ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরার স্কুলে এখনও পানি ॥ ক্লাস বাড়িতে

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ২৭ নভেম্বর ২০১৬

সাতক্ষীরার স্কুলে এখনও পানি ॥ ক্লাস বাড়িতে

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ দীর্ঘ চার মাস ধরে পানিতে ডুবে আছে স্কুল। নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় জমে থাকা পানিতে জন্মেছে কচুরিপানা। ফুটেছে ফুল। স্কুল ভবনে যাওয়ার পথ নেই। বিকল্পভাবে বাড়ির উঠানে ক্লাস চললেও সেখানেও শিক্ষার্থীদের আসতে হয় কাদাপানি মাড়িয়ে। এ শিক্ষা চিত্র জেলার তালা উপজেলার গোনালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। কপোতাক্ষ পাড়ের গঙ্গারামপুর, গোনালী, হরিচন্দ্রকাটি, কানাইদিয়া, খরাইল এলাকার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে আছে। এ জলাবদ্ধ অবস্থা তালা উপজেলার অনেক স্কুলের। জলাবদ্ধতার শিকার কপোতাক্ষ পাড়ের হাজার হাজার মানুষের বসতভিটায় পানি থাকার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনও বিপর্যস্ত। শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি নিষ্কাশন চলছে অনেক স্কুলের ভবন ও মাঠ থেকে। গঙ্গারামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষের মধ্যে পানি, তাই পার্শ্ববর্তী একটি ধানের চাতালে চলছে পাঠদান। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা প্রতিভা রানী ঘোষ জানান, স্কুল মাঠে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে ৯৫ জন ছাত্রছাত্রীর বিপরীতে তিনজন শিক্ষিকা রয়েছেন, তবে বছরের পর বছর জলাবদ্ধ থাকায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। ১৪৮নং গোনালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পানিবন্দী হয়ে আছে। পাঁচজন শিক্ষক বিদ্যালয়ের ১১৮ শিক্ষার্থী নিয়ে পার্শ্ববর্তী রজব আলী গাজীর বাড়ির উঠানে ক্লাস চালাচ্ছেন। প্রতি বছরের পাঁচ থেকে ছয় মাস এ অবস্থায় চলে শিক্ষা কার্যক্রম। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা লতিফা খানম জানান, সুপেয় পানিসহ স্যানিটেশন সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। পানিবন্দী তালা টেকনিক্যাল কলেজের ক্লাস চলছে সদরের একটি ভাড়া ভবনে। হরিচন্দ্রকাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস চলছে পানির মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ একটি ভবনে। খরাইলসহ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এখনও পানি। স্কুলে যাতায়াতের পথে হাঁটুকাদা। ভবানীপুর, কেসমত ঘোনা, মাঝিয়াড়া, খানপুর, কাজীডাঙ্গা, ইসলামকাটি এলাকার আরও কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখনও পানিবেষ্টিত। জলাবদ্ধতার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকায় শিক্ষা ব্যবস্থা। তালা উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছর কপোতাক্ষের উপচেপড়া পানিতে তালা উপজেলার ৫০ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৩টি কলেজ পানিবন্দী হওয়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তালা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, উপজেলার বেশকিছু প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দী থাকায় শিশুদের লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য অন্যত্র ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
×