ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্রের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিই নিয়োগ লাভের কারণ

পাকিস্তানে নয়া সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ৩০ নভেম্বর ২০১৬

পাকিস্তানে নয়া সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ

পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান মঙ্গলবার তার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া এমন সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হলেন যখন কাশ্মীর নিয়ে চিরবৈরী ভারতের সঙ্গে ইসলামাবাদের উত্তেজনা তুঙ্গে রয়েছে এবং আফগানিস্তানের সঙ্গেও সৃষ্টি হয়েছে তিক্ততা। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া গ্যারিসন শহর রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরীফের স্থলাভিষিক্ত হন। জেনারেল রাহিল শরীফ সেনাপ্রধান হিসেবে তিনবার দায়িত্ব পালন করার পর মঙ্গলবার থেকে অবসরে যান। জেনারেল শরীফের আমলে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আল কায়েদা, তালেবান ও স্থানীয় জঙ্গীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। আফগানিস্তানের কাছে এবং পাকিস্তানের অন্যত্র জঙ্গীদের বিরুদ্ধে এসব অভিযান পরিচালিত হয়। বালুচ রেজিমেন্টের অন্তর্গত পদাতিক বাহিনীর কর্মকর্তা জেনারেল বাজওয়াসহ পাঁচ জেনারেলের নামের তালিকা প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের কাছে পাঠানো হয়। নওয়াজ শরীফ তার কাছে পাঠানো তালিকা থেকে জ্যেষ্ঠতার দিক দিয়ে চতুর্থ স্থানে থাকা জেনারেলকে সেনাপ্রধান হিসেবে বাছাই করেন। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ অনুযায়ী তার কাছে পাঠানো পাঁচজন সেনা কর্মকর্তার মধ্য থেকে যে কাউকে সেনাপ্রধান নিযুক্ত করতে পারেন। নওয়াজ জেনারেল বাজওয়াকে সেনাপ্রধান নিয়োগের আগে তার সম্পর্কে খুব কমই আলোচনা হতো। সেনাপ্রধান নিযুক্ত হওয়ার আগে জেনারেল বাজওয়া সেনা সদর দফতরে প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের মহাপরিদর্শক ছিলেন। সেনাপ্রধান হওয়ার আগে জেনারেল রাহিল শরীফও এই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদপত্র দি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণতন্ত্রের পক্ষে স্বচ্ছ অবস্থান থাকার সতর্ক মূল্যায়নে জেনারেল বাজওয়াকে সেনাপ্রধান পদে বেছে নেয়া হয়েছে। নওয়াজ শরিফ চাইছিলেন, সামরিক ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও গণতন্ত্রপন্থী কাউকে এ পদে বসাতে, যা জেনারেল বাজওয়ার বেলায় মিল পেয়েছেন তিনি। ডনের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকারের প্রতি জেনারেল বাজওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি তুলনামূলকভাবে উন্নত। এছাড়া সবচেয়ে বড় কোরের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাও একটি বিষয়। সব মিলে অন্যদের চেয়ে বাজওয়াই এগিয়ে ছিলেন। নিয়ন্ত্রণ রেখায় নিয়োজিত কোর-১০ এর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এছাড়া জঙ্গীপ্রবণ উত্তরাঞ্চলেও সফল অভিযানের নজির রয়েছে, বেলুচিস্তানের পরিস্থিতিও তার জানা। এত কিছুর পরও যে বিষয়টি জেনারেল বাজওয়াকে সেনাপ্রধানের আসনে বসিয়েছে, তা হলো- গণতন্ত্রের প্রতি তার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। ২০১৪ সালে করাচিতে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের অবস্থান কর্মসূচির সময় বাজওয়া ওই অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। রাজনৈতিক কর্মসূচীতে তিনি সেনাশক্তি প্রয়োগের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিলেন। নওয়াজ শরিফ নিশ্চয়ই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন। জেনারেল বাজওয়ার এই গণতন্ত্রপন্থী অবস্থানই তাকে সেনাপ্রধানের পদে বসতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে।-ওয়াশিংটন টাইমস ও ডন
×