ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সোমবার ১২ ঘণ্টা ‘হরতাল’ ঘোষণা বামেদের, বরদাস্ত করবেন না মমতা

প্রকাশিত: ২০:১০, ২৭ নভেম্বর ২০১৬

সোমবার ১২ ঘণ্টা ‘হরতাল’ ঘোষণা বামেদের, বরদাস্ত করবেন না মমতা

অনলাইন ডেস্ক ॥ নোট বাতিলের ধাক্কায় এমনিতেই খুচরো-পাইকারি বাজার ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের মাজা ভাঙা অবস্থা। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো সোমবার ১২ ঘণ্টা ‘হরতাল’ ঘোষণা করে দিল বামেরা। বাংলা ছাড়া কেরল ও ত্রিপুরাতেও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাম দলগুলি। তবে বাংলায় বামেদের এই কর্মসূচি কতটা সফল হবে তা নিয়ে অঙ্কুরেই সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ, প্রস্তাবিত ধর্মঘটের তীব্র সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হরতালের খবর পাওয়া মাত্র মমতা বলেন, ‘‘কীসের বন্ধ! দেশে তো এমনিই বন্ধের পরিস্থিতি!’’ মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘আমরা কোনও বন্ধ সমর্থন করি না। তা ছাড়া দিল্লিতে বিরোধী দলগুলির বৈঠকে বনধের প্রস্তাব নিয়ে কোনও ঐকমত্য হয়নি। ওই দিন তৃণমূল রাস্তায় থাকবে। আমিও থাকব।’’ পরে নবান্নের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বর্তমান সরকারের বন্ধ-বিরোধী অবস্থানে কোনও বদল হচ্ছে না। অর্থাৎ সোমবার জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে সক্রিয় থাকবে প্রশাসন। কোনও সরকারি কর্মচারী ওই দিন ছুটি নিলে শুধু এক দিনের বেতন কাটা যাবে তাই নয়, চাকরির মেয়াদও এক দিন কমে যাবে। এ দিন বিকেলে আলিমুদ্দিনে ১৮টি বাম দলের বৈঠক ডেকেছিলেন ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এটাকে সাধারণ ধর্মঘট বলছি না। হরতাল বলছি। সব মতের মানুষকে বলছি, কেন্দ্রের হঠকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এই হরতালে সামিল হোন।’’ প্রসঙ্গত, দু’দিন আগে সংসদে বিরোধী দলগুলির বৈঠকে স্থির হয়েছিল নোট বাতিলের জন্য মানুষের দুর্ভোগের প্রতিবাদে ২৮ তারিখ দেশ জুড়ে ‘আক্রোশ দিবস’ পালন করবেন তাঁরা। কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম— সকলেই ওই সিদ্ধান্তের শরিক ছিল। তারই প্রেক্ষাপটে পরশু কলকাতায় ‘জনবিদ্রোহ মিছিলের’ ডাক দিয়েছেন মমতা। একই কারণে ওই দিন কলকাতা-সহ সব জেলায় প্রতিবাদ মিছিল ও জনসভার ডাক দিয়েছে কংগ্রেসও। ফলে দুই মিছিলের দাপটে পরশু মহানগরী স্তব্ধ হয়ে হয়ে যেতে পারে। অনেকের মতে, বাংলায় সাংগঠনিক ভাবে রুগ্ণ হয়ে যাওয়া বামেরা চতুর চালে সে কারণে সোমবারই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। যাতে তৃণমূলের ঘাড়ে চেপে তা সফল করা যায়। তাঁদের এই ভাবনাও থাকতে পারে যে নোট বাতিলের বিরোধিতায় যে হেতু মমতা নিজে পথে নেমেছেন, তাই হরতালে আপত্তি জানাতে গেলে প্যাঁচে পড়বেন। এর পরেও মমতা আপত্তি করলে বামেরা বলবেন, ‘মোদী-দিদি আঁতাত রয়েছে!’ বিমানবাবু এ দিনই বলেন, ‘‘নোট বাতিলের বিরোধিতায় উনি হিল্লি-দিল্লি করছেন। আর বাংলায় হরতালে আপত্তি করছেন। ওঁর মুখোশ খুলে যাচ্ছে।’’ মমতা অবশ্য বুঝিয়ে দেন, বামেরা যদি ভেবে থাকে তিনি প্যাঁচে পড়বেন, সেটা হবে আহাম্মকি। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বরাবর বন্ধ-বিরোধী। কংগ্রেস অবশ্য স্বতন্ত্র অবস্থান রাখতে চেয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘সংসদে বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, যৌথ কর্মসূচির পাশাপাশি প্রতিটি দল পৃথক কর্মসূচি নিতে পারবে। সেই শর্তেই কংগ্রেস নিজেদের কর্মসূচি নিয়েছে। বামেরা ওঁদের বিচার বিবেচনায় হরতাল ডেকেছে।’’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×