ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

থাকবে কি জোট, বিহারে জল্পনা চরমে

প্রকাশিত: ২০:০৪, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

থাকবে কি জোট, বিহারে জল্পনা চরমে

অনলাইন ডেস্ক ॥ বিহারে মহাজোটের অন্দরে মতবিরোধ ছিলই। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নীতীশ কুমার সমর্থন করায় বিহারে সরকারের ভবিষ্যত নিয়েই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এক বছরের মধ্যেই নানা বিষয়ে লালু প্রসাদের আরজেডি-র সঙ্গে বিরোধ হয়েছে নীতীশের। আবার বিধানসভা ভোটের সময়ে তীব্র সংঘাত হলেও পরে ধীরে ধীরে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাল হয়েছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর। নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি মোদীর পাশে দাঁড়িয়েছেন নীতীশ। অন্য দিকে সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধী রাজ্যের শাসক জোটের অন্য দুই শরিক আরজেডি ও কংগ্রেস। ফলে নীতীশের সঙ্গে বিজেপি-র ঘনিষ্ঠতা বাড়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল বিহারের রাজনীতিতে। তারই মধ্যে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটায় একটি হিন্দি সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর। ওই সংবাদপত্রের দাবি, ১ নভেম্বর দিল্লিতে এসে নীতীশ কুমার গুরুগ্রামের এক খামারবাড়িতে অমিত শাহের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন। এই সংবাদের অবশ্য তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেডিইউ মুখপাত্ররা। জেডিইউ নেতা পবন বর্মা বলেন, ‘‘আইনবিষয়ক বৈঠক করতে ওই দিন দিল্লি এসেছিলেন নীতীশ কুমার। সে দিন সন্ধ্যার বিমানে তিনি পটনা ফিরে যান।’’ জেডিইউ সূত্রের দাবি, বিহারে মদ বন্ধের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে বেশ কিছু মামলা হয়েছে। সেই বিষয়গুলি নিয়ে আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের সঙ্গে বৈঠক করেন নীতীশ কুমার। সঙ্গে রাজ্য সরকারের অফিসাররাও ছিলেন। আবার বিজেপি সূত্র বলছে, ওই দিন অমিত শাহ পঞ্জাবে ছিলেন। পঞ্জাব থেকে তিনি দিল্লি ফেরার আগেই পটনা উড়ে যান নীতীশ কুমার। কিন্তু তাতে জল্পনা থামেনি। বরং কংগ্রেস নেতা ও নীতীশ সরকারের মন্ত্রী অশোক চৌধুরি মহাজোট ভেঙে দেওয়ার ডাক দিয়ে পারদ আরও চড়িয়ে দেন। অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের খবর উড়িয়ে দিলেও নীতীশ নোট বদল সমর্থন করায় খুশি বিজেপি। ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি নেতারা জানাচ্ছেন, মোদীর সঙ্গে নীতীশের বোঝাপড়া করানোর জন্য সবচেয়ে বেশি সক্রিয় নীতীশের পুরনো বন্ধু তথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। গোটা বিষয়টি নিয়ে মহাজোট সরকারের দুই প্রধান কর্তা লালু প্রসাদ ও নীতীশ কুমার মুখ বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু আজও নোট বাতিল সমর্থন করেছেন নীতীশ। তাঁর মতে, দেশের মানুষ এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছেন। তাঁর মতে, মহাজোটের কোনও দলই নোট বাতিলের বিরোধিতা করেনি। কোনও কোনও দল বাতিলের প্রক্রিয়া ও কিছু পদ্ধতির বিরোধিতা করেছে। তাঁর কথায়, ‘‘মহাজোটের তিনটি দলের নীতি আলাদা হওয়াই স্বাভাবিক। তবে রাজ্য সরকারের যে কোনও সিদ্ধান্ত সহমতের ভিত্তিতেই নেব।’’ আবার লালু প্রসাদ আজ নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণের সুর আরও চড়িয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কোনও কাজই ঠিক মতো করতে পারেন না।’’ মোদীকে ১২টি প্রশ্নও করেছেন তিনি। অবস্থান বদলাননি কংগ্রেস নেতা অশোক চৌধুরিও। মহাজোট ভাঙার কথা বলার পাশাপাশি তাঁর দাবি, বিজেপি নেতারা নোট বাতিলের কথা আগে থেকেই জানতেন। এরই মধ্যে আগামী কাল থেকে শুরু হচ্ছে বিহার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন। রাজ্য সরকারের নীতি কী হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে শাসক জোটের মধ্যেই। অনেকের মতে, পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে তা বলা এখন খুবই কঠিন। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×