ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালকে হারিয়ে শীর্ষে ঢাকা

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

বরিশালকে হারিয়ে শীর্ষে ঢাকা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রতিদিনই বিপিএলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থানটিতে পরিবর্তন হচ্ছে। রবিবার যেমন বরিশাল বুলসকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শীর্ষস্থানে চলে গেল ঢাকা। সমান পয়েন্ট থাকলেও রানরেটে এগিয়ে থেকে খুলনা টাইটান্সকে শীর্ষ থেকে দ্বিতীয়তে নামিয়ে দিল সাকিব আল হাসানের ঢাকা। ম্যাচটিতে টস জিতে বরিশাল। আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। ৬ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৩২ রান করে বরিশাল। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৫ রান করেন রুম্মন রাইস। বল হাতে আবু জায়েদ রাহি, রবি বোপারা, ডোয়াইন ব্রাভো ও সাকিব আল হাসান ১টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে নাসির হোসেনের ৩৪ রানের সঙ্গে কুমার সাঙ্গাকারার ৩২, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ২৩ ও সাকিবের ২২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯.২ ওভারে ১৩২ রান করে জিতে যায় ঢাকা। সেরা চারে থাকার পথে আরেকধাপ এগিয়েও যায় ঢাকা। শেষদিকে খেলায় খানিক রোমাঞ্চ তৈরি হলেও দাপট দেখিয়েই জিতে ঢাকা। বরিশালের মতো অবশ্য ঢাকাও শুরুতেই উইকেট হারায়। ২ রানেই হার্ডহিটার মেহেদী মারুফ সাজঘরে ফেরেন। এরপর কুমার সাঙ্গাকারা ও সাকিব আল হাসান মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। দু’জন দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকেন। যেভাবে এগিয়ে যেতে থাকেন, মনে হয় খেলা তারাই শেষ করে ফেলবেন। কিন্তু দু’জনের জুটি যখন ৫১ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে, ৫৩ রান হয়; তখনই সাঙ্গাকারা (৩২) আউট হয়ে যান। ৫ রান যোগ হতেই সাকিবও (২২) সাজঘরে ফেরেন। সব ঠিক চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই বিপত্তির মধ্যে পড়ে যায় ঢাকা। এরপরও জয়ের সম্ভাবনা উড়ে যায়নি। কারণ ঢাকা অনেক শক্তিশালী দল। বোলিংয়ের চেয়েও ব্যাটিং শক্তিশালী ঢাকার। তাই ঘটল। চতুর্থ উইকেটেই ঘুরে গেল খেলা। নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত মিলেই ঢাকার নিয়ন্ত্রণে রাখলেন খেলা। দু’জন মিলে ৫৫ রানের জুটিও গড়লেন। যে জুটিই ঢাকাকে জয় এনে দিয়েছে। ১১৩ রানের সময় ৩৪ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলে নাসির আউট হলেও জয় নিয়ে আর ভাবতে হয়নি ঢাকাকে। এমনকি ৮ বলে জিততে যখন ৫ রান লাগে, এমন সময় মোসাদ্দেক (২৩) সাজঘরে ফিরলেও চিন্তা কাজ করেনি। এমনকি ৭ বলে জিততে যখন ৫ রান লাগে সেকুগে প্রসন্ন দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হলেও জয় নিয়ে ভাবনা কাজ করেনি। ব্যাটসম্যানে যে ভরপুর দল ঢাকা। তবে খেলা অবশ্য তখন খানিক জমে যায়। শেষ পর্যন্ত খেলা শেষ ওভারে গড়ায়। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে পেরেরার বলে ব্রাভো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করে ফেলেন। চার বল বাকি থাকতে শেষ পর্যন্ত ১৩৫ রান করে জিতে যায় ঢাকা। ব্রাভো ৬ রানে ও বোপারা ১ রানে অপরাজিত থাকেন। বল হাতে স্পিনার তাইজুল ইসলাম ২ উইকেট নেন। ঢাকা শুরুতে যেমন চাপে পড়ে, বরিশালও একই অবস্থায় পড়ে যায়। ৩৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে। তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফীস, দিলশান মুনাবিরা ও জীবন মেন্ডিসকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বরিশাল। এরপর অবশ্য চতুর্থ উইকেটে মুশফিক ও নাদিফ চৌধুরী মিলে দলকে সেই বিপদ থেকে মুক্ত করেন। দু’জন মিলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন। যা দলকে শত রানের কাছাকাছি নিয়ে যায়। এ জুটিটি না হলে যে রান করেছে বরিশাল তা সম্ভবই হত না। ৮৪ রানে গিয়ে সাকিবের বলে মুশফিক (৩৬) আউট হতেই এ জুটি ভাঙ্গে। এরপর আবার ছন্নছাড়া ব্যাটিং করতে থাকে বরিশাল ব্যাটসম্যানরা। ১৪ রানের মধ্যেই আরও ২ উইকেটের পতন ঘটে যায়। তখন মনে হয়েছিল, ১২০ রান করাই কঠিন। কিন্তু থিসারা পেরেরা ও রুম্মন রাইস মিলে সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৩৪ রানের জুটি গড়েন। আর এই জুটিতেই ১৩২ রানে চলে যায় বরিশাল। রুম্মন অপরাজিত ২৫ ও পেরেরা অপরাজিত ১৫ রান করেন। কিন্তু শেষপ র্যন্ত হারতেই হয় বরিশালের। এ হারে সেরা চারে ওঠার সম্ভাবনাতেও ধাক্কা খায় বরিশাল। স্কোর ॥ বরিশাল বুলস-ঢাকা ডায়নামাইটস ম্যাচ। টস ॥ বরিশাল (ব্যাটিং)। বরিশাল ইনিংস ১৩২/৬; ২০ ওভার (শাহরিয়ার ৩, মুনাবিরা ১০, জীবন ৭, মুশফিক ৩৬, নাদিফ ২১, পেরেরা ১৫*, এনামুল ৩, রুম্মন ২৫*; জায়েদ ১/১২)। ঢাকা ইনিংস ১৩৫/৬; ১৯.২ ওভার (মেহেদী ১, সাঙ্গাকারা ৩২, সাকিব ২২, নাসির ৩৪, মোসাদ্দেক ২৩, প্রসন্ন ১০, বোপারা ১*, ব্রাভো ৬*; তাইজুল ২/১৯)। ফল ॥ ঢাকা ডায়নামাইটস ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস)।
×