ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অধিকাংশ কারখানায় জীবন বীমা নেই আইন ভেঙ্গে অনিরাপদ প্রতিষ্ঠান বহু শ্রমিক পরিবার নিঃস্ব

এক যুগে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৮ হাজার শ্রমিকের

প্রকাশিত: ০৫:২২, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

এক যুগে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৮  হাজার শ্রমিকের

রহিম শেখ ॥ গত এক যুগে কর্মস্থলেই নানা দুর্ঘটনায় জীবন প্রদীপ নিভে গেছে ৮ হাজারেরও বেশি কারখানা শ্রমিকের। কিন্তু কেন এই মৃত্যুর মিছিল? সেই প্রশ্নের উত্তর যেন জানা নেই কারও! এসব দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হওয়ায় একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে অনেক শ্রমিক পরিবার। যে কোন কারখানায় ন্যূনতম ১০০ শ্রমিক থাকলেই তাদের বাধ্যতামূলক বীমা করার বিধান রয়েছে। কিন্তু রাজধানীর অধিকাংশ কারখানাই কর্মরত কোন শ্রমিকের জীবন বীমা না থাকলেও সম্পদের বীমা ঠিকই করছেন মালিকরা। তাছাড়া প্রতিটি দুর্ঘটনার পরই কিছু দিন মালিকদের শাস্তি ও নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য আলোচনা ও সভা-সেমিনার হলেও পরে সব আগের মতোই চলতে থাকে। শ্রমিক সংগঠনগুলো অভিযোগ করে বলছে, মালিকদের মধ্যে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বরাবরই তুচ্ছ থেকে যাচ্ছে। তারা আইন ভেঙ্গে অনিরাপদভাবে কারখানা তৈরি করছেন। সেই সব কারখনার শ্রমিকরা এখন কোন ধরনের শব্দ শুনলেই হুড়োহুড়ি করে বেরিয়ে পড়েন। তবে পোশাক কারখানার মালিকরা বলছেন, প্রায় ৯০ শতাংশ কারখানায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বাকি অন্যসব কারখানার অধিকাংশই পুরনো। নেই অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তাই বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে কল-কারখানাগুলোতে। জানা গেছে, রাজধানীর কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ দেখতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস প্রায় ৯০০ কারখানা পরিদর্শন করে। তারা দেখতে পায় যে এর শতকরা ৭০ ভাগেরই নিরাপত্তাব্যবস্থা বলে কিছু নেই। অর্থাৎ কারখানা মালিকরা নিরাপদ কর্মপরিবেশ না মেনেই কারখানা তৈরি করছেন। এমনকি রাজধানীর অনেক পোশাক কারখানা ফায়ার সার্ভিসের ‘ফায়ার লাইসেন্স’ও নেয়নি। অন্যদিকে, ‘৯০-এর দশক থেকে এ পর্যন্ত দেশের মাঝারি ও বড় ধরনের মিলিয়ে ২১৮টি কারখানার দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মালিকদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। দায়ী মালিকদের জন্য আইনে যে শাস্তি রয়েছে তাও দুর্বল। এর ওপর ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আইন সংশোধন করে কারখানা মালিকদের পরিবেশ ছাড়পত্রের বাধ্যবাধকতার আওতামুক্ত করা হয়। এতে বর্তমানে মালিকরা সহজেই বিধি না মেনে কারখানা তৈরির সুযোগ পাচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকার পোশাক কারখানাগুলোর অধিকাংশই অপরিসর জায়গায় নির্মিত। কাজের সময় অধিকাংশ কারখানা জরুরী বহির্গমন পথ বন্ধ রাখে। রাখা হচ্ছে ধারণক্ষমতার বেশি মালামাল। বিজিএমইএর তথ্যে জানা যায়, ঢাকার অনেক আবাসিক এলাকায় পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন না নিয়ে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে পোশাক কারখানা। এ কারখানাগুলোয় একদিকে যেমন অগ্নিনির্বাপণ ও জরুরী বহির্গমন পথের যথাযথ ব্যবস্থা নেই, তেমনি কারখানার গোডাউনে বিপজ্জনকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে ভয়াবহ দাহ্য পদার্থ; যা অগ্নিকা-ের দুর্ঘটনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। তবে বিজিএমইএ জানায়, রাজধানীতে বর্তমানে টিনশেডে তৈরি কোন কারখানার লাইসেন্স নবায়ন করতে দেয়া হচ্ছে না। জানা যায়, হাতেগোনা কিছু গার্মেন্টসে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম থাকলেও বেশিরভাগ গার্মেন্টসে তা নেই। দেশের ৮০ শতাংশ ফ্যাক্টরি তাদের শ্রমিকদের অগ্নিনির্বাপণ ও আত্মরক্ষার কোন প্রশিক্ষণ দেয় না। অনেক ফ্যাক্টরিতে বিকল্প সিঁড়ি থাকলেও তা ব্যবহার করা হয় গোডাউন হিসেবে। গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেন, আইএলও কনভেনশনে কারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে বলা হলেও বাস্তবে কারখানা মালিকরা তা মানছেন না। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। এ ব্যাপারে শ্রমিক নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, পোশাক কারখানাগুলোর নিরাপত্তা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দেখা যাচ্ছে যে যতগুলো দুর্ঘটনা ঘটছে এর সব কটির কারণই এক। সরকার ও মালিক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী গার্মেন্টস মালিকদের বরাবরই বাঁচানোর চেষ্টা করে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না থাকায় তাদের কাছে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি তুচ্ছ হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে এমন বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হলো- দুর্ঘটনার জন্য বিকল্প সিঁড়ি না থাকা, অগ্নিনির্বাপণের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও তা ব্যবহারের দক্ষ লোকবলের অভাব, ফায়ার এ্যালার্ম ব্যবহারের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ না হওয়া এবং গার্মেন্টসের কাছাকাছি পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা না থাকা। এ ছাড়া শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে খারাপ সম্পর্ক, কারখানার মধ্যেই ব্রয়লার ও জেনারেটর স্থাপন, বিভিন্ন রাসায়নিক ও অতিরিক্ত দাহ্য পদার্থ অনিরাপদ জায়গায় রাখাসহ বিভিন্ন কারণে গার্মেন্টসে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএর সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, তাজরীন ফ্যাশন্স ও রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর নেয়া পদক্ষেপে পোশাক শিল্পের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। পোশাক শিল্পের শ্রমিক কর্মীদের নিরাপত্তায় নানাবিধ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এদেশে কমপ্যাক্ট, এ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্স কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব পদক্ষেপে কারখানাগুলোতে কর্ম পরিবেশের উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প একটি রোল মডেল। বিজিএমইএর সভাপতি আরও বলেন, ২০১৮ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত এ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্সের মেয়াদ রয়েছে। তারা পোশাক খাতের অগ্রগতিতে কিছু শর্ত দিয়েছে। এর আগেই শর্ত পূরণে সমর্থ হব। বিজিএমইএর পূর্ণ সহযোগিতায় ৩ হাজার ৬৬০টি চালু কারখানা পরিদর্শন সম্পন্ন হয়েছে। কারখানাগুলো প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ করেছে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম জনকণ্ঠকে বলেন, শুধু তৈরি পোশাক শিল্প নয়, আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতি নজরদারি প্রয়োজন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ফায়ার সার্ভিস বা দমকল বাহিনীর সক্ষমতা বেড়েছে। তার প্রমাণ মেলে দুর্ঘটনাস্থলে পানিবাহী গাড়ি ও উদ্ধার কাজ আনুষঙ্গিক পরিচালনার সরঞ্জামের উপস্থিতি থেকে। কিন্তু রাসায়নিক কিংবা অন্য ধরনের দাহ্য পদার্থ রয়েছে যেসব প্রতিষ্ঠানে, সেখানে আগুন দ্রুত আয়ত্তে আনায় যে সমস্যা রয়ে গেছে, সেটা টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেডের ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের শিল্প খাতের প্রসার ঘটছে; কিন্তু ঝুঁকি সর্বনিম্ন মাত্রায় কমিয়ে রাখার সক্ষমতা এখনও তৈরি হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার আলী আহাম্মেদ খান জনকণ্ঠকে বলেন, শিল্পায়নের শুরুতে নিরাপত্তার বিষয়ে মালিকদের উদাসীনতাই বর্তমান দুর্ঘটনাগুলোর মূল কারণ। তবে রানা প্লাজা ও তাজরীনের ঘটনার পর দেশের শিল্পগুলোর মধ্যে পোশাক খাতের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। তার পরও অনেক খাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। সময় এসেছে দেশের সব শিল্প খাতে সমান মনোযোগী হওয়ার। তবে লোকবলসহ সরকারী সংস্থার সামর্থ্য ও ক্ষমতায়নের ঘাটতি আছে। নিরাপত্তা জোরদারে এগুলো নিশ্চিত করা জরুরী। বিলসের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০২ থেকে ২০১৫ সাল-এই ১০ বছরে কর্মস্থলে জীবন প্রদীপ নিভেছে ৮ হাজার ১৮৩ শ্রমিকের। আর কর্মস্থলে আহত হয়েছে ১৯ হাজার ৬২০ শ্রমিক। এ ছাড়া কর্মস্থলে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণসহ নানাভাবে নাজেহাল হতে হয় অনেক শ্রমিক নারী-পুরুষকে। বিলসের গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্যে জানা যায়, ২০০২ সালে কর্মস্থলে প্রাণ গেছে ১৬৮ শ্রমিকের, ২০০৩ সালে ২৫১, ২০০৪ সালে ১৮৮, ২০০৫ সালে ৪৮০, ২০০৬ সালে ৯৭৪, ২০০৭ সালে ৪৩৬, ২০০৮ সালে ৫৪৭, ২০০৯ সালে ৩৭৮, ২০১০ সালে ৭০৩, ২০১১ সালে ৮৭৯, ২০১২ সালে ৯০৬, ২০১৩ সালে ১৭০৬, ২০১৪ সালে ৬০৩ ও ২০১৫ সালে ৩৬৩ জন। একইভাবে এই এক যুগে আহত শ্রমিকের সংখ্যা নিহত শ্রমিকের দ্বিগুণেরও বেশি। ২০০২ সালে কর্মস্থলে শ্রমিক আহত হয় ৩৮৯ জন, ২০০৩ সালে ৪৭৫, ২০০৪ সালে ২৫৯, ২০০৫ সালে ৯৫০, ২০০৬ সালে ৩৬৫০, ২০০৭ সালে ১১৭৬, ২০০৮ সালে ৭১৩, ২০০৯ সালে ১৯০০, ২০১০ সালে ২৫৭৬, ২০১১ সালে ১২৩৫, ২০১২ সালে ১১০৮, ২০১৩ সালে ৪৮২৫, ২০১৪ সালে ৬৮৫ ও ২০১৫ সালে ৩৮২ জন। চলতি ২০১৬ সালেও বেশ কয়েকটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে গত ১০ অক্টোবর গাজীপুরের টঙ্গীতে টাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকা- ঘটে। এতে নিহত হয় ৩৫ শ্রমিক। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার আশুলিয়ায় একটি গ্যাস লাইটার তৈরির কারখানায় অগ্নিকা- ঘটে। এতে প্রায় ৪০ শ্রমিক আগুনে পুড়ে আহত হয়। প্রতিবছরই ঘটছে শিল্পকারখানায় এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, তাজরীন ও রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর গার্মেন্টস মালিকরা হয়তো কিছুটা সচেতন হয়েছেন। কিন্তু শ্রমিকের জীবন রক্ষার জন্য কার্যকর কোন পদক্ষেপ এখনও নেননি। শিল্পমালিকরা শ্রমিকের জীবন বাঁচানোর কোন উদ্যোগ নেননি, যেসব উদ্যোগ নিয়েছেন সেটা তাদের শিল্প রক্ষার জন্য। বিদেশে যাতে তাদের শিল্প প্রশ্নের মুখে না পড়ে, বিদেশী ক্রেতারা যাতে তাদের পণ্য ছেড়ে চলে না যান তারা সেজন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু শ্রমিকের জন্য তেমন কিছুই করেননি। তিনি বলেন, তাজরীন দুর্ঘটনার পর হয়তো নিহত শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা কিছুটা ক্ষতিপূরণ পেয়েছে, কিন্তু সেটা যথাযথভাবে দেয়া হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা কোন শিল্পে দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়ে হতাহত শ্রমিকদের দায়িত্ব নেয়ার মতো উদ্যোগ থাকে না মালিকদের। কারণ কোন কারখানায় দুর্ঘটনা ঘটলে সেই কারখানার মালিক পালিয়ে যান। তখন একদিকে যেমন শ্রমিকদের বেতন আটকে যায়, তেমনি ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ পাওয়া যায় না। এসব বিষয়ে এখনও কোন সঠিক দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়নি। আরও পরিতাপের বিষয় হলো, এসব নিয়ে সরকারের তরফ থেকেও তেমন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আর এসব কারণেই শিল্প-দুর্ঘটনা থামছে না, কমানো যাচ্ছে না কর্মস্থলে শ্রমিকের প্রাণহানি। এদিকে সংশোধিত শ্রম আইনে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শ্রমিকদের জন্য গ্রুপ বীমার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম ১০০ জন শ্রমিক রয়েছে, তাদের বাধ্যতামূলক বীমা করার বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু শ্রমিক সংখ্যা ২৫০ হওয়া সত্ত্বেও তাদের বীমার আওতায় আনেনি সম্প্রতি অগ্নিকা-ে পুড়ে যাওয়া টাম্পাকো ফয়েল্স কর্তৃপক্ষ। বীমা বিষয়ে নতুন আইনে বলা হয়েছে, শ্রমিকের মৃত্যুর ক্ষেত্রে বীমা দাবি আদায় করার দায়িত্ব মালিকের। মালিকপক্ষ ওই বীমা দাবি থেকে আদায় করা অর্থ নিহত শ্রমিকের পোষ্যদের সরাসরি দেবে অথবা শ্রম আদালতে পাঠাবে। যদিও বীমা না থাকায় এখন এ ধরনের কোন সুবিধাই পাচ্ছে না টাম্পাকোয় নিহত শ্রমিকের পরিবার। এ বিষয়ে জনতা ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলুল হক খান জনকণ্ঠকে বলেন, অধিকাংশ কারখানার মালিকপক্ষ সম্পদের বীমা করলেও শ্রমিকের জীবনের বীমা করেন না। অথচ সরকারীভাবে শ্রমিক বীমা বাধ্যতামূলক। পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, জীবন অমূল্য সম্পদ। তবে এ দেশে মানুষের জীবনের থেকে সম্পদের মূল্যই বেশি। এর আগেও রানা প্লাজাসহ বিভিন্ন ঘটনায় আমরা এর প্রমাণ পেয়েছি। টঙ্গীর টাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় কাজ করতেন জামাল শেখ। জীবন বীমা আছে কিনা, জানতে চাইলে এ তিনি বলেন, শ্রমিকের জীবন বীমা সম্পর্কে কোন ধারণা নেই আমার।
×