ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আফ্রিদিহীন রংপুরকে হারাল রাজশাহী

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

আফ্রিদিহীন রংপুরকে হারাল রাজশাহী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শহীদ আফ্রিদি শুক্রবার রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলতে পারেননি। নিজের নামে পাকিস্তানে একটি স্টেডিয়াম হওয়ায় সেটি উদ্বোধন করতে নিজ দেশে ছুটে যান। আফ্রিদিকে ছাড়া রংপুর রাইডার্সও হেরে যায়। রাজশাহী কিংসের কাছে ১২ রানে হারে। প্রয়োজনের মুহূর্তে ড্যারেন সামির (৪৪*) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১৬২ রান করে রংপুরকে ১৫০ রানের বেশি করতে দেয়নি রাজশাহী। আফ্রিদি শুক্রবারের ম্যাচ না খেললেও রবিবার চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে ম্যাচটি ঠিকই খেলবেন। এজন্য শুক্রবারই বাংলাদেশে এসে পড়েছেন। রাজশাহীর টার্গেট অতিক্রম করতে গিয়ে রংপুরের প্রথম উইকেটটি দ্রুতই পড়ে। হার্ডহিটার ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ২৮ রানের সময় আউট হয়ে যান। ৪৭ রানের সময় ১৫ রানে থাকা নাসির জামশেদও আউট হতে পারতেন। কিন্তু মিডউইকেটে স্যামি ক্যাচটি ধরতে পারেননি। বল তালুবন্দী করেন ঠিক। কিন্তু তা মাটির স্পর্শ লাগে। ৬৮ রানে গিয়ে সেই জামশেদ (২৭) রান আউট হয়ে যান। তবে সাজঘরে ফেরার আগে মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে ৪০ রানের জুটি গড়ে যান। যা দলকে অনেকটা পথ এগিয়ে নিয়ে যায়। মিঠুন দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকেন। সৌম্য তাকে ভাল সঙ্গও দিতে থাকেন। স্ট্রাইকের সুযোগ পেলেই ১ রান নিয়ে মিঠুনকে ব্যাট করার সুযোগ দেন। তাতে করে দল ৯৪ রানেও পৌঁছে যায়। এমন সময় বোল্ড হয়ে যান সৌম্য। রংপুরও বিপাকে পড়ে যায়। ১৫ ওভারে গিয়ে রংপুর যখন ১০০ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করে, তখন ৩০ বলে জিততে ৬৩ রান লাগে। পারবে রংপুর? এমন প্রশ্নই তখন সবার মুখে মুখে থাকে। আর ১৯ রান যোগ হতেই আরও ২ উইকেটের পতন ঘটে। রংপুরের হারের সম্ভাবনাও যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। ফরহাদ রেজার করা ১৮তম ওভারে গিয়ে অবশ্য মিঠুন ও সাত ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাট করার সুযোগ পাওয়া নাঈম ইসলাম অবশ্য ঝড়ো ব্যাটিং করেন। নাঈম ব্যাট হাতে নেমেই ছক্কা হাঁকান। মিঠুনও ছক্কা হাঁকিয়ে অর্ধশতক করেন। এ ওভারে ১৬ রান আসে। তাতে করে ১২ বলে জিততে ২৮ রান লাগে। পাকিস্তান পেসার সামি ১৯তম ওভারে বল হাতে নিয়ে ৬ বলে ৩ রান দিয়েই রংপুরের হার যেন নিশ্চিত করে দেন। ৬ বলে ২৫ রান লাগে জিততে। বোলিং করেন ফরহাদ। ১২ রানের বেশি দেননি। আর তাতে করে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৫০ রানের বেশি করতে পারেনি রংপুর। ১২ রানে হারে। তবে মিঠুন দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। একাই লড়াই করে যান। ৩৬ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন। আর নাঈম অপরাজিত ১৪ রান করেন। রংপুরের ইনিংস শুরুর আগে টস হেরে রাজশাহী ব্যাটিং করেন। শুরুতেই মুমিনুল হককে হারায় রাজশাহী। এরপর দ্বিতীয় উইকেটেই ঘুরে দাঁড়ায়। জুনায়েদ সিদ্দিকী ও সাব্বির রহমান রুম্মন মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। বড় জুটি গড়ার ইঙ্গিত দেন। বড় জুটিও গড়েন। কিন্তু ৪৭ রানের চেয়ে বড় জুটি আর গড়া যায়নি। ৫১ রানে গিয়ে বিপিএলের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান সংগ্রাহক সাব্বির (৩১) আউট হয়ে যান। এরপর যেন ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে রাজশাহীর ব্যাটিং লাইনআপ। ৯২ রানেই ৫ উইকেটের পতন ঘটে যায়। মেহেদী হাসান মিরাজকে এদিন ওপরের দিকেই ব্যাটিং করতে পাঠান হয়। কিন্তু ৭৫ রানে জুনায়েদ (২৩) ও ৭৯ রানে সামিত প্যাটেল আউট হওয়ার পর মাত্র ৬ রান করে ৯২ রানে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। মনে করা হচ্ছিল, আবারও বিপাকে পড়ে যাবে রাজশাহী। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটেই সব পাল্টে গেল। উমর আকমল ও ড্যারেন সামি মিলেই সব পাল্টে দিলেন। দু’জন মিলে ৭০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিও গড়লেন। তাতে করে দলও ৫ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৬২ রানের বড় স্কোরই গড়ল। জয়ের ভিতই গড়ে ফেলল। ১৪ ওভারের এক বল বাকি থাকতে ৯২ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল রাজশাহী। সেখান থেকে ৩৭ বলে উমর ও স্যামি মিলে ৭০ রান যোগ করে ফেলেন। ৩২ বলে অর্ধশতক জুটি গড়ে ফেলেন। দু’জনই ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করতে থাকেন। উমর শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ৩৩ রান করেন। তবে স্যামি পরে ব্যাট করতে নেমেও ১৮ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৪৪ রান করেন স্যামি। তার এ দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলও জয় পায়। ম্যাচটিতে খেলতে নামার আগে দুই দলই ৬টি করে ম্যাচ খেলেছিল। ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে রংপুর পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেই ছিল। রাজশাহী ছিল পয়েন্ট তালিকার ষষ্ঠ স্থানে। ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট পেয়েছিল। রংপুর ১০ পয়েন্টেই থাকল। তবে জয় পেয়ে ২ পয়েন্ট আরও যোগ হওয়ায় রাজশাহী একটু এগিয়ে গেল। স্কোর ॥ রংপুর রাইডার্স-রাজশাহী কিংস ম্যাচ টস ॥ রংপুর (ফিল্ডিং)। রাজশাহী ইনিংস ১৬২/৫; ২০ ওভার (মুমিনুল ৪, জুনায়েদ ২৩, সাব্বির ৩১, প্যাটেল ১৭, উমর ৩৩*, মিরাজ ৬, সামি ৪৪*; ডওসন ২/১৫)। রংপুর ইনিংস ১৫০/৫; ২০ ওভার (শাহজাদ ১৮, জামশেদ ২৭, মিঠুন ৬৪*, সৌম্য ৮, আনোয়ার ৫, ডওসন ১০, নাঈম ১৪*; অপু ২/১৯)। ফল ॥ রাজশাহী কিংস ১২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ড্যারেন সামি (রাজশাহী কিংস)।
×