ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতে নোট বাতিল প্রসঙ্গ

দুর্নীতির বিরুদ্ধে আঘাত হলেও অর্থনীতিতে অশনি সঙ্কেত

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

দুর্নীতির বিরুদ্ধে আঘাত হলেও অর্থনীতিতে অশনি সঙ্কেত

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতের বেশির ভাগ নোট বাতিল করে দেয়ার দুঃখজনক সিদ্ধান্ত ব্যাপক দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক বড় ধরনের আঘাত হিসেবে অভিনন্দিত হয়েছে কারও কারও কাছে। কিন্তু এ আভাসও পাওয়া যাচ্ছে যে, এ উদ্যোগের কারণে অর্থনীতির চরমভাবে মার খেতে পারে। খবর এএফপির। রাতারাতি উচ্চমানের সব নোটবাতিলের সিদ্ধান্তে তথাকথিত কালো বা অঘোষিত শত শত কোটি রুপী নিয়মানুগ ও যথাযথ ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, চলমান মুদ্রা পরিস্থিতির কারণে প্রবৃদ্ধির ওপর নাটকীয়ভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, অর্থনীতি পড়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। ভারতের ৮৬ শতাংশ মুদ্রাবাজার থেকে তুলে নেয়া হবে বলে মোদি যে ঘোষণা দিয়েছিলেন তার প্রায় তিন সপ্তাহ পরও ভারত চলছে বেশিরভাগ নগদ অর্থের ওপর নির্ভরশীল হয়ে। কিন্তু এ অর্থ সরবরাহের অভাব চলছে এখনও। অনেক এটিএমে অর্থ নেই এবং ব্যাংকগুলো সীমিত নগদ অর্থ প্রদানে বাধ্য হচ্ছে মানুষের প্রচুর ভিড় থাকায়। অনেক লোক এখনও তাদের কাছে থাকা বাতিল নোট পরিবর্তন করতে পারেনি। এ জন্য অনেক কৃষক তাদের ফসল বুনতে পারছেন না এবং পণ্য বাজারগুলো প্রায় শূন্য। অন্যদিকে, চা বিক্রেতাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা, যারা ফুটপাথে ব্যবসা করেন তারা বলেছেন, ব্যবসা বেশ পড়ে গেছে। খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে বলেছেন। এ আকস্মিক সিদ্ধান্তে অন্তত দুই শতাংশ পরিমাণ প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে এবং বিষয়টি বাজে বলে অভিহিত করে সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে তিনি। তিনি বলেন, এ উদ্যোগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এক ব্যবস্থাপনা গত ব্যর্থতা এবং এক সংগঠিত ও আইনগত লুট হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক মার্কিন অর্থমন্ত্রী ল্যারি সামার্সসহ বিশেষজ্ঞদের জন্য এখনও উদ্বেগের বিষয় যে, এ পরিকল্পনার কর ফাঁকি ধরে ফেলার জন্য আসল লক্ষ্য অর্জিত হবে কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সামার্স এ উদ্যোগের নিন্দা জানিয়ে এক ব্লগে বলেছেন, দুর্নীতি উচ্ছেদে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া এ মুদ্রা সংস্কারে টেকসই কল্যাণ বয়ে আসবে এতে আমাদের সন্দেহ থাকছে। দুর্নীতি তা সত্ত্বেও অব্যাহত থাকবে কিছুটা অন্যভাবে। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ স্বীকার করেছেন যে, ভারতের মোট দেশীয় উৎপাদনে (জিডিপি) কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা এখনই বলা যায় না। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে জিডিপি ৭ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে। এ হার এশীয় প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীনকে ছড়িয়ে গেছে।
×