ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাই শহরের থানা সড়কের কাহিনী

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

চাঁপাই শহরের থানা সড়কের কাহিনী

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ সড়কের উপর পেঁয়াজের বাজার। পুরান বাজারের থানা রোডের ব্যস্ততম প্রধান সড়কের ওপর সকালের দিকে এই বাজার বসে। দুই ধারের পুরো রাস্তাজুড়ে শতাধিক পাইকারি পেঁয়াজের বাজার বসার কারণে সাধারণ মানুষসহ প্রশাসনিক কর্মকা-েও স্থবিরতা নেমে আসে। ইচ্ছে করলেই এই পথ পাড়ি দেয়া সহজ বিষয় থাকে না সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। সকাল সকাল এই বাজার বসানোর সঙ্গে জড়িত তোহাবাজার যারা ডাক করে তারাই অর্থাৎ ইজারাদাররা এই বাজার বসানোর বিষয়ে অধিক উদ্যোগী। কারণ তারা তোলা পেয়ে থাকে প্রতিটি পেঁয়াজের দোকান দারের কাছে। পৌরসভা তোহা বাজার নিলাম ডাক করে থাকে বছর ওয়ারী। কিন্তু নিলাম ডাককারী ইজারাদাররা তাদের সীমানা ছাড়িয়ে প্রধান রাস্তার দখল নিয়ে পেঁয়াজের বাজার বসিয়ে থাকে। ফলে মানুষ চলাফেরা দূরে থাক কোন ধরনের যানবাহান চলতে পারে না। এই রাস্তার ধারে সরকারী হাসপাতাল, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, একাধিক বেসরকারী ক্লিনিকসহ সদর থানা ভবনের অবস্থান। তাই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসা রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স ইচ্ছে করলেই দ্রুত কোয়ার্টার কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে দীর্ঘ সময় নিয়ে থাকে। এই পথেয় বিভাগীয় শহর রাজশাহী যাওয়া যায়। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল গাড়ি থানা থেকে বেরিয়ে পেঁয়াজ বাজারের কারণে আটকে যায়। বহু চেষ্টার পর এই রাস্তা টুকু পেরিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছতে না পারায় অপরাধীরা পালিয়ে যায়। একই সমস্যার মধ্যে পড়ে দায়িত্ব পালন শেষে থানায় ফেরার পথে। এখান থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাছে হওয়ার কারণে সহজে কম দামে পাওয়া পেঁয়াজ নিয়ে পাইকারীদের বিক্রি করতেই এই পেঁয়াজ বাজারের সৃষ্টি। পেঁয়াজ বাজার শেষ হওয়া মাত্র মোড় ঘুরেই একই অবস্থার সৃষ্টি বা নানান ধরনে শাকসবজি বিক্রেতাদের রাস্তা ঘিরে বাজার বসানোর কারণে। এদের সংখ্যাও শতাধিক পেরিয়ে যাবে। এসব পাইকারী পণ্য কিনতে জেলার সহস্রাধিক ছোট ছোট প্রান্তিক ব্যবসায়ী ও ফেরিওয়ালারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে এই বাজারে। ফলে লোকে লোকারান্য হয়ে পড়ে। পা ফেলার জায়গা থাকে না। শহরের এই প্রধান সড়কে এ ধরনের পাইকারী বাজার বসার কারণে সপ্তাহের ছয়দিন এই সড়কে কোন ধরনের যানবাহন চলতে পারে না। পৌর কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানে প্রধান রাস্তা ছেড়ে বিকল্প স্থানে বাজার দুটি বসাতে পারলে সমস্যার নিরসন হতে পারত। তাতে জনসাধারণের ভোগান্তি কমত। যানবাহন নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারত। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের এসব বিষয়ে কোন ধরনের উদ্যোগ নেই। যার কারণে তিনটি সংস্থাসহ জনসাধারণ বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে থাকে সব থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোন যানবাহন বা রোগী বহনকারী হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে পারে না। এই কারণে বহু রোগীর পথেয় মৃত্যু হয়। এমনকি হাসপাতাল রোডের কোনবাড়ীঘর বা স্থাপনায় আগুন ধরলে ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি পৌঁছতে পারে না। ফলে সব কিছু ভস্মীভূত হয়।
×