ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত শিশু মেহেদী বাঁচতে চায়

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত শিশু মেহেদী  বাঁচতে চায়

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত রানীনগর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের শিশু মেহেদী হাসান বাঁচতে চায়। সুস্থ হয়ে আর দশটা শিশুর মতো লেখাপড়ার জন্য স্কুলে যেতে চায়। কিন্তু অজ্ঞাত জটিল ব্যাধি তাকে কতদিন বাঁচতে দেবে, সে ভাবনায় তার বাবা-মা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। জন্মের পর থেকে অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পারে না হাঁটতে, পারে না খেলাধুলা করতে। নিজের হাতে খেতেও পারে না সে। জন্মের পর থেকে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে খুবই কষ্ট ভোগ করছে শিশুটি। এ রোগটি তার জীবনকে কুরে কুরে খাচ্ছে। সেই সঙ্গে জীবনটাও বিষিয়ে উঠেছে। জানা গেছে, দীর্ঘ ৯ বছরেও কোন চিকিৎসক মেহেদী হাসান কি রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারেনি। শিশু মেহেদীর বাবা দরিদ্র ভ্যানচালক আবুল কালাম আজাদ ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। তাদের ছোট ছেলে মেহেদীকে কত দিন বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন তারা এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। মেহেদীর পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও কোন ভাতা ও আর্থিক সহযোগিতা মেলেনি। তবে মিলেছে শুধুমাত্র তাদের আশ্বাস। মেহেদী হাসান ২০০৭ সালের ২৮ মে রানীনগর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের আবুল কালামের ঘরে জন্ম নেয়। জন্মের পর থেকেই মেহেদীর শরীর ধবধবে সাদা। তখন চিকিৎসকের কাছে গেলে ‘রক্ত শূন্যতা’ বলে জানায়। জন্মের ১২ থেকে ১৫ দিন পর থেকেই মেহেদীর শরীরে হাত-পায়ে ফাটা ও চর্চারা দেখা দেয়। কয়েক দিন পর মেহেদীর অস্থিরতা বাড়তে থাকে। এরপর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফেটে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শুরু হয় প্রচ- কান্নাকাটি। বাবা-মা চিকিৎসক ও কবিরাজের কাছে গেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ তার রোগ নির্ণয় করতে পারেনি। মা জাহানারা বেগম বলেন, দিন দিন মেহেদী বড় হতে থাকে। সঙ্গে বাড়তে থাকে তার শরীর ফেটে যাওয়া। সাধ্যের মধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ছেলের চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু রোগটি অজানাই থেকে যায়। একা খেতে পারে না। কিছু ধরতেও পারে না। তার সেবা যতœ নিজেকে করতে হয়। তবে শীতের সময় বেশি সমস্যা হয়। গায়ে জামা কাপড় পরে থাকলে খুবই অসুবিধা হয়। শরীরের বিভিন্ন অংশ ফেটে রক্ত বের হয়। এতে জামা-কাপড়গুলো শরীরে লেগে যায়। এতে ব্যাপক কষ্ট হয়। অন্যদিকে শরীর থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বের হয়। তবে গরমে একটু ভাল থাকে।
×