ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্রায়ান ফাং

ট্রাম্পের কারণে আইফোনের দাম বাড়তে পারে

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

ট্রাম্পের কারণে আইফোনের দাম বাড়তে পারে

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং তার অর্থনৈতিক নীতির কারণে এ্যাপলের পণ্যসামগ্রীর দাম বেশ বেড়ে যেতে পারে। ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ট্যাক্স বসানোর অঙ্গীকার করেছেন। সেটা ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। তিনি আরও বলেছেন যে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পকে দেশে ফিরিয়ে এনে তাতে তিনি নতুন প্রাণ সঞ্চার করবেন। এসব পদক্ষেপের পরিণতি এবং পণ্যের দামের ওপর এর কি প্রভাব পড়বে তা এখন দেখা যাক। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও সুপরিচিত কোম্পানি এ্যাপলের দৃষ্টান্ত দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। বিশ্বজুড়ে এ্যাপলের কার্যক্রম রয়েছে। এর বিভিন্ন ডিভাইসের প্রায় সবই যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৮টি দেশ থেকে নেয়া হয়, তবে বেশিরভাগই নেয়া হয় চীন থেকে। কারণ এ্যাপলের সরবরাহকারীদের প্রায় অর্ধেকই রয়েছে চীনে। আইফোন ও আইপ্যাড চীনে সংযোজন করা হয় এবং সেখান থেকে জাহাজযোগে বিশ্বের সর্বত্র দোকানগুলোতে পৌঁছে দেয়া হয়। এভাবে এ্যাপল বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন থেকে লাভবান হয়। সেই চেইনটি আবার লঘু বাণিজ্য প্রাচীরের ওপর নির্ভরশীল। এখন ট্রাম্প আমদানি পণ্যের ওপর চড়া শুল্ক বসালে এসব কোম্পানির পণ্যসামগ্রী যুক্তরাষ্ট্রের আনার খরচ বেশ বেড়ে যাবে। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করা হলে এখন পণ্যের দামও বেশি পড়বে। এ্যাপলের প্রিমিয়াম ডিভাইসগুলোর দাম আগে থেকেই একটু বেশি। এখন ট্রাম্পের পলিসির কারণে এসব পণ্যের দাম আরও বাড়লে কিছু কিছু ক্রেতা নতুন আইফোন কেনার আগে দুবার ভাববে। ধরা যাক ট্রাম্প ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসালেন চীন থেকে আমদানি করা প্রতিটি পণ্যের ওপর। তাহলে ওয়ালমার্টে যা কিছু এখন কেনা যাচ্ছে তার বেশিরভাগেরই দাম ৩৫ শতাংশ বাড়বে। সোজা কথায় ট্রাম্পের শুল্ক এ্যাপলকে সম্ভবত গভীর অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ফেলবে। একটা আইফোন ৭ বানাতে এ্যাপলের খরচ পড়ে ২২৫ ডলার। ৪৫ শতাংশ শুল্ক বসালে এর দাম আরও ১০০ ডলার বেড়ে যেতে পারে। ওদিকে ট্রাম্পের নীতির পাল্টা জবাবে চীনও যদি তার নিজস্ব বাণিজ্য প্রাচীর বসায় তাহলে এ্যাপলের ক্ষতি হতে পারে দ্বিগুণ। সম্প্রতি চীনের একটি রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্রে হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছে যে ট্রাম্প বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করলে চীনও পাল্টা আঘাত হানবে। তাতেও আইফোনের ওপর প্রভাব পড়বে। এসব কিছু এ্যাপলের জন্য অতি দুঃসংবাদ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এমনিতেই বিশ্বব্যাপী আইফোন বিক্রিতে মন্থরতা দেখা দিয়েছে। এই কারণে এ্যাপল তার পণ্যসমাগ্রীর দাম বাড়াতে বাড়তি চাপের মুখে পড়তে পারে। এ্যাপলের পণ্যের দাম আরও বেশি বাড়তে পারে যদি তার মেনুফ্যাকচারিং ইউনিট আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনতে হয়। গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প বিশেষভাবে এ্যাপলের উল্লেখ করে বলেছিলেন যে আমরা অন্যান্য দেশের পরিবর্তে আবার এ দেশেই এ্যাপলকে দিয়ে কম্পিউটার ও অন্যান্য জিনিস তৈরি করানো শুরু করব। তবে ট্রাম্প এ্যাপলকে তার ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট স্বদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বাধ্য অথবা প্রলুব্ধ করতে কি ব্যবস্থা বা কৌশল অবলম্বন করেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। উল্লেখ করা যেতে পারে যে চীনে কারখানা করে এ্যাপলের দুদিক দিয়ে লাভ না সুবিধা হয়েছে। প্রথমত একটি নির্দিষ্ট পণ্যের বিভিন্ন অংশ উৎপাদনকারী ইউনিটগুলো একই জায়গায় গুচ্ছবদ্ধ অবস্থায় থাকে। এতে শ্রম ও অর্থ দুদিক দিয়ে প্রচুর সাশ্রয় হয়। দ্বিতীয়ত চীনে দক্ষ শ্রমশক্তি প্রচুর এবং শ্রমের দামও অপেক্ষাকৃত সস্তা। ফলে পণ্যটির উৎপাদন খরচ অনেক কম পড়ে। লাভও হয় বেশি। অনুবাদ ॥ এনামুল হক সূত্র ॥ ওয়াশিংটন পোস্ট
×