ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মেয়র হানিফের স্মরণসভা

দলবাজি বন্ধের আহ্বান ও. কাদেরের

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৯ নভেম্বর ২০১৬

দলবাজি বন্ধের আহ্বান ও. কাদেরের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দলের মাঝে দলবাজি বন্ধ করা ও বিশেষ নেতাদের নয়, জনগণকে খুশি করার জন্য আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মরহুম মোহাম্মদ হানিফ বঙ্গবন্ধুর ট্রু ফলোয়ার ছিলেন বলেই আজও লাখো মানুষের মনের রাজা। তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তার মতো নেতা হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সোমবার রাজধানীর গুলিস্তানের নগর ভবনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, ঢাকা মহানগর (উত্তর) আওয়ামী লীগের সভাপতি সাদেক খান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী খান মোহাম্মদ বিলাল বক্তব্য রাখেন। দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলাকারীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ ক্ষমতায় আছেন, কাল নাও থাকতে পারেন। দলের এমন কেউ কেউ আছেন যারা ক্ষমতার দাপটে মাটিতে পা ফেলতে চান না, এদের পরিণতি কোনদিনই ভাল হয়নি। মনে রাখবেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবেন না। মেয়র মোহাম্মদ হানিফের অতীত স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার প্রশাসনের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জনতার মঞ্চের নায়ক মোহাম্মদ হানিফ। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর হানিফ। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় ও সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে করার সময় আমরা তাকে দেখেছি। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ট্রু ফলোয়ার। আওয়ামী লীগের দুঃসময়েও তিনি দলের নেতৃত্বের প্রতি অবিচল ছিলেন। দলের জন্য তাকে মঞ্চে বক্তব্য দিতে দিতেই ঢলে পড়তেও দেখেছি। দলের জন্য তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন। ঠিক তেমনি আমৃত্যু প্রধানমন্ত্রীর জন্য দেহে স্পিøন্টার বয়ে বেড়িয়েছেন। আমরা তাকে দেখেছি খালেদা জিয়ার প্রথমবারের ক্ষমতায় থাকার সময় জনগণের মন জয় করে বিপুল ভোটে প্রথমবারের মতো ঢাকার নির্বাচিত মেয়র হয়েছেন। তিনি কখনও ভাইয়ের দল করতেন না। তিনি জনগণের চোখের ভাষা বুঝতেন বলেই আজও তিনি মরেও অমর। তাই তো মোহাম্মদ হানিফকে মৃত্যুর এত বছর পরেও লাখ লাখ লোক তাকে মনে রাখে। তাই তিনি মরেও আজও হৃদয়ের রাজা। অনুষ্ঠানে তার আগের বক্তাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এতক্ষণ বক্তারা কী বলে গেছেন তার কিছুই আমি বুঝিনি। ফ্রি স্টাইলে বক্তব্য দেবেন না। আমি লক্ষ্য করলাম বক্তারা তার সহকর্মীদের কী বলে খুশি করবেন তা নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন। স্মরণসভায় তোষণের বক্তব্য বা রাজনীতির সভায় স্মরণসভার বক্তব্য দেবেন না। নেতাদের খুশি করতে সম্বোধন বন্ধ করুন। ঢাকার নির্বাচিত দুই মেয়র আনিসুল হক ও সাঈদ খোকনের উন্নয়ন কাজে কোন ব্যক্তি বা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধা না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, মেয়রদের ভাল কাজে বাধা দেবেন না। তিনি মেয়রদের সকল কাজে সাহায্য করার জন্য আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আমার প্রয়াত পিতা ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের কথা মনে পড়লেই আমার মনটা খারাপ হয়ে যায়। পুত্র হিসেবে আমি শূন্যতা অনুভব করি। ২০০১ সালে আমাকে খালেদা জিয়ার লোকজন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্যায় করে পাস করতে দেয়নি। এজন্য আমার বাবা খালেদা জিয়ার অন্যায়ের কারণে কষ্টে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কেঁদেছিলেন। কিন্তু আজ আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে বাবার মতোই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র হয়েছি। জানামতে আমিই মন্ত্রী পদমর্যাদার সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্য। তবে আমি যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আমার বিভিন্ন কাজে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে দেখতে পাই তখনই আমার কষ্ট অনেকটা কমে যায়। এছাড়া পিতার স্মৃতিধন্য ও তার এই নগর ভবন আর ফটকের ভেতরে প্রবেশ করার পর জনগণের জন্য কাজ শুরু করামাত্রই বাবার কথা কিছুটা হলেও ভুলে যাই।
×