ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বর যুবলীগ নেতা

অপহৃত স্কুলছাত্রীর বিয়ে হলো মেয়রের বাড়িতে

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ২৭ নভেম্বর ২০১৬

অপহৃত স্কুলছাত্রীর বিয়ে হলো মেয়রের বাড়িতে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ অপ্রাপ্তবয়স্ক হলেও বাগমারায় পরিবারের লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে যুবলীগ নেতা। শুক্রবার রাতে তাহেরপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নুরপুর মহল্লা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া অপ্রাপ্ত বয়সের ওই স্কুলছাত্রীকে স্থানীয় মেয়র আবুল কালাম আজাদের বাসায় নিয়ে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওই ছাত্রীকে তুলে মেয়রের বাসায় যায় যুবলীগের নেতারা। কাজী প্রস্তুত রেখে পুলিশ যাওয়ার আগেই জোর করে বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হয়। অপহরণের শিকার স্কুলছাত্রী এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ও জামগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার বর্তমান বয়স ১৫ বছর বলে জানিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা। তবে তুলে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে পুলিশ পৌঁছার আগেই মেয়েটির পরিবারের সদস্যদের সম্মতিতেই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন বাগমারা থানার ওসি সেলিম হোসেন। ওসি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে নামে। এ সময় মেয়র আবুল কালাম আজাদ তাদের জানান, মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে রেখেছেন। মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়। তবে তার আগেই বিয়ে হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা বিয়ে মেনে নেয় এবং তারা কোন অভিযোগ করেনি। তাই মেয়রের উপস্থিতিতে মেয়েকে তার স্বামী সোহেল ও পরিবারের সদস্যদের হাতে দেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি। অপহরণের শিকার স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানায়, তাহেরপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্প্রতি ওই স্কুলছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। শুক্রবার বিকেলে বয়স হয়নি বলে তার পরিবারের সদস্যরা বিয়ে দেয়া হবে না বলে সোহেলকে জানিয়ে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সোহেল রানা ও তার রাজনৈতিক সহকর্মী ওই ওয়ার্ডের সাধারণ সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে ছয়টি মোটরসাইকেল তার বাড়িতে ১২ থেকে ১৫ যুবলীগের নেতাকর্মী গিয়ে চড়াও হয়। এ সময় তারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে পরিবারের সদস্যদের মারপিট এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায় মেয়রের বাড়িতে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরপরই তাদের বিয়ে দেয়া হয়। তার বাড়িতে কাজী আব্দুল মালেককে আগে থেকেই বসিয়ে রাখা হয়েছিল বল জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলছাত্রীর পরিবারের এক সদস্য জানান, এ ঘটনার পর তারা যেন থানায় যেতে না পারে সেজন্য বাড়ির চারপাশে যুবলীগের কর্মীরা পাহারা দেয়। তবে পুলিশ যাওয়ার পর লোক পাঠিয়ে তাদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় মেয়রের বাড়িতে। তার আগে পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করলে পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। ফলে বাধ্য হয়ে তারা পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করতে রাজি হয়নি।
×