ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যাস্ট্রোর মৃত্যুর পর কিউবা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা

কিউবার ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৩:২২, ২৯ নভেম্বর ২০১৬

কিউবার ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

ফিদেল ক্যাস্ট্রোর মৃত্যুর পর কিউবা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কোন দিকে গড়াবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিউবার বিরুদ্ধে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিউবার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করাসহ দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে তা নিয়ে এখনই দেখা দিয়েছে আশঙ্কা। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। ক্যাস্ট্রো চলে গেছেন কিন্তু কিউবার ওপর তার প্রভাব থেকে যাবে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত। লৌহ কঠিন হাতে তিনি দেশটি পাঁচ দশক শাসন করেন। গত এক দশক যদিও তার ভাই রাউল ক্যাস্ট্রোর হাতেই শাসনভার ন্যস্ত কিন্তু নেপথ্যে ফিদেলের ছায়া ফেলে রয়েছে পুরো দেশের ওপর। ফিদেল শুক্রবার ৯০ বছর বয়সে মারা গেছেন। স্কুলের পাঠ্যবই থেকে শুরু সমাজ জীবন পর্যন্ত সর্বত্র ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব রয়ে গেছে। তবে গত ১০ বছরে দেশটির সঙ্গে বহির্বিশ্বের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। ওবামার সময় থেকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে হাভানার সম্পর্কে বরফ গলতে শুরু করে। ১৯২৮ সালের পর ওবামা প্রথম ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ বছর মার্চে কিউবা সফর করেন। ৫৪ বছর পর ওবামার সময়ই কিউবায় মার্কিন দূতাবাস খোলা হয়। কিন্তু তার উত্তরসূরি ট্রাম্প কোন পথে হাঁটবেন তা নিশ্চিত না হওয়া গেলেও তিনি যে ওবামার নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। ক্যাস্ট্রোর মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় তিনি যেভাবে টুইটারে তীর্যক মন্তব্য করে জানিয়ে দিয়েছেন যে হাভানার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে তার কোন আগ্রহ নেই। রিপাবলিকান অনেক কংগ্রেস সদস্যও ক্যাস্ট্রোর মৃত্যুতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের চীফ অব স্টাফ রেইন্স প্রিবাস রবিবার ফক্স নিউজকে বলেছেন, প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারগুলো না করলে যুক্তরাষ্ট্র কিউবায় দূতাবাস বন্ধ করে দিতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কিউবা সরকারীভাবে কিছু পরিবর্তন না আনলে আমরা একতরফা দেশটির সঙ্গে সম্পর্কে উন্নয়ন ঘটাতে পারি না। এর মধ্যে রয়েছে মানবাধিকার, মুক্তবাজার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, রাজবন্দীর মুক্তির মতো বিষয়গুলো। পারস্পরিক সম্পর্কে উন্নয়ন ঘটানোর জন্য হাভানাকে এসব ক্ষেত্রে উন্নতি করতে হবে।’ পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কিউবার বিষয়ে কি নীতি গ্রহণ করতে পারেন প্রিবাসের এই বক্তব্য একটি ধারণা পাওয়া যায়। কংগ্রেসের অনেক রিপাবলিকান সদস্যই মনে করেন কিউবায় সরকার পরিবর্তন না ঘটা পর্যন্ত দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে যাওয়া ঠিক নয়। ফ্লোরিডা থেকে নির্বাচিত সিনেটর মার্কো রুবিও এনবিসি টেলিভিশনকে বলেছেন, ‘কিউবার আমরা আমাদের আকাক্সিক্ষত পরিবর্তনগুলো দেখতে চাই।’ তিনি এর মধ্য দিয়ে ওবামার কিউবা নীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে ওবামা কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পদক্ষেপগুলো নেন কিন্তু এখন সেখান থেকে সরে আসলে ট্রাম্প ব্যবসায়ী কম্যুনিটির বাধার মুখে পড়তে পারেন। কিউবার অর্থনীতি ফের চাপের মধ্যে পড়লে সেদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখে আবারও শরণার্থীর ঢল নামতে পারে।
×