ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

টুটুল মাহফুজ

বাঙালী নারীর বাহারি চুড়ি

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

বাঙালী নারীর বাহারি চুড়ি

বাঙালী নারীর উৎসব মানেই শাড়ি আর চুড়ি। দুই হাত ভর্তি রেশমি চুড়ি না হলে যেন অপূর্ণই থেকে যায় নারীর সাজ। তবে এখন আর নারীর চুড়ি-শাড়ি পরতে উৎসব লাগে না। যেন প্রতিদিনই উৎসবের। সালোয়ার-কামিজ, লেগিংস-কুর্তা, ফতুয়া কিংবা জিন্স সব পোশাকের সঙ্গেই চমৎকার মানিয়ে যাবে রিনিঝিনি কাঁচের চুড়ি। কাঁচের চুড়ি সাজের এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ। কাঁচের চুড়ি একদিকে যেমন বলে ঐতিহ্যের কথা, অন্যদিকে হালফ্যাশনেও যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। শুধু লাল-সাদা কিংবা কমলা নয়, সবুজ, হলুদ, নীল, আসমানিসহ নানা রঙের চুড়িতে সেজে উঠতে পারেন। মনের মতো চুড়ি খুঁজতে চলে আসতে পারেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। চারুকলার সামনে থেকে টিএসসি মোড়, কলা ভবন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, দোয়েল চত্বরে প্রতি সন্ধ্যায় বসে বাহারি চুড়ির বাজার। ফুটপাথে হাঁটতে হাঁটতেই আপনি পেয়ে যাবেন মনের মতো রঙের কাচের চুড়ি। চারুকলার সামনে হয়তো দেখা মিলে যাবে ৩০ বছর ধরে চুড়ি বিক্রি করেন যিনি, সেই হাস্যোজ্জ্বল জিয়ারুন বেগমের। শখের চুড়ি বিক্রি আজ তার পেশা। এ কাঁচের চুড়ি নিয়ে কত না স্মৃতি জমে আছে তার লাল-নীল চুড়িতে, কে জানে! কাচের চুড়ি পাবেন ইডেন কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সামনেও। এ ছাড়া নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চকেও পাবেন কাঁচের চুড়ি। এখনকার চুড়িগুলোয় যেমন লেগেছে রঙের ছোঁয়া, তেমনি নকশায়ও এসেছে বৈচিত্র্য। কচি কলাপাতা রং, আসমানি, নীল, গাঢ় নীল, জাম রং, শর্ষে হলুদ, পেঁয়াজ রং, কাঁচা হলুদ রঙা চুড়িগুলোর মধ্যে কোনটি খাঁজ কাটা, কোনটি সমতল, কোনটি আবার ষড়ভূজ আকৃতির। চুড়ির ওপর সোনালি ও রুপালি জরি আর ছোট পাথরের ব্যবহারও দেখতে পাবেন। শুধু এক রঙাই নয়, দু-তিন রঙের মিশেলেও চুড়ির দেখা মিলবে। শাড়ির সঙ্গে দুই হাত ভর্তি চুড়িতে আপনাকে মানাবে বেশ। যারা কর্মক্ষেত্রে যাবেন, তারাও পরতে পারেন। তবে তাদের এক হাতে চুড়ি আর অন্য হাতে ঘড়িতে ভাল দেখাবে। এর সঙ্গে পরতে পারেন ছোট পাথরের টিপ। আর গাঢ় লিপস্টিক। সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে হালকা রঙের অল্প কিছু চুড়ি পরতে পারেন। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে নিলে আরও ভাল হয়। কুর্তা-ফতুয়া বা ধুতি-পাজামার সঙ্গে চুড়ি পরতে হবে একেবারে হাত ভরে, যেন কব্জি দেখা না যায়। বিভিন্ন রঙের মিশেলের চুড়ি পরতে পারেন। এর সঙ্গে মিলিয়ে গলায় কাঠ কিংবা বড় পুঁতির মালাও পরতে পারেন। দুই হাত ভর্তি চুড়ি বড় লাল টিপে সেজে উঠতে বাধা নেই। তবে চোখের কোলে কাজলটা থাকা চাই। দরদাম কাঁচের চুড়ি পাবেন ডজন ৫০-৮০ টাকায়। খাঁজ কাটা চুড়ি পাবেন ৪০-৫০ টাকায়। রেশমি চুড়ি পাবেন ৪০-৬০ টাকায়। রঙিন চুড়ির সেট পাবেন ৮০-৯০ টাকায়। চুমকি ও জরির কাঁচের চুড়ি পাবেন ৪০-৬০ টাকায়। কাঁচের জয়পুরী চুড়ি পাবেন ১৫০-১৮০ টাকায়। দু-তিন রঙের মিশেল চুড়ি পাবেন ৫০-৬০ টাকায়। এছাড়া মুক্তার বালা-স্টোন, গ্লিটার আর মুক্তার সংমিশ্রণে তৈরি চুড়িগুলো দেখতে খুব সুন্দর। জয়পুরী চুড়ির ক্ষেত্রে হাল্কা মেটাল, কাঁচ ও মাটির মিশ্রণে তৈরি চুড়িগুলো এখন অনেক জনপ্রিয়। নকশাভেদে এসব চুড়ির দাম পড়বে প্রতি জোড়া ১৫০-৮০০ টাকা। মেটালের চুড়ির ক্ষেত্রে মেটালের সেট চুড়িগুলো এক সেট পরলেই হাত ভরে যায়। রং, মান এবং নকশার ওপর ভিত্তি করে দাম পড়বে ৪০ থেকে শুরু করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত।
×