ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

৩০০ টাকার ক্যালসিয়ামের কৌটার দাম বেড়ে ৪২০ টাকা

ওষুধ কোম্পানিগুলো মূল্য বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায়

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২৭ নভেম্বর ২০১৬

ওষুধ কোম্পানিগুলো মূল্য বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়লেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। অতি প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ওষুধ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাম নির্ধারণে কোম্পানি মালিকদের জনস্বার্থ বিবেচনার কথা বলা হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের সংশোধন আর ওষুধ প্রশাসনের ক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া দাম নাগালের মধ্যে রাখা সম্ভব হবে না। ৩০০ থেকে এক লাফে ৪২০ টাকা। ৬০টি ট্যাবলেটসমৃদ্ধ ক্যালসিয়ামের প্রতি কৌটায় দাম বেড়েছে ১২০ টাকা। বিভিন্ন পদের ওষুধের দাম বাড়লেও গত এক মাসে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের দাম বেড়েছে বেশি মাত্রায়। যৌক্তিক কারণ ছাড়া বছর ঘুরে একই ওষুধের দাম কয়েক দফা বৃদ্ধিতে অসন্তোষ ক্রেতা সাধারণের মধ্যে। তারা বলেন, প্রত্যেক কোটার মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ টাকা বেড়ে গেছে। এটা গরিব মানুষের জন্যে ক্ষতিকর। এছাড়া যে ওষুধগুলো জরুরী সেগুলোর দামই বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে বিক্রেতারা বললেন, এবার স্কয়ার কোম্পানির ওষুধের দাম বাড়ানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই মূল্য বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় নামে শীর্ষস্থানীয় আরও পাঁচটি কোম্পানি। বরাবরের মতো বাকি কোম্পানিগুলোও শীঘ্রই দাম বাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানির দাম বাড়ানোর ফলে তারাও বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। দেশের ১৪০০ জেনেরিক আইটেমের মধ্যে ১২০০ ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ওষুধ কোম্পানিগুলো। মাত্র ১১৭টি ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের দায় কেবল সরকারের। ওষুধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের সংশোধন আর ওষুধ প্রশাসনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা না হলে ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই থেকে যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুনীর উদ্দীন বলেন, ‘শীর্ষস্থানীয় কিছু কোম্পানি তারা এত ক্ষমতাবান, তাদের উপরে ওষুধ প্রশাসন বা সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। ওষুধের দাম বছরে কয়বার বাড়বে অথবা কি পরিমাণ দাম বাড়বে তার সীমা থাকতে হবে বলে জানান তিনি।’ এদিকে ১৯৯৪ সালের ওষুধ নীতিতে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের সিংহভাগ ক্ষমতা খর্ব হওয়ায় নির্বিকার ওষুধ প্রশাসন। ওষুধের দাম কমানোর ক্ষেত্রে কোম্পানি মালিকদের তাই জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষার তাগিদ দেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ‘তাদের যেটুকু এখতিয়ার আছে, রেগুলেশন অথরিটি হিসেবে করে যাচ্ছেন।’ বরাবরই কোম্পানিগুলো নানা কারসাজির মধ্যে দিয়ে ওষুধের দাম বাড়িয়ে অযাচিতভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে মুনাফা।
×