ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভর্তি পরীক্ষা না দিয়েও মেধা তালিকায়

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৫ নভেম্বর ২০১৬

ভর্তি পরীক্ষা না দিয়েও মেধা তালিকায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভর্তি পরীক্ষা না দিয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়ে গেছেন এক ভাগ্যবান শিক্ষার্থী! বিষয়টিকে অসম্ভব ও ভয়াবহ কেলেঙ্কারি বলে মনে হলেও সেই কেলেঙ্কারিরই জন্ম দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউট বা আইইআর। এদিকে এ ঘটনার রহস্য উন্মোচনের জন্য ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঘটনাকে বড় অনিয়ম অভিহিত করে তদন্ত মাধ্যমে এর রহস্য উদ্ঘাটনসহ দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটা সুখবর যে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন বলে ফল প্রকাশ হয়েছে তার পক্ষ থেকেই অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে। শিক্ষার্থী সৎ বলেই বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে অবশ্যই এর রহস্য বের করা হবে। কারণ এত বড় ঘটনা তো হতে পারে না। জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীন এমএড (ইভিনিং) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত শুক্রবার। এখানে ভর্তির জন্য অন্যদের মতো আবেদন করেছিলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষক পল্লবী বাড়ৈ। যার রোল নম্বর ২৫৫৩। তবে আবেদন করলেও অসুস্থতার কারণে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের এ সদস্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। অথচ মঙ্গলবার ফল প্রকাশ করার পর দেখা গেল মেধা তালিকায় পল্লবী বাড়ৈর নাম। আইইআর এর নোটিস বোর্ডে ফল টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে পল্লবী বাড়ৈর মেরিট স্কোর ৭৬ এবং মেরিট পজিশন ৪১। বিষয়টি প্রথম নজরে এসেছে পরীক্ষায় অংশ নেয়া এ প্রার্থীর কয়েক পরিচিত ব্যক্তির। তারাই তাকে ফোন করে জানান যে, মেধা তালিকায় নাম উঠে এসেছে। পল্লবী বাড়ৈ বলেছেন, আমি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। তবে ফল প্রকাশের পর আমার পরিচিত কয়েকজন আমাকে জানায় যে তোমার নাম মনোনীত হয়েছে। আমার বিশ্বাস না হলেও কে বা কারা জালিয়াতি করেছে বলে চিন্তাও লাগছিল। আমি দ্রুত বিষয়টি আমার পরিবারের অন্য সদস্যদের জানাই। এরপর আমার দাদা বুধবার রাতে টেলিফোনে ও বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে গিয়ে উপাচার্য স্যারের নজরে আনেন। পল্লবী বাড়ৈ বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছি। আমি চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যেন দুর্নাম না হয়। এটা কোন ভুলও হতে পারে। আবার কেউ কোন জালিয়াতিরও আশ্রয় নিতে পারে। তাই দেখা দরকার আসলে কি ঘটেছে। এদিকে ওইদিন একই কক্ষে পরীক্ষায় অংশ নেয়া কয়েকজন জানিয়েছেন, পল্লবী বাড়ৈ অনুপস্থিত থাকলেও তার আসনে বসে একজন পরীক্ষা দিয়েছেন। ওই আসনে তৃতীয় কেউ পরীক্ষা দিচ্ছে বলে কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকদের নজরেও আনেন কোন কোন প্রার্থী। কিন্তু দায়িত্বরত শিক্ষক তখন অভিযোগ রহস্যজনক কারণে আমলে নেননি। বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটিতে কথা বলতে গেলে শিক্ষার্থীরা অনেকেই এর পেছনে জালিয়াতিচক্র সক্রিয় আছে বলে অভিযোগ এনেছেন। তারাই অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর স্থলে তৃতীয় কাউকে পরীক্ষা নিয়ে মনোনীত করছেন অনিয়মের মাধ্যমে। উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, প্রাথমিকভাবে আমি জানতে পেরেছি এখানে লেখার ভুল হয়েছে। আমি কথা বলেছি। তারা বলছে রোল নম্বর লেখা ভুল হয়েছে। তাহলে ওইদিন একই আসনে তৃতীয় ব্যক্তির পরীক্ষা ও রোল নম্বর ছাড়া নামও মিলে যাওয়ার রহস্য থেকেই যায়। উপাচার্য বলেন, হ্যাঁ বিষয়গুলো অবশ্যই ভাল করে খতিয়ে দেখতে হবে। এটা কিভাবে হলো। ইউজিসিতে ‘বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল লেকচার’ প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত ॥ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রথমবারের মতো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে প্রতিবছর ‘বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল লেকচার’ প্রবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে ইউজিসি’র ১৪৫তম পূর্ণ কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে অসম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে কমিশন এ উদ্যোগ গ্রহণ করে। সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মঞ্জুরি কমিশনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লা, প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রফেসর ড. মোঃ আখতার হোসেন, প্রফেসর ড. এম শাহ্ নওয়াজ আলি, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আলী আকবর।
×