ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার কাছে আবারও হার কুমিল্লার

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২৭ নভেম্বর ২০১৬

ঢাকার কাছে আবারও হার কুমিল্লার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) চতুর্থ আসর থেকে একরকম বিদায় ঘটে গেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। শনিবার ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে ৩২ রানের হারে সেই সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়ে গেল। কাগজে-কলমে এখনও আশা থাকলেও আরেকটি ম্যাচ হারলেতো নিশ্চিত বিদায়ই ঘটে যাবে। টুর্নামেন্টের প্রথম লেগে ঢাকার কাছে ৩৩ রানে হেরেছিল কুমিল্লা। এবার ফিরতি লেগে ১ রান কমে হার হয় কুমিল্লার। হারের গোলকধাঁধাতেই আটকে আছে কুমিল্লা। আর ঢাকা ‘হার-জিতে’র মধ্যে আছে। ভাল অবস্থানে আছে। টানা দুই ম্যাচ হারের পর আবার জয়ের মুখ দেখে ঢাকা। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েই বাজিমাত করে সাকিব আল হাসানের দল ঢাকা। ছয় ব্যাটসম্যান ব্যাট করতে নামেন। সবাই ভাল করেন। এরমধ্যে ব্যাট হাতে সাকিব সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বলতা ছড়ান। অপরাজিত ৪১ রান করেন। ঢাকা ৪ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৭০ রান করে। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৩৮ রানের বেশি করতে পারেনি কুমিল্লা। ডোয়াইন ব্রাভোর (৩/৩২) দুর্দান্ত বোলিংয়ে ঢাকার কাছে আবারও হারল মাশরাফি বিন মর্তুজার কুমিল্লা। ঢাকার ছুঁড়ে দেয়া বিশাল টার্গেট অতিক্রম করতে গিয়ে কুমিল্লাও ভালই এগিয়ে যেতে থাকে। তবে ২৪ রানেই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে হারায় কুমিল্লা। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে খালিদ লতিফ ও ইমরুল কায়েস মিলে বড় জুটি গড়ার সম্ভাবনাও জাগিয়ে তোলেন। কিন্তু ৩৩ রানের জুটি গড়ে ৫৭ রান হতেই ইমরুলও আউট হয়ে যান। কুমিল্লার ওপরের সারির ব্যাটসম্যানরা এবার কিছুই করে দেখাতে পারছেন না। আর তাই বারবার হার হচ্ছে। এবারও খুব আহামরি কিছু করতে পারেননি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ৯১ রানের মধ্যে ৪ উইকেটের পতনও ঘটে যায়। ৭২ রানের সময় কুমিল্লার হয়ে সর্বোচ্চ স্কোর ৩৮ করা লতিফ ও ৯১ রানের সময় লিটন কুমার দাস আউট হলেতো হারের সম্ভাবনাই জেগে যায়। ব্যাটসম্যানই যে নাই। শেহজাদকে নিয়ে ভরসা ছিল। কিন্তু তিনি একা আর কতদূর এগিয়ে যাবেন। শেষ পর্যন্ত ২২ রান করে দলের ১০৬ রানের সময় শেহজাদও আউট হয়ে যান। কুমিল্লার হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তখনও যে ২৭ বলে জিততে ৬৫ রানের দরকার থাকে। শেষ পর্যন্ত ১৩৪ রানের মধ্যে আরও ৩টি উইকেট হারায় কুমিল্লা। আর ৪ রানের বেশি যোগও করতে পারেনি। বড় ব্যবধানেই হারও হয়। কুমিল্লার ইনিংস শুরুর আগে ঢাকা দুর্দান্ত ব্যাটিং করে। শুরু থেকেই ঢাকার ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং মিলতে থাকে। মেহেদী মারুফ যথারীতি মারমুখী হয়ে খেলতে থাকেন। ৩৮ রানে গিয়ে মেহেদী আউট হন। তাতে ঢাকার কিছু আসে যায় না। কারণ ব্যাটসম্যানে ভরা দল। দ্বিতীয় উইকেটেই ওপেনার কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে মিলে ৪৫ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। শ্রীলঙ্কার দুই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান। দু’জনই আবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ঢাকাকে দু’জনই এগিয়ে নিয়ে যান। ১০ ওভারে ৭৫ রান করে ফেলে ঢাকা। তাতেই বোঝা যায়, বড় স্কোরই গড়তে যাচ্ছে দলটি। অবশেষে ৮৩ রানে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান সাঙ্গাকারা। সাজঘরে ফেরার আগেই ৩৩ রানেই ইনিংস খেলেন তিনি। সাঙ্গাকারা দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেন। জয়াবর্ধনে কী পিছিয়ে থাকবেন? তিনিও ৩১ রানের ইনিংস খেলে ৯৫ রানের সময় বোল্ড হয়ে গেলেন। দু’জনকেই বোল্ড করলেন আফগানিস্তান লেগ স্পিনার রশিদ খান। এরপর সাকিব ও মোসাদ্দেক মিলে চতুর্থ উইকেটে বড় জুটি গড়ার ইঙ্গিত দেন। গড়েনও। দু’জন মিলে ঢাকার হয়ে ম্যাচটিতে সর্বোচ্চ ৪৬ রানের জুটি গড়েন। ১৪১ রানে গিয়ে ২৫ রান করা মোসাদ্দেক আউট হয়ে যান। ঢাকার ৪ উইকেটের পতন ঘটে যায়। তবে যে রান এরমধ্যেই হয়ে যায়, তাতেই যেন ঢাকার জয়ের ভিত গড়া হয়ে যায়। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা যে এ পর্যন্ত এ আসরের সবচেয়ে বাজে দল। এরপর আর কোন উইকেটই তুলে নিতে পারেনি কুমিল্লা। সাকিব ও শ্রীলঙ্কান সেকুগে প্রসন্ন মিলে ২ ওভারে ২৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন। দল ১৭০ রানে পৌঁছে যায়। ২৬ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ৪১ রান করেন সাকিব। আর প্রসন্নর ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ১১ রান। এত বড় স্কোর গড়েই আসলে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে ঢাকা। শেষ পর্যন্ত জিতেও যায়। এই ম্যাচ হারে ৮ ম্যাচের মধ্যে ৭টিতেই হার হলো কুমিল্লার। আর জয় তুলে নিয়ে রংপুর রাইডার্সের সমান ১০ পয়েন্ট পেয়েও রানরেটে এগিয়ে থেকে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে যায় ঢাকা।
×