ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কয়েক দফা উদ্যোগ ব্যর্থ

অবৈধ দখলে পদ্মা আড়িয়ল বিল সংযোগ খাল

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

অবৈধ দখলে পদ্মা আড়িয়ল বিল সংযোগ খাল

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মা-আড়িয়ল বিল সংযোগ খাল ভাগ্যকূলে দখল হয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে মাছের নিরাপদ অভয়াশ্রম। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বালাসুর এলাকার বউবাজার পয়েন্ট দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা থেকে আড়িয়ল বিলের সঙ্গে সংযুক্ত ঐতিহ্যবাহী ভাগ্যকূল খাল। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ খালটি স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যুর থাবায় দিন দিন দখল হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন খালটি উদ্ধারে কয়েক দফা উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। খাল ও সরকারী সম্পত্তি দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল ২০২৫ নম্বর স্মারকের এক তদন্ত প্রতিবেদনের রিপোর্টে শ্রীনগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) দিলারুবা শারমীন দখলকারী হানিফ মোল্লাকে উচ্ছেদ নোটিস করেন। এছাড়াও ৩০ জুন আরেকটি নোটিস করেন। কিন্তু এসব নোটিসের কোন তোয়াক্কা না করে ভূমিদস্যুরা সময়-সুযোগ বুঝে এখনও অবৈধভাবে মাটি ভরাট অব্যাহত রেখেছে। সরেজমিন দেখা যায়, বউবাজারের কাছে খালটির একাংশে নতুন করে মাটি ফেলা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মোসলেম সরদার (৬৫) বলেন, এক সময় এ খাল দিয়ে জাহাজ চলত। ভাগ্যকূলসহ আশপাশ এলাকার লোকজন ও ব্যবসায়ীরা নৌপথ হিসেবে এ খালটি ব্যবহার করত। টলমলে পানি ছিল। পদ্মা নদীর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ থাকায় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু খননের অভাবে দিন দিন খালটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ সুযোগে ভূমিদস্যুদের করাল গ্রাসে বিভিন্ন পয়েন্টে বেদখল হচ্ছে খালটি। সিরাজ সরদার বলেন, খালটি রক্ষার জন্য আমরা এসিল্যান্ড বরাবর অভিযোগ করেছি। সার্ভেয়ার এসে দেখে গেছেন এবং কয়েক দফা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। দখলকারী স্থানীয় সন্ত্রাসী হত্যা মামলাসহ একাধিক মমামলার আসামি হানিফ মোল্লার বিরুদ্ধে নোটিস জারি করলেও এর কোন তোয়াক্কা না করে সুযোগ বুঝে সে দখল চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছে। এ গ্রামের এক প্রতিবাদী নারী আঁখি শাহিন বলেন, খাল দখলসহ সরকারী জায়গায় দোকানঘর তুলেছে এই হানিফ মোল্লা। এ ব্যাপারে শ্রীনগর প্রশাসন ও স্থানীয় এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষের কাছে অভিযোগ করেছি। এমপি সাহেব নিজে এসে এ দখলের চিত্র দেখে গেছেন। প্রকাশ্যে এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় আমাকে হত্যার হুমকিসহ আমাদের পরিবারের লোকজনদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে তার সন্ত্রাসী বাহিনী। আমরা এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। খাল দখল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এমপি জানান, খালটি রক্ষায় আমার সজাগ রয়েছি। তাকে উচ্ছেদ নোটিস করা হয়েছে। কোনভাবেই সে সরকারী সম্পত্তি দখল করতে পারবে না। পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদীর সঙ্গে আড়িয়াল বিলের এ রকম বহু খাল রয়েছে। এসব খালের মাধ্যমে নদী থেকে বিশেষ করে রুই জাতীয় মা মাছ নিরাপদে ডিম ছাড়াতে নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্র আড়িয়াল বিলে প্রবেশ করে। কিন্তু এভাবে অবাধে খাল দখল চলতে থাকলে নিরাপদে মাছের বিচরণ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন আড়িয়াল বিলের মৎস্যজীবীরা।
×