার মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। আঁখিনূর ছিল অনিন্দ্য সুন্দরী। সৌন্দর্য দেখে চার বছর আগে মাত্র ১৬ বছর বয়সে সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের আখৈবাড়িয়া গ্রামের আলতাফ সিকদারের ছেলে শাহিন সিকদার তাকে বিয়ে করে। শাহিন সিকদার ঢাকায় ব্যবসা করে। শাহিন-আঁখিনূর দম্পতি ঢাকায় ভালই ছিল। এ দম্পতির দুই বছরের ছেলে রয়েছে। চার মাস আগে আঁখিনূর কোলের ছেলে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আসে। একদিন ভাত রান্না করতে দেরি করায় পাষ- শ্বশুর আলতাফ সিকদার আঁখিনূর বেগমকে উত্তেজিত হয়ে প্রচ- গালাগাল করেন। এক পর্যায়ে চুলার আগুনের মধ্যে মুখ চেপে ধরেন। ভাশুর ফারুক সিকদার এবং জা রীনা বেগমও আঁখিনূর কে ওই অবস্থায় মারধর করেন। চুলার গনগনে আগুনে আঁখিনূর বেগমের মুখ বীভৎস হয়ে যায়। এ অবস্থায় স্বামী শাহিন সিকদার আঁখিনূর বেগমকে কোলের বাচ্চাসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। সোমবার বিকেলে কোলের সন্তানসহ আঁখিনূর বেগম কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল চৌধুরীর কাছে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বিচার প্রার্থনা করে জানায়, কয়েকদিন ধরে তার দিন কাটছে উপোসে। বাবার বাড়িতে বাস করারও সুযোগ নেই। বিধবা অভাবী মায়েরই দিন কাটে না খেয়ে। দুলাল চৌধুরী জানান, ঘটনাটি নারী নির্যাতন সম্পর্কিত হওয়ায় তিনি আঁখিনূর বেগমকে আদালত কিংবা থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন। সে সঙ্গে শিশুটির ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য কিছু অর্থ দিয়েছেন। আঁখিনূর বেগমের মামলা চালানোর মতো আর্থিক সঙ্গতি নেই। তাই এখন একটু আশ্রয় আর আইনী সহায়তার জন্য আঁখিনূর বেগম মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
×