ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ডেসকোর শেয়ার অফলোড নিয়ে বিভ্রান্তি

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

ডেসকোর শেয়ার অফলোড নিয়ে বিভ্রান্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জ্বালানি মন্ত্রণালয়, বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড কিংবা ডেসকোর পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া ১০ শতাংশ শেয়ার অফলোডের ঘোষণা এসেছে। ফলে এ শেয়ার এখনই অফলোড হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে শেয়ারবাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ডেসকোর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার তথ্য নিয়ে। গত ৬ নবেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে কোম্পানিটির শেয়ার অফলোডে ঘোষণার ১৮ দিন পরও বিষয়টি নিয়ে কিছুই বলতে পারছে না কোন পক্ষ। ৬ নবেম্বর সরকারী মালিকানায় থাকা শেয়ারের অংশ থেকে ১০ শতাংশ শেয়ারবাজারে অফলোডের সিদ্ধান্ত জানায় ডেসকো। সিদ্ধান্ত অনুসারে, বর্তমানে বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) হাতে থাকা ডেসকোর ৭৩ দশমিক ৭২ শতাংশ শেয়ার থেকে ১০ শতাংশ শেয়ারবাজারে ছাড়বে কোম্পানিটি। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক ওই শেয়ার অফলোড কিংবা বিক্রির ঘোষণা আসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে। ডেসকোর কর্পোরেট উদ্যোক্তা হচ্ছে বিপিডিবি। বর্তমানে বিপিডিবির হাতে ডেসকোর ২৯ কোটি ৩১ লাখ ৪ হাজার ২৫৯ শেয়ার রয়েছে। ৬ নবেম্বর আরও ১০ শতাংশ শেয়ার অফলোডের ঘোষণায় শেয়ারটি ১০ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে। ৬ নবেম্বর ডেসকো শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৫৩ টাকা ৪০ পয়সা, যা বৃহস্পতিবারে ৪৯ টাকা ৬০ পয়সায় নেমে আসে। শুধু জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী কিংবা ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকই নন, ডেসকোর শেয়ারের মালিক প্রতিষ্ঠান বিপিডিবির শীর্ষ কর্মকর্তারাও শেয়ার অফলোডের সিদ্ধান্তের কথা জানেন না। তবে সম্প্রতি বিপিডিবি থেকে ডেসকোর কাছে সরকারী অংশের শেয়ারের তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। এ বিষয়টিই ভুলভাবে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য বিবেচনা করে কোম্পানি থেকে ডিএসইতে প্রেরণ করা হয়ে থাকতে পারে। তবে শেয়ার অফলোডের ঘোষণার বিষয়টি কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিপিডিবি কিংবা ডেসকোর পক্ষ থেকে কোন সংশোধনী দেয়া হয়নি। প্রসঙ্গত, সরকারী কোম্পানি হিসেবে সর্বশেষ ২০১২ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত হয় বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড। এরপর আর কোন সরকারী কোম্পানি শেয়ার অফলোড করেনি। অবশ্য সরকারী কোম্পানির বিদ্যমান শেয়ারের অংশ থেকে সর্বশেষ ২০১১ সালের জানুয়ারিতে কিছু শেয়ার অফলোড করে ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্ট, যমুনা ও মেঘনা অয়েল কোম্পানি। সে সময় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে অবশিষ্ট শেয়ার অফলোড করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় ডেসকোর ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে অবশিষ্ট শেয়ারও অফলোডের সিদ্ধান্ত ছিল। ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত হিসাব বছরে ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১২ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৪ টাকা ৩২ পয়সা। সর্বশেষ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ডেসকো। মুনাফা কমে যাওয়ার ধারাবাহিকতা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও লক্ষ্য করা গেছে। এ প্রান্তিকে ডেসকোর ইপিএস হয়েছে ৫৭ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬৭ পয়সা। ২০০৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ডেসকোর অনুমোদিত মূলধন ৫০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৩৯৭ কোটি টাকা। রিজার্ভ রয়েছে ৮৮৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৪। এর মধ্যে সরকারের কাছে ৭৩ দশমিক ৭২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৭ দশমিক ৬৯, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের হাতে দশমিক ৫৭ ও সাধারণ বিনিয়োগকারদের হাতে রয়েছে বাকি ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ শেয়ার।
×