ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

কবি আবদুল হাই মাশরেকীর ‘পদচিহ্ন’ নিয়ে বিশেষ আলোচনা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৭ নভেম্বর ২০১৬

কবি আবদুল হাই মাশরেকীর ‘পদচিহ্ন’ নিয়ে বিশেষ আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অসাম্প্রদায়িক ও মানবতাবাদী কবি আবদুল হাই মাশরেকীর কালোত্তীর্ণ কবিতা ‘পদচিহ্ন’। কবিতাটি কলকাতা থাকাকালীন ১৯৪৬ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় লেখা হয়। প্রজন্মের মূল্যবোধ জাগ্রত ও সচেতন করার লক্ষ্যে এ কবিতার বিষয়বস্তু নিয়ে এক বিশেষ আলোচনা হয় বেইলী রোডের মহিলা সমিতির আইভি রহমান মিলনায়তনে শনিবার বিকেলে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে কবির রচিত ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার জারি’ অডিও সিডির মোড়ক উন্মোচন হয়। এছাড়া গুণীজনদের শিল্পাচার্য স্বর্ণপদক ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় শিশু-কিশোরদের মধ্যে জয়নুল পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই বীভৎস হানাহানি আর এই মৃত্যুকে স্বীকার করিনি কভু’ শীর্ষক আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন, কবি অসীম সাহা, আবৃত্তিশিল্পী মোবারক হোসেন, মীর বরকত, ছড়াকার এম আর মঞ্জু, লোকসঙ্গীত গবেষক রফিকুল হক ঝন্টু, প্রাবন্ধিক রাজিব কুমার সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড. এস এম আফসারুজ্জামান। শুরুতে ‘এই বীভৎস হানাহানি আর এই মৃত্যুকে স্বীকার করিনি কভু’ ও ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার জারি’ এ বিষয়ের ওপর পর পর দুটি কোরিওগ্রাফি পরিবেশন করে কাঁদা মাটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা। এরপর অডিও সিডির মোড়ক উন্মোচনের পর শুরু হয় আলোচনা। এ পর্বের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নঈম মাশরেকী। বক্তরা বলেন, রাষ্ট্রকে অস্থির ও অকার্যকর করার জন্য একটি গোষ্ঠী বিভিন্ন অপকর্মে তৎপর। এই চক্র আমাদের মেধাবী ছেলে মেয়েদের ধর্মের অপব্যখ্যা দিয়ে বিপদগামী করে তুলছে। এখানে বড়ই অসহায়, হতবাক পরিবার ও সমাজ। সরকারের পাশাপাশি সবারই উচিত এসব অপ-তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। আলোচনা শেষে শিল্পাচার্য স্বর্ণপদক ও শিশু-কিশোরদের জয়নুল পুরস্কার ২০১৬ প্রদান করা হয়। সবশেষে কবি আবদুল হাই মাশরেকীর রচিত গান নিয়ে পরিবেশিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শেষ হলো ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর চল্লিশ বছরপূর্তি উৎসব ॥ ‘ভয় নেই কোন ভয়/জয় সাম্যের জয়’ স্লোগান নিয়ে ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠীর ৪০ বছর পূর্তির দুই দিনের উৎসবের শনিবার ছিল সমাপনী দিন। এদিন বিকেলে ছিল গুণীজন সম্মাননা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহ্কাম উল্লাহ্, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল আকতারুজ্জামান ও মুক্তিযুদ্ধ একাডেমির সভাপতি ড. আবুল আজাদ। সভাপতিত্ব করেন ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও উৎসব উদ্যাপন পর্ষদের আহ্বায়ক গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর। শুরুতে বিশ্ব সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা, মহান বিপ্লবী ও সাম্রাজ্যবাদের আতঙ্ক কমরেড ফিদেল ক্যাস্ট্রোর স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সমাপনী দিনে তিন গুণীজনকে ঋষিজ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। সংবর্ধিত ব্যক্তিত্ববৃন্দ হলেন ভারতের ড. মহুয়া মুখার্জী (নৃত্যকলা) ও অমিতাভ মুখোপাধ্যায় (সঙ্গীত) এবং গণসঙ্গীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কামরুদ্দীন আবসার। অসুস্থতাজনিত কারণে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি অমিতাভ মুখোপাধ্যায়। তার পক্ষে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন মহুয়া মুখার্জী। প্রধান অতিথি রাশেদ খান মেনন বলেন, নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঋষিজ আমাদের চেতনাকে আরও শাণিত করেছে। জীবনকে করেছে সজীব ও সচেতন রাজনীতিমুখী। বিশেষ অতিথি আসাদুজ্জামান নূর বলেন, যে কোন ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে, গণমানুষের অধিকার, সামাজিক অসঙ্গতি কিংবা সমসাময়িক নানা বিষয়ে ঋষিজ যেভাবে উচ্চকণ্ঠ ধারণ করেছে তা এক কথা অতুলনীয়। সভাপতির বক্তব্যে ফকির আলমগীর বলেন, চারদিকে অবিশ্বাস আর ধ্বংসনামা পরিস্থিতিতে আপন সংকল্পে অটল, নিজস্ব কর্মে একাগ্র শিল্পী দল হিসেবে ঋষিজ সবার মন করতে সক্ষম হয়েছে উৎসবপ্রিয় দেশবাসীর জন্য। নাট্যদল সম্মাননা পেলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ ॥ রাজধানীর টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার তারুণ্যদীপ্ত থিয়েটার সংগঠন নাট্যদল সক্রিয় নাট্যচর্চার পাশাপাশি সকল সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছে। সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ দলটির পক্ষ থেকে প্রতিবছর একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে নাট্যদল সম্মাননা প্রদান করা হয়। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এ বছর ‘নাট্যদল সম্মাননা’ পেলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ক্যাফেটেরিয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে বরেণ্য এ সংস্কৃতিজনকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
×