ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের বাধা আজ সিঙ্গাপুর

প্রকাশিত: ০৬:২১, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশের বাধা আজ সিঙ্গাপুর

রুমেল খান ॥ অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্য বাকি আছে আর মাত্র দুটি ধাপ। সেই দুটি ধাপের একটিতে আজ পা রাখার পালা। প্রতিপক্ষকে পরাভূত করতে পারলে অতিক্রম করা যাবে সেই ধাপটি। নয়তো ঘটবে ধাপ পতন। ‘এএইচএফ কাপ হকির শেষ চারে (প্রাক-স্থান নির্ধারণী পর্ব) শনিবার সিঙ্গাপুরের মুখোমুুখি হবে বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল। বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় হংকংয়ের কিংস পার্ক হকি স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি। তিন ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। প্রাক-স্থান নির্ধারণী পর্বে গ্রুপ ‘এ’র চ্যাম্পিয়ন খেলবে গ্রুপ ‘বি’র রানার্সআপের সঙ্গে। আর গ্রুপ ‘বি’র চ্যাম্পিয়ন খেলবে গ্রুপ ‘এ’র রানার্সআপের সঙ্গে। সে অনুযায়ী শেষ চারে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর। অপর ম্যাচে খেলবে গ্রুপ ‘এ’র রানার্সআপ হংকং বনাম গ্রুপ ‘বি’র চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। প্রাক-স্থান নির্ধারণী এই দুটি ম্যাচের বিজয়ী দু’দল শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলবে রবিবার। নিজেদের গ্রুপ ম্যাচে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল। গ্রুপপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক হংকংকে ৪-২ গোলে হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে চাইনিজ তাইপেকেও হারায় একই ব্যবধানে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ম্যাকাওকে ১৩-০ গোলে শোচনীয়ভাবে হারিয়ে অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় লাল-সবুজরা। এ পর্যন্ত গ্রুপের তিন খেলায় বাংলাদেশ মোট গোল করেছে ২১টি, হজম করেছে ৪টি। সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন আশরাফুল ইসলাম ৬টি। পক্ষান্তরে সিঙ্গাপুর নিজেদের প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করে। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করে কিছুটা হোঁচট খায়। তৃতীয় ও শেষ গ্রুপ ম্যাচে উজবেকিস্তানকে অতিকষ্টে ৩-২ গোলে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হতে সক্ষম হয় তারা। এ পর্যন্ত তিন খেলায় তারা গোল করেছে ৮টি। হজম করেছে ৬টি। হকি বিশেষজ্ঞদের মতে, আজকের খেলায় শক্তির বিচারে বাংলাদেশই এগিয়ে থাকবে। এই ম্যাচে তারাই ফেভারিট। পরিসংখ্যানও সেই কথাই বলে। সেই ১৯৯৮ সাল থেকে অদ্যাবধি এশিয়ান গেমসের মূলপর্ব ও বাছাইপর্ব, এশিয়া কাপ, এএইচএফ কাপ এবং বিশ্ব হকি লীগের রাউন্ড-১ এবং রাউন্ড-২ ... সবমিলিয়ে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের মোকাবেলা করেছে মোট ১০ বার। এতে বাংলাদেশ জিতেছে ৭ ম্যাচে, সিঙ্গাপুর জিতেছে ১ ম্যাচ। বাকি ২ ম্যাচ ড্র হয়। বাংলাদেশ গোল করেছে ২০টি, সিঙ্গাপুরের গোল ৮টি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় ৪-২ গোলে, এই আসরেই (২০১২ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত, সে আসরে চ্যাম্পিয়নও হয় বাংলাদেশ)। ওই ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন মামুনুর রহমান চয়ন। ১টি করে গোল করেছিলেন রাসেল মাহমুদ জিমি এবং শুভ। এবারের আসরের নিজেদের শেষ গ্রুপ ম্যাচে দুর্বল ম্যাকাওয়ের বিরুদ্ধে খেলানো হয়নি জিমি, চয়ন, অসীম এবং রানাকে। মূলত তরুণদের সুযোগ করে দেয়া এবং সিনিয়রদের বিশ্রাম দেয়াই ছিল এর উদ্দেশ্য। আজকের ম্যাচ নিয়ে অধিনায়ক জিমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনকণ্ঠকে জানান, ‘সিঙ্গাপুর অবশ্যই ভাল দল। ওদের পরিকল্পনাও ভাল। তবে ওদের পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করতে আমরাও নতুন পরিকল্পনা করেছি। যদি আমাদের পরিকল্পনা কাজ করে এবং আমরা ঠিকমতো খেলতে পারি তাহলে ইনশাল্লাহ্ আমরাই জিতব। সে অনুযায়ীই আমরা অনুশীলন করেছি।’ দলের পেনাল্টি কর্নার (পিসি) বিশেষজ্ঞ মামুনুর রহমান চয়নও একইভাবে জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা জেতার জন্য তৈরি। দলের সবাই সুস্থ ও ফিট আছে। প্রতিপক্ষ কে, তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। আমাদের ভাবনা কেবল নিজেদের নিয়েই।’ এশিয়া কাপ হকির মূলপর্বের টিকেট পাওয়ার লক্ষ্যেই এ টুর্নামেন্ট খেলতে গেছে বাংলাদেশ। সেরা হতে পারলে এশিয়ান হকির শ্রেষ্ঠত্বের আসরে খেলতে পারবেন জিমিরা। বাছাইপর্বের এ আসরে বাংলাদেশের রেকর্ড বেশ ভাল। ২০০৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সবশেষ ২০১২ সালেও শিরোপার স্বাদ পায় তারা। এখন দেখার বিষয়, আজকের ম্যাচে সিঙ্গাপুরকে হারের স্বাদ উপহার দিতে পারেন কি না জিমিরা।
×