ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাইয়ে এক পরিবারের তিনজনই মানসিক ভারসাম্যহীন

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

চাঁপাইয়ে এক পরিবারের তিনজনই মানসিক ভারসাম্যহীন

ডি. এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে জেবুননেসার সংসার। ৪৫ বছরের জেবুননেসা এখন ভারসাম্যহীন। পাশাপাশি দুই মেয়ে হাসিনা ও হাসবিয়াও বদ্ধ পাগল। ১৬ বছরের ছোট মেয়ে কিসমত আরা স্বাভাবিক জীবনে থাকলেও যে কোন মুহূর্তে মানসিক রোগী হবার আশঙ্কা রয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। সপ্তাহের পর সপ্তাহ জুড়ে অনাহারে থাকতে হয়। পড়াশুনার কোন পরিবেশ নেই। একমাত্র ছেলে রমজান আলী রাজমিস্ত্রীর জোগানদাতা হিসেবে অনিয়মিত কাজ করে। তবে বাসায় ফিরলে খাবার নিয়ে কেউ এগিয়ে আসে না। এক কথায় পুরো পরিবার মানসিক রোগে আক্রান্ত। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। পলিথিন মোড়ানো কুড়ে ঘরের মধ্যে সবাইকে থাকতে হয়। দুই মেয়েসহ জেবুননেসা পাগল হবার কারণে সেই ঘরে ছোট মেয়ে কিসমত আরার পড়ার পরিবেশ নেই। সংসারে সাড়ে তিন বছর আগে একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামী দিনমজুর আব্দুল হান্নান মারা যাবার পর থেকেই টানাপোড়ন শুরু হয়। বড় মেয়ে হাসিনা ১০ম শ্রেণী হতে পড়াশুনা করার পর শোকে তাপে বদ্ধ পাগল হয়ে গেছে। পরের বোন হাসবিয়া একইভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পাগল হয়ে সর্বক্ষণ কুঁড়ে ঘরের মধ্যে পড়ে থাকে। জেবুননেসা স্বামীর তিরোধানে শোকে তাপে পাগল হয়ে বাড়িতে থাকলেও অস্বাভাবিক কার্যকলাপ করে থাকে। এই অসহায় পরিবারের অবস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরতলীর বড়তলা হাট সংলগ্ন জোড়গাড়ির মোড়লপাড়ায়। মহল্লাবাসী উদ্যোগী হয়ে পরিবারটিকে দেখভালের চেষ্টা করে আসছে। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বড়তলাহাট সংলগ্ন বরজাহান মিঞাসহ ১০-১৫ জন উদ্যোগী হয়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা তুলে পাকা ঘর তৈরি করে দিতে মিস্ত্রী লাগিয়েছে। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে একাধিক মানসিক রোগী নিয়ে। এই মুহূর্তে তিন পাগলের চিকিৎসা করতে না পারলে পরিবারটিকে বাঁচানো যাবে না। কিন্তু মহল্লাবাসীর চিকিৎসা দেবার মতো সামর্থ্য বা সাধ্য কোনটাই নেই।
×