অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি বেনিফিশিয়ারি অনার্স বা বিও এ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতা বেড়েছে। চলতি মাসে নতুন বিও এ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ৮ হাজার। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
সিডিবিএলের দেয়া তথ্য মতে, বর্তমানে মোট বিও রয়েছে ২৯ লাখ ২০ হাজার ২৯টি। ১ অক্টোবর যার সংখ্যা ছিল ২৯ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪টি। অর্থাৎ ২৬ দিনের ব্যবধানে বিও বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার। বর্তমানে যে বিও রয়েছে এর মধ্যে পুরষ এ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যা ২১ লাখ ১৯ হাজার ১৪৮টি। অক্টোবরের প্রথমে যা ছিল ২১ লাখ ১৩ হাজার ৫৬৮টি। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে শুধুমাত্র পুরুষ বিও বেড়েছে প্রায় ৬ হাজার। অন্যদিকে বর্তমানে নারী বিও সংখ্যা রয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার ২১টি। ২৬ দিন আগে যার সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৮৮হাজার ৭৯টি। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে বিও বেড়েছে ২ হাজারের বেশি। আর এই সময়ের মধ্যে কোম্পানির বিও সংখ্যা বেড়েছে ৪৩টি। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী এ ধরনের বিও সংখ্যা ১০ হাজার ৮৭০টি। পূর্বে যা ছিল ১০ হাজার ৭৩৭টি।
এর আগে সময় মতো বিও ফি না দেয়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ২ লাখের বেশি বিও। সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রধানত দুই কারণে এবার অসংখ্য বিও বাতিল হযেছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে বাজারের মন্দা পরিস্থিতি অন্যটি প্রাইমারি মার্কেট থেকে বিনিয়োগকারীদের সুবিধা না পাওয়া। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা ৫০০ টাকা দিয়ে বিও নবায়ন করেননি। যার ফলে এসব এ্যাকাউন্ট বাতিল হয়ে গেছে।
সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাব রক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়। এর আগে পঞ্জিকা বর্ষ হিসেবে প্রতিবছর ডিসেম্বরে এই ফি জমা নেয়া হতো। তবে ২০১০ সালের জুন মাসে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময়ে বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এরপর বিএসইসির জারি করা ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। না হলে তা বাতিল করা হবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল।
কিছুদিন আগেও বিও এ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতা একেবারেই থমকে ছিল। ২০১০ সালের পর থেকে মূলত বিনিয়োগকারী এবং সাধারণ জনগণের পুঁজিবাজারের প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হয়। যার ফলে বাজার ছাড়াতে শুরু করেন বিনিয়োগকারীরা। অপরদিকে সাধারণ জনগণও পুঁজিবাজারমুখী হননি। যে কারণে একেবারে থমকে যায় বিও খোলা। কোন কোন হাউজে দিনে একটি বিও ওপেন হয়নি এমন নজিরও রয়েছে। এর পর ২০১২ সাল থেকে ধীরে ধীরে বিও বাড়তে থাকে। তবে বর্তমানে বাজার ভাল থাকায় আবারও নতুন এ্যাকাউন্ট খোলার পরিমাণ বাড়ছে।
এ প্রসঙ্গে মিডওয়ে সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন পুঁজিবাজার ভাল না হলে এখানে বিনিয়োগকারীরা আসবেন না। এটা খুবই স্বাভাবিক। এখন পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন এটা পুঁজিবাজারের ভাল লক্ষণ। আর এটা দেখে পুরাতন বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও পুঁজিবাজারে ফিরে আসছেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: