ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভেজাল ওষুধ খেয়ে মৃত্যুর মামলায় রিড ফার্মার এমডিসহ ৫ জন খালাস

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৯ নভেম্বর ২০১৬

ভেজাল ওষুধ খেয়ে মৃত্যুর মামলায় রিড ফার্মার এমডিসহ ৫ জন খালাস

কোর্ট রিপোর্টার ॥ ভেজাল ওষুধ পানে শিশুমৃত্যুর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ভুলের সুযোগে বেকসুর খালাস পেয়েছেন রিড ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমানসহ ৫ জন। ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ ও ড্রাগ আদালতের বিচারক এম আতোয়ার রহমান সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন। খালাসপ্রাপ্ত অপর ৪ আসামি হলেন, মিজানুর রহমানের স্ত্রী ওই কোম্পানির পরিচালক বেগম শিউলি আক্তার, পরিচালক মোঃ আব্দুল গণি, ফার্মাসিস্ট মাহবুবুল ইসলাম ও এনামুল হক। তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম। রায় ঘোষণার সময় মিজান ও তার স্ত্রী আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর ৩ আসামি পলাতক রয়েছেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক তদন্তের ভুল সম্পর্কে উল্লেখ করে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা সঠিক নিয়ম মেনে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করেননি এবং পরীক্ষার প্রতিবেদনও জমা দেননি। এছাড়া মামলা দায়েরের সময় যেসব পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল, তা না নেয়ায় তার অযোগ্যতা ও অদক্ষতাও আদালতে প্রমাণিত। ওই সকল কারণে আসামিরা খালাস পেয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, রিড ফার্মার ক্ষতিকারক টেমসেট সিরাপ (প্যারাসিটামল) এবং নিডাপ্লেক্স সিরাপ (ভিটামিন বি কমপ্লেক্স) পানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ওই সময় ২৫ শিশু মারা যায়। মামলার বিচারকালে আদালতে বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক এ আর খান, একই হাসপাতালের উপপরিচালক এইচএসকে আলম, ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন, একই অধিদফতরের ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবের সহকারী বিশ্লেষক মোঃ আবুবকর সিদ্দিক সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট ওষুধ প্রশাসন পরিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম এ মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। মিজানুর রহমান ওই বছরের ১২ অক্টোবর আত্মসমর্পণ করলে ঢাকার তৎকালীন জজ এ এনএম বশিরউল্লাহ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে শিউলি হাইকোর্টে জামিন পান। অন্য তিন আসামি পলাতক থাকেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, রিড ফার্মার টেমসেট সিরাপ (প্যারাসিটামল) এবং নিডাপ্লেক্স সিরাপ (ভিটামিন বি কমপ্লেক্স) পানে কিডনি অকেজো হয়ে শিশু মারা গেছে মর্মে ২০০৯ সালের ২১ জুলাই কয়েকটি পত্রিকায় প্রতবেদন প্রকাশিত হয়। এর পর ওষুধ প্রশাসন পরিদফতর জনস্বার্থে ওই ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। শিশু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এমআর খান এবং ডাঃ এইচএসকে আলম ওই দুটি সিরাপের নমুনা সংগ্রহ করে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি মহাখালি থেকে পরীক্ষা করান। ২৯ জুলাই ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি পরীক্ষার রিপোর্টে বলেন, এগুলোতে ক্ষতিকর ডাই ইথাইল গ্লাইকল মেশানো হয়েছে, যা মূলত প্লাস্টিক বা চামড়ার রঙের থিনার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, যা মানুষের দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
×